প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম। মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাই দুই ঈদের নামায কোন সময় আদায় করা উত্তম ?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
সূর্য উদিত হয়ে নামাযের নিষিদ্ধ সময় শেষ হওয়ার পর থেকে সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ার আগ পর্যন্ত ঈদের নামাযের সময় থাকে। এ সময়ের মধ্যে যে কোন সময় ঈদের নামায পড়া যায়। তবে ঈদুল আযহার নামায ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর দেরি না করে একটু তাড়াতাড়ি আদায় করা উত্তম। যাতে কুরবানীর কাজ দ্রুত শুরু করা যায়। আর ঈদুল ফিতরের নামাযও ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি আদায় করে নেওয়া উত্তম। কিন্তু ঈদুল ফিতরের নামায ঈদুল আযহার নামাযের চেয়ে একটু বিলম্বে আদায় করা উত্তম। যাতে ফিতরা বন্টনের কাজ সম্পন্ন করা যায়।
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُسْرٍ، أَنَّهُ خَرَجَ مَعَ النَّاسِ يَوْمَ فِطْرٍ أَوْ أَضْحًى فَأَنْكَرَ إِبْطَاءَ الإِمَامِ وَقَالَ إِنْ كُنَّا لَقَدْ فَرَغْنَا سَاعَتَنَا هَذِهِ وَذَلِكَ حِينَ التَّسْبِيحِ .
১.অর্থ: আব্দুল্লাহ্ ইবন বুসর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি একবার লোকদের সাথে ঈদুল ফিতর অথবা ঈদুল আযহার দিন বের হন। ইমামের বিলম্বে তিনি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেনঃ আমরা তো এ সময়ে ঈদের নামায শেষ করতাম, আর তখন ছিল চাশতের নামাযের সময়। (সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস নং ১৩১৭ সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ১১৩৫ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ إِيَاسِ بْنِ أَبِي رَمْلَةَ، قَالَ سَمِعْتُ مُعَاوِيَةَ، سَأَلَ زَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ أَشَهِدْتَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عِيدَيْنِ قَالَ نَعَمْ صَلَّى الْعِيدَ مِنْ أَوَّلِ النَّهَارِ ثُمَّ رَخَّصَ فِي الْجُمُعَةِ
২.অর্থ: ইয়াস ইবনে আবু রমলা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মুআবিয়া (রা.)-কে যায়েদ ইবনে আরকাম (রা.)-কে প্রশ্ন করতে শুনেছি, আপনি কি রসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাথে ঈদ এবং জুমআর নামাযে শরীক ছিলেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ; তিনি ঈদের নামায দিনের শুরুতে আদায় করে ফেলেছিলেন। অতঃপর (গ্রামের অধিবাসীদেরকে) জুমআর নামাযে উপস্থিত না হওয়ার অবকাশ দিয়েছিলেন। (সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ১৫৯১ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ أَبِي عُمَيْرِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ عُمُومَةٍ، لَهُ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ رَكْبًا جَاءُوا إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَشْهَدُونَ أَنَّهُمْ رَأَوُا الْهِلاَلَ بِالأَمْسِ فَأَمَرَهُمْ أَنْ يُفْطِرُوا وَإِذَا أَصْبَحُوا أَنْ يَغْدُوا إِلَى مُصَلاَّهُمْ
৩.অর্থ: আবু উমাইর ইবনে আনাস (রহ.) থেকে তার চাচা এবং রসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাহাবীর সূত্রে বর্ণিত। একদা কয়েকজন আরোহী রসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর খেদমতে হাযির হয়ে বলেন যে, তারা গতকাল চাঁদ দেখেছেন। তখন তিনি তাদেরকে রোযা ভঙ্গ করতে এবং পরের দিন সকালে ঈদের নামায আদায় করতে বলেন। (সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ১১৫৭ হাদীসের মান: সহীহ)
উপরোক্ত হাদীসগুলোর আলোকে উলামায়ে কেরাম ঈদুল আযহার নামাযকে সকাল সকাল এবং ঈদুল ফিতরের নামাযকে একটু বিলম্বে আদায় করা উত্তম মনে করেছেন। কারণ ঈদুল আযহার নামাযের পর কুরবানী রয়েছে। আর ঈদুল ফিতরের নামাযের আগে ফিতরা বন্টনের কাজ রয়েছে।
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- মুহাম্মদ আবুল হাসান।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply