প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম! কোন কোন অবস্থায় তায়াম্মুম করা জায়েয ?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
ইসলামী শরীয়তে পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম হচ্ছে পানি। এ ছাড়াও দুনিয়াবি প্রায় সকল কাজেই পানির প্রয়োজন। পানি যেহেতু বেশি দরকার এ জন্য আল্লাহ পর্যাপ্ত পরিমাণে পানির ব্যবস্থা করে রেখেছেন।এরপরেও কোন কারণে পানি পাওয়া না গেলে পবিত্রতা অর্জনের বিকল্প ব্যবস্থা হলো তায়াম্মুম। সর্বক্ষেত্রে তায়াম্মুম করা জায়েয নয়, নিম্নে উল্লেখিত কারণেই শুধু তায়াম্মুম করা জায়েয।
১.এমন অসুস্থতা যে,পানি ব্যবহার করলে রোগ বেড়ে যাবে অথবা সুস্থ হতে বিলম্ব হবে। যেমন: সর্দি কাশিতে আক্রান্ত ব্যক্তি শীতকালে ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করলে যদি ক্ষতি হয়। তাহলে গরম পানি দিয়ে অযু বা গোসল করবে। যদি গরম পানি সংগ্রহে না থাকে অথবা গরম পানি ব্যবহার করলেও ক্ষতির আশংকা হয় তাহলে তায়াম্মুম করবে।
عَنْ جَابِرٍ، قَالَ خَرَجْنَا فِي سَفَرٍ فَأَصَابَ رَجُلاً مِنَّا حَجَرٌ فَشَجَّهُ فِي رَأْسِهِ ثُمَّ احْتَلَمَ فَسَأَلَ أَصْحَابَهُ فَقَالَ هَلْ تَجِدُونَ لِي رُخْصَةً فِي التَّيَمُّمِ فَقَالُوا مَا نَجِدُ لَكَ رُخْصَةً وَأَنْتَ تَقْدِرُ عَلَى الْمَاءِ فَاغْتَسَلَ فَمَاتَ فَلَمَّا قَدِمْنَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أُخْبِرَ بِذَلِكَ فَقَالَ ” قَتَلُوهُ قَتَلَهُمُ اللَّهُ أَلاَّ سَأَلُوا إِذْ لَمْ يَعْلَمُوا فَإِنَّمَا شِفَاءُ الْعِيِّ السُّؤَالُ إِنَّمَا كَانَ يَكْفِيهِ أَنْ يَتَيَمَّمَ وَيَعْصِرَ ” . أَوْ ” يَعْصِبَ ” . شَكَّ مُوسَى ” عَلَى جُرْحِهِ خِرْقَةً ثُمَّ يَمْسَحَ عَلَيْهَا وَيَغْسِلَ سَائِرَ جَسَدِهِ ”
অর্থ: জাবের (রা.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা কোন এক সফরে বের হলে আমাদের মধ্যকার একজনের মাথা পাথরের আঘাতে ফেটে যায়। ঐ অবস্থায় তার স্বপ্নদোষ হলে সে সাথীদের জিজ্ঞেস করল, এ অবস্থায় আমি কি তায়াম্মুম করতে পারি? তারা বলল, যেহেতু তুমি পানি ব্যবহার করতে সক্ষম, তাই তোমাকে তায়াম্মুম করার সুযোগ দেয়া যায় না। অতঃপর সে ব্যক্তি গোসল করার ফলে মৃত্যুবরণ করল। এই সফর হতে প্রত্যাবর্তনের পর নবী (ﷺ)কে এই সংবাদ দেয়া হলে তিনি বলেন, তার সাথীরা তাকে হত্যা করেছে, আল্লাহ তাদের ধবংস করুন (তিনি রাগান্বিতভাবে এরূপ উক্তি করেন)। তাদের যখন (সমাধান) জানা ছিল না, তারা কেন জিজ্ঞেস করে তা জেনে নিল না। কারণ অজ্ঞতার ঔষধ হচ্ছে জিজ্ঞেস করা। ঐ লোকটির জন্য তায়াম্মুম করাই যথেষ্ট ছিল। আর যখমের স্থানে ব্যান্ডেজ করে তার উপর মাসাহ্ করে শরীরের অন্যান্য স্থান ধুয়ে ফেললেই যথেষ্ট হত। (ইফা. সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৩৩৬ মিশকাতুল মাসাবীহ হাদীস নং ৫৩১ হাদীসের মান: হাসান)
২. একেবারেই পানি পাওয়া না গেলে অথবা অযু গোসলের জন্য যথেষ্ট পানি পাওয়া না গেলে। কিংবা অল্প পানি থাকায় অযু গোসল করলে পিপাসায় কষ্ট করতে হবে তাহলে তায়াম্মুম করবে।
عَنْ أَبِي ذَرٍّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِنَّ الصَّعِيدَ الطَّيِّبَ طَهُورُ الْمُسْلِمِ وَإِنْ لَمْ يَجِدِ الْمَاءَ عَشْرَ سِنِينَ فَإِذَا وَجَدَ الْمَاءَ فَلْيُمِسَّهُ بَشَرَتَهُ فَإِنَّ ذَلِكَ خَيْرٌ ”
অর্থ: আবু যর (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, দশ বছর ধরেও যদি পানি না পায় তা হলেও পাক মাটি একজন মুসলিমের জন্য পবিত্রতার উপকরণ বলে বিবেচ্য হবে। অতঃপর যখন সে পানি পাবে তখন তা দিয়ে সে তার শরীর ধুয়ে নিবে। এটাই তার জন্য উত্তম। (ইফা. সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ১২৪ সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ৩২৩ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ عِمْرَانَ، قَالَ كُنَّا فِي سَفَرٍ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم. فَصَلَّى بِالنَّاسِ، فَلَمَّا انْفَتَلَ مِنْ صَلاَتِهِ إِذَا هُوَ بِرَجُلٍ مُعْتَزِلٍ لَمْ يُصَلِّ مَعَ الْقَوْمِ قَالَ ” مَا مَنَعَكَ يَا فُلاَنُ أَنْ تُصَلِّيَ مَعَ الْقَوْمِ “. قَالَ أَصَابَتْنِي جَنَابَةٌ وَلاَ مَاءَ. قَالَ ” عَلَيْكَ بِالصَّعِيدِ، فَإِنَّهُ يَكْفِيكَ ”
অর্থ: ইমরান (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী (ﷺ) এর সঙ্গে এক সফরে ছিলাম।… রাসূল (সা.) লোকদের নিয়ে নামায আদায় করলেন। নামায শেষ করে দেখলেন, এক ব্যক্তি পৃথক দাড়িয়ে আছেন। তিনি লোকদের সাথে নামায আদায় করেননি। নবী (ﷺ) তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ হে অমুক! তোমাকে লোকদের সাথে নামায আদায় করতে কিসে বাঁধা দিল ? তিনি বললেন, আমার উপর গোসল ফরয হয়েছে। অথচ পানি নেই। তিনি বললেন, পবিত্র মাটি নাও (তায়াম্মুম কর), এটাই তোমার জন্য যথেষ্ট। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ৩৩৭ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” فُضِّلْنَا عَلَى النَّاسِ بِثَلاَثٍ جُعِلَتْ صُفُوفُنَا كَصُفُوفِ الْمَلاَئِكَةِ وَجُعِلَتْ لَنَا الأَرْضُ كُلُّهَا مَسْجِدًا وَجُعِلَتْ تُرْبَتُهَا لَنَا طَهُورًا إِذَا لَمْ نَجِدِ الْمَاءَ ” وَذَكَرَ خَصْلَةً أُخْرَى
অর্থ: হুযাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন তিনটি জিনিস দ্বারা অন্যদের উপর আমাদের মর্যাদা দান করা হয়েছে ১.আমাদের (নামাযের) কাতার-গুলোকে ফেরেশতাদের কাতারের ন্যায় করা হয়েছে। ২.আমাদের জন্য সমগ্র জমিনকে মসজিদ বানানো হয়েছে। আর তার মাটিকে করা হয়েছে আমাদের জন্য পবিত্রকারী, যখন আমরা পানি না পাই। তিনি আরও একটি বিষয় উল্লেখ করেছেন (যা আমি ভুলে গিয়েছি)। (ইফা. সহীহ মুসলিম হাদীস নং ১০৪৮ হাদীসের মান: সহীহ)
৩.পানি এমন ঠাণ্ডা যে, তাতে অযু বা গোসল করলে অসুস্থ হওয়ার দৃঢ় আশংকা আছে। এমনকি পানি গরম করারও ব্যবস্থা নেই তাহলে তায়াম্মুম করবে।
وَ اِنۡ کُنۡتُمۡ جُنُبًا فَاطَّہَّرُوۡا ؕ وَ اِنۡ کُنۡتُمۡ مَّرۡضٰۤی اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ اَوۡ جَآءَ اَحَدٌ مِّنۡکُمۡ مِّنَ الۡغَآئِطِ اَوۡ لٰمَسۡتُمُ النِّسَآءَ فَلَمۡ تَجِدُوۡا مَآءً فَتَیَمَّمُوۡا صَعِیۡدًا طَیِّبًا فَامۡسَحُوۡا بِوُجُوۡہِکُمۡ وَ اَیۡدِیۡکُمۡ مِّنۡہُ ؕ مَا یُرِیۡدُ اللّٰہُ لِیَجۡعَلَ عَلَیۡکُمۡ مِّنۡ حَرَجٍ وَّ لٰکِنۡ یُّرِیۡدُ لِیُطَہِّرَکُمۡ
অর্থ: আর যদি তোমরা অসুস্থ হও বা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা সেরে আসে কিংবা তোমরা স্ত্রী সহবাস করে থাক, অতঃপর পানি না পাও তাহলে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও। অর্থাৎ তোমাদের মুখমন্ডল ও উভয় হাত মাটি দ্বারা মাসাহ করো। আল্লাহ তোমাদের উপর কোন সমস্যা সৃষ্টি করতে চান না, বরং তিনি তোমাদের পবিত্র করতে চান। (সূরা মায়েদা আয়াত নং ৬)
عَنْ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، قَالَ احْتَلَمْتُ فِي لَيْلَةٍ بَارِدَةٍ فِي غَزْوَةِ ذَاتِ السَّلاَسِلِ فَأَشْفَقْتُ إِنِ اغْتَسَلْتُ أَنْ أَهْلِكَ فَتَيَمَّمْتُ ثُمَّ صَلَّيْتُ بِأَصْحَابِي الصُّبْحَ فَذَكَرُوا ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ” يَا عَمْرُو صَلَّيْتَ بِأَصْحَابِكَ وَأَنْتَ جُنُبٌ ” . فَأَخْبَرْتُهُ بِالَّذِي مَنَعَنِي مِنَ الاِغْتِسَالِ وَقُلْتُ إِنِّي سَمِعْتُ اللَّهَ يَقُولُ ( وَلاَ تَقْتُلُوا أَنْفُسَكُمْ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيمًا ) فَضَحِكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلَمْ يَقُلْ شَيْئًا
অর্থ: আমর ইবনে আস (রা.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, যাতুস সালাসিল যুদ্ধের সময় খুব শীতের রাতে আমার স্বপ্নদোষ হয়। আমার ভয় হলো, আমি যদি এই সময় গোসল করি তাহলে ক্ষতিগ্রস্থ হবো। তাই আমি তায়াম্মুম করে আমার সাথীদের সাথে ফজরের নামায আদায় করি। পরে তারা বিষয়টি রাসূল (ﷺ) কে জানালো। রাসূল (ﷺ) বললেন, হে আমর! তুমি নাকি নাপাক অবস্থায় তোমার সাথীদের সঙ্গে নামায আদায় করেছ! তখন আমি গোসল না করার কারণ সম্পর্কে তাকে অবহিত করলাম এবং বললাম, আমি আল্লাহর এই বাণীও শুনেছিঃ ‘‘তোমরা নিজেরা নিজেদের হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি বড়ই দয়াবান’’( সূরা নিসা আয়াত নং ২৯)। একথা শুনে রাসূল (ﷺ) হেসে দিলেন এবং কিছুই বললেন না। (ইফা. সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৩৩৪ হাদীসের মান: সহীহ)
৪.পানি এমন জায়গায় আছে যে, তা আনতে গেলে হিংস্র প্রাণীর বা শত্রুর আক্রমণের শিকার হতে হবে। অথবা অর্থ-সম্পদের ক্ষতির আশংকা রয়েছে। যেমন: বাসে বা বিমানে ভ্রমণের সময় যদি অযু বা গোসল করতে গেলে গাড়ি ছেড়ে যাওয়ার আশংকা হয় তাহলে তায়াম্মুম করবে। তবে নামাযের ওয়াক্তের মধ্যেই গাড়ি যথাস্থানে পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে তায়াম্মুম করবে না।
وَ لَا تُلۡقُوۡا بِاَیۡدِیۡکُمۡ اِلَی التَّہۡلُکَۃِ
অর্থ: আর তোমরা নিজ হাতে নিজদেরকে ধ্বংসে নিক্ষেপ করো না। (সূরা বাকারা আয়াত নং ১৯৫)
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، أَنَّ رَجُلَيْنِ، تَيَمَّمَا وَصَلَّيَا ثُمَّ وَجَدَا مَاءً فِي الْوَقْتِ فَتَوَضَّأَ أَحَدُهُمَا وَعَادَ لِصَلاَتِهِ مَا كَانَ فِي الْوَقْتِ وَلَمْ يُعِدِ الآخَرُ فَسَأَلاَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لِلَّذِي لَمْ يُعِدْ ” أَصَبْتَ السُّنَّةَ وَأَجْزَأَتْكَ صَلاَتُكَ ” . وَقَالَ لِلآخَرِ ” أَمَّا أَنْتَ فَلَكَ مِثْلُ سَهْمِ جَمْعٍ
অর্থ: আবু সাঈদ (রা.) থেকে বর্ণিত। দুই ব্যক্তি তায়াম্মুম করে নামায আদায় করল। পরবর্তীতে নামাযের সময় থাকতেই তারা পানি প্রাপ্ত হল। তাদের একজন অযু করে তার নামায ওয়াক্তের মধ্যেই আদায় করল। দ্বিতীয় ব্যক্তি পুনরায় আদায় করল না। তারা উভয়েই এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে প্রশ্ন করল। যে ব্যক্তি পুনরায় নামায আদায় করেনি, তিনি তাকে বললেন, তুমি বিধান মত কাজ করেছ। তোমার নামায তোমার জন্য যথেষ্ট হয়েছে। অন্য বক্তিকে বললেন, তোমার জন্য উভয় কাজের সওয়াব রয়েছে। (ইফা. সুনানে নাসাঈ হাদীস ৪৩৩ হাদীসের মান: সহীহ)
মোটকথা চারটি কারণ পাওয়া গেলে তায়াম্মুম করা জায়েয হবে। সেই কারণগুলো হলো, ১. এমন অসুস্থতা যে,পানি ব্যবহার করলে রোগ বেড়ে যাবে অথবা সুস্থ হতে বিলম্ব হবে। ২. একেবারেই পানি পাওয়া না গেলে অথবা অযু গোসলের জন্য যথেষ্ট পানি পাওয়া না গেলে। কিংবা অল্প পানি থাকায় অযু গোসল করলে পিপাসায় কষ্ট করতে হবে। ৩. পানি এমন ঠাণ্ডা যে, তাতে অযু বা গোসল করলে অসুস্থ হওয়ার দৃঢ় আশংকা আছে। এমনকি পানি গরম করারও ব্যবস্থা নেই। ৪. পানি এমন জায়গায় আছে যে, তা আনতে গেলে হিংস্র প্রাণীর বা শত্রুর আক্রমণের শিকার হতে হবে। অথবা অর্থ-সম্পদের ক্ষতির আশংকা রয়েছে। উল্লেখিত কারণগুলো না পাওয়া গেলে তায়াম্মুম করা জায়েয হবে না। সুতরাং তায়াম্মুম করার ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখা অত্যন্ত জরুরী।
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- জোবায়ের হুসাইন।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply