৭০ হাজারবার কালেমা পড়লে কি কবরের আযাব মাফ হয় ?

প্রশ্ন:

আসসালামু আলাইকুম। মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাই কেউ কেউ বলেন সত্তর হাজারবার কালেমা তাইয়্যিবা পড়লে নাকি কবরের আযাব মাফ হয়ে যায় এ কথা কি সঠিক ?

উত্তরঃ

وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ

অনেকেই মনে করেন সত্তর হাজারবার কালেমা তাইয়্যিবা পড়লে কবরের আযাব মাফ হয়ে যায়। শরঈ দৃষ্টিকোণ থেকে এ কথার কোন ভিত্তি পাওয়া যায় না। কিন্তু বিভিন্ন হাদীসে কালেমা তাইয়্যিবা পাঠ করার অনেক ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। তাই যে কেউ ঐ সমস্ত ফযীলত লাভের জন্য বেশি বেশি কালেমা তাইয়্যিবা পাঠ করতে পারবে। সাথে সাথে মৃত ব্যক্তির ঈসালে সওয়াবের উদ্দেশ্যেও পাঠ করা যাবে। কিন্তু সত্তর হাজারবার পড়লে কবরের আযাব মাফ হয়ে যায় এমন বিশ্বাস রেখে পড়লে বিদ’আত হবে।

أَبِي مُوسَى عَن أَبِيهِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ أَبْشِرُوا وَبَشِّرُوا النَّاسَ مَنْ قَالَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ صَادِقًا بِهَا دَخَلَ الْجَنَّةَ

১.অর্থ: আবু মুসা আল-আশআরী (রা.) থেকে বর্ণিত: রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ করো এবং যারা তোমাদের পশ্চাতে রয়েছে (অর্থাৎ যারা এখানে উপস্থিত নেই), তাদেরকে এই মর্মে সুসংবাদ প্রদান করবে, যে ব্যক্তি একনিষ্ঠতার সাথে লা ইলাহা ইল্লাল্লহ পাঠ করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ১৯৬৮৯ হাদীসের মান: সহীহ)

عن أنس بن مالك أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال:
مَا مِنْ أَحَدٍ يَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ صِدْقًا مِنْ قَلْبِهِ إِلاَّ حَرَّمَهُ اللَّهُ عَلَى النَّارِ.

২.অর্থ: আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত,
রাসূল (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আন্তরিকভাবে সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল, তাহলে আল্লাহ তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম করে দেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১২৮ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩২ হাদীসের মানঃ সহীহ)

مَنْ يَعِشْ مِنْكُمْ بَعْدِي فَسَيَرَى اخْتِلاَفًا كَثِيرًا فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الْمَهْدِيِّينَ الرَّاشِدِينَ تَمَسَّكُوا بِهَا وَعَضُّوا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الأُمُورِ فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ ” .

৩.অর্থ: রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের মাঝে যারা আমার পরে জীবিত থাকবে, তারা বহু মতভেদ দেখতে পাবে। তখন তোমাদের উচিত হবে আমার ও আমার খুলাফায়ে-রাশেদার সুন্নতের অনুসরণ করা, যারা সত্য ও ন্যায়ের অনুসারী। তোমরা তাদের দৃঢ়ভাবে অনুসরণ করবে। আর সাবধান থাকবে, নব উদ্ভাবিত ধর্মীয় বিষয় থেকে। কেননা ধর্ম বিষয়ে প্রতিটি নতুন বিষয়ই বিদ’আত। আর প্রতিটি বিদ’আতই গোমরাহী। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৬০৭ সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ২৬৭৬ হাদীসের মান: সহীহ)

وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَابْ
উত্তর প্রদানে-জুবায়ের আহমেদ।
শিক্ষার্থীঃ মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শায়েখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।