প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম! মহিলা ইমাম বানিয়ে শুধু মহিলারা জামাতে নামায পড়তে পারবে কি?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
মহিলারা বাসা বাড়িতে বা অন্য কোথাও একত্রিত হয়ে কোন মহিলাকে ইমাম বানিয়ে নামাযের জামাত করা মাকরূহে তাহরীমী তথা নাজায়েয। তারপরও যদি মহিলারা জামাতে নামায পড়ে তাহলে নামায হয়ে যাবে। কিন্তু তারা সবাই গোনাহগার হবে। ইমাম সাহেবা সবার সামনে না দাঁড়িয়ে প্রথম কাতারের মাঝে দাঁড়াবে এবং আযান ইকামত দিবে না। তবে যদি জানাযা পড়ার কোন পুরুষ না থাকে। তাহলে মহিলাদের জন্য মাকরূহ বিহীন মহিলা ইমামের পিছনে জানাযা নামায পড়া জায়েয আছে।
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ صَلاَةُ الْمَرْأَةِ فِي بَيْتِهَا أَفْضَلُ مِنْ صَلاَتِهَا فِي حُجْرَتِهَا وَصَلاَتُهَا فِي مَخْدَعِهَا أَفْضَلُ مِنْ صَلاَتِهَا فِي بَيْتِهَا
১.অর্থ: আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত: নবী (সা.) বলেছেন, মহিলাদের জন্য বাড়ির উঠানে (একাকী) নামায আদায়ের চেয়ে তার ঘরে নামায আদায় করা উত্তম। আর মহিলাদের জন্য ঘরের অন্য কোন স্থানে নামায আদায়ের চেয়ে তার গোপন রুমে (একাকী) নামায আদায় করা অধিক উত্তম। (ইফা. সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৫৭০ মিশকাতুল মাসাবীহ হাদীস নং ১০৬৩ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ عَائِشَةَ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ : ” لَا خَيْرَ فِي جَمَاعَةِ النِّسَاءِ إِلَّا فِي مَسْجِدٍ، أَوْ فِي جَنَازَةِ قَتِيلٍ ”
২.অর্থ: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত: নবী (ﷺ) বলেছেন, মহিলাদের জামাতের মধ্যে কোন কল্যাণ নেই। তবে মসজিদে বা শহীদের জানাযার নামাযে হলে সে কথা ভিন্ন। (মুসনাদে আহমাদ হাদীস নং ২৫২১৩)
كَتَبْتُ إلَى نَافِعٍ أَسْأَلُهُ، أَتَؤُمّ الْمَرْأَةُ النِّسَاءَ؟ فَقَالَ : لاَ أَعْلَمُ الْمَرْأَةَ تَؤُمّ النِّسَاءَ
৩.অর্থ: ইবনে আউন (রহ.) বলেন আমি নাফে (রহ.) কে পত্রলিখে জিজ্ঞেস করলাম কোন মহিলা কি অন্য মহিলাদের ইমামতি করতে পারবে ? (উত্তরে) নাফে (রহ.) বললেন, আমার জানামতে কোন মহিলা অন্য মহিলাদের ইমামতি করতে পারবে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা: বর্ণনা নং ৪৯৯৫)
عَنْ أُمِّ وَرَقَةَ بِنْتِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ، بِهَذَا الْحَدِيثِ وَالأَوَّلُ أَتَمُّ قَالَ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَزُورُهَا فِي بَيْتِهَا وَجَعَلَ لَهَا مُؤَذِّنًا يُؤَذِّنُ لَهَا وَأَمَرَهَا أَنْ تَؤُمَّ أَهْلَ دَارِهَا . قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ فَأَنَا رَأَيْتُ مُؤَذِّنَهَا شَيْخًا كَبِيرًا
৪.অর্থ: উম্মে ওয়ারাকা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কখনও কখনও তাকে দেখার জন্য তার বাড়ীতে যেতেন। তিনি তার জন্য একজন মুয়াযযিনও নিযুক্ত করেন। সে তাঁর বাড়িতে আযান দিত এবং নবী (ﷺ) তাকে স্বগৃহে মহিলাদের নামাযে ইমামতি করার নির্দেশ দেন। বর্ণনাকারী আব্দুর রহমান বলেন, আমি তার নিযুক্ত বয়ঃবৃদ্ধ মুয়াযযিনকে দেখেছি। (ইফা. সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৫৯২ হাদীসের মান: হাসান)
ব্যাখ্যা: আসলে এ ঘটনাটি দলিলযোগ্য নয় কারণ এ ঘটনার পূনরাবৃত্তি বা ব্যাপকতা ইসলামের ইতিহাসে আর পাওয়া যায়নি। যদি জামাতের অনুমোদন ব্যাপক ভাবে থাকতো তাহলে রাসূল (সা.) এর জামানায় তার স্ত্রীগণ একত্রিত হয়ে জামাতে নামায আদায় করেতেন। অথচ এ মর্মে কোন হাদীস পাওয়া যায় না। ফলে মুসলিম উম্মাহ এ বিচ্ছিন্ন ঘটনাটি সুন্নাহ হিসেবে ধরে নেয়নি এবং তার উপর আমল করেনি।
মোদ্দাকথা মহিলাদের জন্য ঘরে একাকী নামায পড়াই অধিক উত্তম। তবে যদি কোথাও মহিলারা জামাতের সাথে মহিলা ইমামের পিছনে নামায পড়ে তাহলে মাকরূহে তাহরীমীর সাথে নামায হয়ে যাবে। উল্লেখ্য, মহিলাদের জন্য যেহেতু ইমামতির সুযোগ নেই। তাই হাফেযা মহিলারা কুরআন ইয়াদ রাখার জন্য নিয়মিত তিলাওয়াত করবে। অন্য হাফেযার সাথে দাওর করবে এবং তারাবীতে একাকী খতম করবে।
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- আব্দুল কুদ্দুস।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply