দুই কাতারের মাঝে খালি জায়গা থাকলে কি নামায হবে ?

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম! দুই কাতারের মাঝে আরেকটি কাতার করারমত খালি জায়গা থাকলে কি নামায হবে ?

উত্তরঃ

وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ

দুই কাতারের মাঝে এক কাতারের সমান জায়গা ফাঁকা রেখে দাঁড়ালে নামায মাকরূহ হবে। আর যদি এক কাতার থেকে অন্য কাতারের খালি থাকার দূরত্ব দুই কাতার পরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি হয়। তাহলে সেসব কাতারে ইক্তেদা করা সহীহ হবে না। এতে তাদের নামাযও হবে না। ইক্তেদা সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হলো,কাতার মিলিত হতে হবে। কাতারের মাঝে কোন রাস্তা, নদী, খাল অথবা খালি ময়দান থাকলে পিছনে কাতার বেঁধে নামায সহীহ হবে না। কিন্তু কাতারের মধ্যে দেয়াল বা বেড়া থাকলে নামাযের কোন ক্ষতি হবে না। কারণ এটা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” رُصُّوا صُفُوفَكُمْ وَقَارِبُوا بَيْنَهَا وَحَاذُوا بِالأَعْنَاقِ فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنِّي لأَرَى الشَّيْطَانَ يَدْخُلُ مِنْ خَلَلِ الصَّفِّ كَأَنَّهَا الْحَذَفُ ”

১.অর্থ: আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত: রসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা (নামাযের) কাতারসমূহে মিলে মিশে দাঁড়াবে। এক কাতারকে অপর কাতারের নিকট রাখবে এবং তোমরা একে অন্যের ঘাড় বরাবর করে দাঁড়াবে। ঐ সত্তার শপথ, যার হাতে আমার জীবন! আমি দেখতে পাচ্ছি, কাতারের খালি জায়গাতে শয়তান যেন একটি বকরীর বাচ্চার ন্যায় প্রবেশ করছে। (ইফা. সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৬৬৭ হাদীসের মান: সহীহ)

عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ لَهُ حَصِيرٌ يَبْسُطُهُ بِالنَّهَارِ، وَيَحْتَجِرُهُ بِاللَّيْلِ، فَثَابَ إِلَيْهِ نَاسٌ، فَصَلَّوْا وَرَاءَهُ

২.অর্থ: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত: নবী (সা.) এর একটি চাটাই ছিল। তিনি দিনের বেলায় তা বিছিয়ে রাখতেন এবং রাতের বেলায় তা দিয়ে কামরা বানিয়ে নিতেন। আর সাহাবীগণ তার পেছনে কাতার বন্দী হয়ে নামায আদায় করতেন। (সহীহ বুখারী হাদীস নং ৭৩০ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ১৭০০ হাদীসের মান: সহীহ)

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏مَنْ وَصَلَ صَفًّا وَصَلَهُ اللَّهُ وَمَنْ قَطَعَ صَفًّا قَطَعَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ ‏”‏.‏

৩.অর্থ: আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি (বিচ্ছিন্ন) কাতারকে যুক্ত করবে, আল্লাহ তা’আলা তাকে (তার রহমতের সঙ্গে) যুক্ত করবেন। আর যে ব্যক্তি কাতারকে বিচ্ছিন্ন করবে আল্লাহ তাকে (তার রহমত থেকে) বিচ্ছিন্ন করবেন। (সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ৮১৯ সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৬৬৬ হাদীসের মান: সহীহ)

উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা আমরা বুঝতে পারলাম। যদি দুই কাতারের মাঝখানে আরো এক কাতার পরিমাণ জায়গা ফাঁকা থাকে। তাহলে নামায হয়ে যাবে কিন্তু নামায মাকরূহ হবে। তবে যদি দুই কাতারের মাঝখানে এতো বেশি পরিমাণ জায়গা খালি থাকে যেখানে দুই কাতার হয়ে যায়। তাহলে খালি জায়গার পরে যারা নামায আদায় করবে তাদের নামায হবে না। তাদেরকে পুনরায় নামায আদায় করতে হবে। (আল-ফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহু: ২/১২৪৮-১২৪৯)

وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- আব্দুল কাইয়ুম।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।

Share This Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *