
প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম! শায়েখের কাছে জানতে চাই মুসাফীর ব্যক্তি কসর না করে পরিপূর্ণ নামায আদায় করতে পারবে কিনা ?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
মুসাফির ব্যক্তি সফরে থাকা অবস্থায় চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামাযের কসর দুই রাকাত পড়া ওয়াজিব। কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কসর না করে চার রাকাত পড়লে গোনাহের সাথে ফরয আদায় হয়ে যাবে। তবে এই নামায আবার পড়া ওয়াজিব। অবশ্য কেউ যদি ভুলবশত কসর না করে চার রাকাত পড়ে ফেলে আর প্রথম বৈঠক করে এবং শেষ বৈঠকের পর সাহু সিজদা করে তাহলে নামায হয়ে যাবে। এই ক্ষেত্রে তার প্রথম দুই রাকাত ফরয আর শেষের দুই রাকার নফল হিসেবে আদায় হয়ে যাবে। আর যদি সাহু সিজদা করা না হয় তাহলে পূর্ণ চার রাকাত নফল হয়ে যাবে। অতঃপর তাকে পুনরায় দুই রাকাত ফরয নামায পড়তে হবে। কিন্তু মুক্তাদী হলে এবং তিন রাকাত বা দুই রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামায হলে কোনো কসর করতে হবে না।
وَاِذَا ضَرَبۡتُمۡ فِی الۡاَرۡضِ فَلَیۡسَ عَلَیۡکُمۡ جُنَاحٌ اَنۡ تَقۡصُرُوۡا مِنَ الصَّلٰوۃِ ٭ۖ اِنۡ خِفۡتُمۡ اَنۡ یَّفۡتِنَکُمُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ؕ اِنَّ الۡکٰفِرِیۡنَ کَانُوۡا لَکُمۡ عَدُوًّا مُّبِیۡنًا
১.অর্থ: তোমরা যখন দেশ-বিদেশে সফর করবে তখন যদি তোমাদের আশংকা হয়, কাফেররা তোমাদের জন্যে ফিতনা সৃষ্টি করবে, তখন নামায কসর করলে তোমাদের কোন দোষ নেই। নিশ্চয়ই কাফেররা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। (সূরা নিসা: আয়াত নং ১০১)
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «الصَّلاَةُ أَوَّلُ مَا فُرِضَتْ رَكْعَتَيْنِ، فَأُقِرَّتْ صَلاَةُ السَّفَرِ، وَأُتِمَّتْ صَلاَةُ الحَضَرِ»
২.অর্থ: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রথম অবস্থায় নামায দুই রাকাত করে ফরয করা হয় তারপর সফরে নামায সে ভাবেই স্থায়ী থাকে এবং মুকীম অবস্থায় নামায পূর্ণ (চার রাকাত) করা হয়েছে। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১০৯০ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৬৮৫ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، قَالَ مَرِضْتُ مَرَضًا فَجَاءَ ابْنُ عُمَرَ يَعُودُنِي قَالَ وَسَأَلْتُهُ عَنِ السُّبْحَةِ، فِي السَّفَرِ فَقَالَ صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي السَّفَرِ فَمَا رَأَيْتُهُ يُسَبِّحُ وَلَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا لأَتْمَمْتُ وَقَدْ قَالَ اللَّهُ تَعَالَى ( لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ إِسْوَةٌ حَسَنَةٌ)
৩.অর্থ: হাফস ইবনে আসিম (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ি। ইবনে উমর (রা.) আমাকে দেখতে আসেন। তিনি বলেন, আমি তাঁর কাছে সফরে সুন্নত নামায পড়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, আমি তো রসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সঙ্গে সফরে ছিলাম, কিন্তু তাকে কখনো সুন্নত আদায় করতে দেখিনি। যদি আমি সুন্নত পড়তাম তাহলে আমি (ফরয) নামাযকেই পূর্ণভাবে আদায় করতাম। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ″নিশ্চয়ই রসূলুল্লাহ (ﷺ) এর মধ্যে রয়েছে তোম্যদের জন্য উত্তম আদর্শ। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৮৯ হাদীসের মান: সহীহ)
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَابْ
উত্তর লিখনে-আলী হাসান মোল্লা।
শিক্ষার্থীঃ মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply