প্রশ্ন:
আসসালামু আলাইকুম। নামাযের মধ্যে টাখনুর নিচে পায়জামা, প্যান্ট বা অন্য কোনো কাপড় থাকলে নামায হবে কি ?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
ছেলেদের জন্য নামাযের ভিতরে-বাইরে সর্বাবস্থায় টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পরা হারাম।টাখনুর নিচে কাপড় রেখে নামায পড়লে নামায হয়ে যাবে কিন্তু নামায মাকরূহ হবে। কেউ কেউ মনে করেন অহংকারের নিয়ত না থাকলে টাখনুর নিচে কাপড় পরা নাজায়েয নয়। মূলত অহংকারের নিয়ত থাকুক বা না থাকুক, সর্বদাই ছেলেদের জন্য লুঙ্গি, পায়জামা,প্যান্ট ও আবাকাবাসহ সকল কাপড় টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পরা হারাম। (ফাতহুল মুলহিম ৪/১২৩)
عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ” مَنْ أَسْبَلَ إِزَارَهُ فِي صَلاَتِهِ خُيَلاَءَ فَلَيْسَ مِنَ اللَّهِ فِي حِلٍّ وَلاَ حَرَامٍ
১.অর্থ: ইবনে মাস্উদ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি নামাযের মধ্যে অহংকার করে স্বীয় পরিধেয় বস্ত্র (লুঙ্গী, জামা, পাজামা বা প্যান্ট পায়ের গিরার নীচে পর্যন্ত) ঝুলিয়ে রাখে, ঐ ব্যক্তির ভাল বা মন্দের ব্যপারে আল্লাহ্ তাআলার কোন দায়িত্ব নেই (তার জন্য জান্নাত হালাল করবেন না এবং জাহান্নামও হারাম করবেন না)। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৬৩৭ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا أَسْفَلَ مِنَ الكَعْبَيْنِ مِنَ الإِزَارِ فَفِي النَّارِ»
২.অর্থ: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী (ﷺ) বলেছেনঃ টাখনুর নিচের যে অংশ লুঙ্গী (ইত্যাদি) দ্বারা ঢাকা থাকবে তা জাহান্নামে যাবে। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৭৮৭ সুনানে নাসাঈ, হাদীস নং ৫৩৩১ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ أَبِي ذَرٍّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَلاَ يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ ” قَالَ فَقَرَأَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثَلاَثَ مِرَارٍ . قَالَ أَبُو ذَرٍّ خَابُوا وَخَسِرُوا مَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ الْمُسْبِلُ وَالْمَنَّانُ وَالْمُنَفِّقُ سِلْعَتَهُ بِالْحَلِفِ الْكَاذِبِ
৩.অর্থ: আবু যর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ তিন ব্যক্তির সাথে কিয়ামত দিবসে আল্লাহ কথা বলবেন না। তাদের প্রতি তাকাবেন না, তাদের পবিত্র করবেন না, আর তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি এটা তিনবার পাঠ করলেন। আবু যর (রা.) আরয করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এরা কারা? তিনি বললেনঃ এরা হচ্ছে- যে ব্যক্তি টাখনুর নীচে ঝুলিয়ে কাপড় পরে, যে ব্যক্তি দান করে খোটা দেয় এবং যে ব্যক্তি মিথ্যা শপথের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৬ সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৪০৮৭ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” الإِسْبَالُ فِي الإِزَارِ وَالْقَمِيصِ وَالْعِمَامَةِ مَنْ جَرَّ مِنْهَا شَيْئًا خُيَلاَءَ لَمْ يَنْظُرِ اللَّهُ إِلَيْهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
৪.অর্থ: আব্দুল্লাহ (রা.) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ লুঙ্গি, জামা ও পাগড়ির মধ্যে ‘ইসবাল’ বা মাত্রাধিক্যতা আছে। কাজেই, যে ব্যক্তি এসব ব্যবহারের সময় হেঁচড়িয়ে চলবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তার প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেবেন না। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৪০৯৪ সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ৫৩৩৪ হাদীসের মান: সহীহ)
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَابْ
উত্তর প্রদানে-রেজাউল করীম।
শিক্ষার্থীঃ মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শায়েখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply