প্রশ্নঃ
আসলামু আলাইকুম ! মুফতী সাহেবের কাছে নামাযের ইমাম নির্বাচন করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাই ?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
জামাতে নামায আদায় করার সময় মুসল্লীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো, যোগ্য ও উপযুক্ত ব্যক্তিকে ইমাম নিযুক্ত করা। একাধিক যোগ্য লোক থাকলে সবচেয়ে বেশি যোগ্যতা সম্পন্ন লোককে ইমাম নিয়োগ করা কর্তব্য। ইমাম নিযুক্ত করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অগ্ৰগণ্য ঐ ব্যক্তি, যিনি কুরআন হাদীস সম্পর্কে অভিজ্ঞ অর্থাৎ নামাযের মাসআলা-মাসায়েল ভালো জানেন এবং সূরা- কিরাত শুদ্ধ করে পড়তে পারেন। উল্লেখিত গুণে সমান হলে, তারপর যে প্রথম হিজরত করেছে এবং বয়সে বড় সে ইমামতি করবে। কারো বাড়ি বা ইমামতির জায়গায় জামাত হলে ঐ বাড়িওয়ালা বা নির্ধারিত ইমামই অগ্ৰগণ্য। অবশ্য ঐ ব্যক্তি যদি একেবারে অযোগ্য হয় তাহলে অন্য যোগ্য ব্যক্তি অগ্ৰগণ্য হবে।
قَالَ سَمِعْتُ أَبَا مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيَّ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَؤُمُّ الْقَوْمَ أَقْرَؤُهُمْ لِكِتَابِ اللَّهِ فَإِنْ كَانُوا فِي الْقِرَاءَةِ سَوَاءً فَأَعْلَمُهُمْ بِالسُّنَّةِ فَإِنْ كَانُوا فِي السُّنَّةِ سَوَاءً فَأَقْدَمُهُمْ هِجْرَةً فَإِنْ كَانُوا فِي الْهِجْرَةِ سَوَاءً فَأَكْبَرُهُمْ سِنًّا وَلاَ يُؤَمُّ الرَّجُلُ فِي سُلْطَانِهِ وَلاَ يُجْلَسُ عَلَى تَكْرِمَتِهِ فِي بَيْتِهِ إِلاَّ بِإِذْنِهِ
১.অর্থ: আবু মাসউদ আনসারী (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কুরআন বেশি ভাল পড়তে জানে সে লোকদের ইমামতি করবে। যদি কুরআন পাঠে সবাই সমান হয়, তাহলে যে ব্যক্তি বেশি হাদীস (সুন্নাহ) জানে সে ইমামতি করবে। যদি হাদীসের বেলায়ও সবাই সমান হয়, তাহলে যে ব্যক্তি প্রথম হিজরত করেছে সে ইমামতি করবে। যদি এ ব্যাপারেও সবাই সমান হয়, তাহলে যে ব্যক্তি বয়সে বড় সে ইমামতি করবে। কোন ব্যক্তি যেন অপর ব্যক্তির ইমামতির স্থানে তার সম্মতি ছাড়া ইমামতি না করে এবং অনুমতি ছাড়া কারো ঘরে তার ব্যক্তিগত আসনে না বসে। (ইফা. সহীহ মুসলিম হাদীস নং ১৪০৬ সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ২৩৫ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا كَانُوا ثَلاَثَةً فَلْيَؤُمَّهُمْ أَحَدُهُمْ وَأَحَقُّهُمْ بِالإِمَامَةِ أَقْرَؤُهُمْ
২.অর্থ: আবু সাঈদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যদি তিনজন একত্রিত হয় তাহলে একজন তাদের ইমামতি করবে। আর ইমাম হওয়ার সবচাইতে যোগ্য তিনি, যিনি তাদের মধ্যে কুরআন পাঠে সর্বাপেক্ষা অভিজ্ঞ। (ইফা. সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৪০৩ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ مَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِذَا حَضَرَتِ الصَّلاَةُ فَأَذِّنَا وَأَقِيمَا، ثُمَّ لِيَؤُمَّكُمَا أَكْبَرُكُمَا ”
৩.অর্থ: মালেক ইবনে হুওয়াইরিস (রা.) থেকে বর্ণিত: নবী (ﷺ) বলেছেন, যখন নামাযের সময় হবে তখন তোমাদের দুইজনের একজন আযান এবং ইকামত দিবে। তারপর তোমাদের মধ্যে যে বয়সে অধিক বড় সে ইমামতি করবে। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ৬২৫ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ১৪১১ হাদীসের মান: সহীহ)
উল্লেখিত হাদীসগুলো থেকে প্রমাণিত হয় যে, উপস্থিত মুসল্লীদের মধ্যে যার তিলাওয়াত অধিক শুদ্ধ সেই সর্ব প্রথম ইমামতির হকদার। এক্ষেত্রে সবাই সমান হলে, যে ব্যক্তি মাসয়ালা মাসায়েল সম্পর্কে বেশি জ্ঞানী সে হবে ইমাম। এতেও যদি সবাই সমান হয় তাহলে যে আগে হিজরত করেছে সে। এ ক্ষেত্রেও যদি সবাই সমান হয় তাহলে যার বয়স বেশি সে ইমাম নিযুক্ত হবে।
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- আব্দুর রহমান।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply