ছোট বাচ্চাদের মসজিদে নিয়ে আসা যাবে কি ?

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম। মুফতী সাহেবের কাছে আমার প্রশ্ন হলো, ছোট বাচ্চাদের নামাযের অভ্যাস করার জন্য মসজিদে নিয়ে আসা যাবে কি ?

উত্তরঃ

وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ

ছোট বাচ্চাদের মসজিদে নিয়ে আসলে কেউ কেউ রাগারাগি করে অথচ এমনটি করা উচিত নয়। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই শিশুদের নামাযের
অভ্যাস করানোর জন্য মসজিদে নিয়ে আসা
একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এতে তারা ছোট থেকেই মসজিদে আসার ও নামাযের গুরুত্ব বুঝতে শেখে। আর শিশুকালে যে অভ্যাস হয়,পরে তা করা সহজ হয় নতুবা তা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু এমন শিশুকে মসজিদে আনবে না যে পাক-নাপাক, মসজিদের আদব, নামাযের গুরুত্ব ইত্যাদি বুঝে না। অথবা মসজিদে এসে চেঁচামেচি ও কান্নাকাটি করে কিংবা মসজিদে মলমূত্র ত্যাগ করে। যেহেতু এমন ছোট্ট শিশুদের কারণে মুসল্লীদের নামাযে বিঘ্ন ঘটে এবং নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। তাই ইসলামিক স্কলারদের মতে তাদের মসজিদে নিয়ে আসা অনুচিত।

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا قُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ وَاَہۡلِیۡکُمۡ نَارًا وَّقُوۡدُہَا النَّاسُ وَالۡحِجَارَۃُ

১.অর্থ: হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদেরকে আর তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করো যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর। (সূরা তাহরীম: আয়াত নং ৬)

وَ اۡمُرۡ اَهْلَکَ بِالصَّلٰوۃِ وَ اصۡطَبِرۡ عَلَیۡہَا ؕ

২.অর্থ: আর তোমার পবিরার-পরিজনকে নামাযের নির্দেশ দাও এবং নিজেও তার উপর অবিচল থাক। (সূরা ত্বহা: আয়াত নং ১৩২)

عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مُرُوا أَوْلاَدَكُمْ بِالصَّلاَةِ وَهُمْ أَبْنَاءُ سَبْعِ سِنِينَ وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا وَهُمْ أَبْنَاءُ عَشْرِ سِنِينَ وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ فِي الْمَضَاجِعِ ”

৩.অর্থ: আমর ইবনে শুয়াইব (রহ.) থেকে বর্ণিত: রসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের সন্তানদের বয়স সাত বছর হলে তাদেরকে নামাযের জন্য নির্দেশ দাও। যখন তাদের বয়স দশ বছর হয়ে যাবে তখন (নামায আদায় না করলে) এজন্য তাদেরকে মারবে এবং তাদের ঘুমের বিছানা আলাদা করে দিবে। (সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৪৯৫ সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ৪০৭ হাদীসের মান: হাসান)

حَدَّثَنَا أَبُو قَتَادَةَ، قَالَ خَرَجَ عَلَيْنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَأُمَامَةُ بِنْتُ أَبِي الْعَاصِ عَلَى عَاتِقِهِ، فَصَلَّى فَإِذَا رَكَعَ وَضَعَهَا، وَإِذَا رَفَعَ رَفَعَهَا

৪.অর্থ: আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, একবার নবী (সা.) আমাদের সামনে এলেন। তখন উমামা বিনতে আবুল আস তার কাঁধের উপর ছিলেন। এই অবস্থায় নবী (সা.) নামাযে দাঁড়ালেন। যখন তিনি রুকুতে যেতেন, তখন তাকে নামিয়ে রাখতেন, আবার যখন (সিজদা হতে) উঠে দাঁড়াতেন, তখন তাকেও উঠিয়ে নিতেন। (সহীহ বুখারী হাদীস নং ৫৯৯৬ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ১০৯৬ হাদীসের মান: সহীহ)

উপরের আলোচনা দ্বারা আমরা বুঝতে পারলাম যে, শিশুদেরকে নামাযী ও দ্বীনদার করতে হলে। শিশু বয়স থেকেই তাকে সঙ্গে নিয়ে মসজিদে যেতে হবে। যেহেতু আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ। ফলে তাকে নিয়েই একটি প্রজন্ম গড়ে উঠবে। দেশ ও জাতি তার হাত ধরেই পরিচালিত হবে। এজন্য শিশু সন্তানের বিশুদ্ধ চিন্তা-চেতনা বিকাশে ইসলাম অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করেছে। আমরা যখন এগুলো পালন করবো তখন তারা পাবে একটি সুন্দর ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ।

وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- নুর মোহাম্মদ।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।

Share This Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *