প্রশ্ন:
আসসালামু আলাইকুম! আমি ইউটিউবে এক শায়েখের বয়ানে শুনলাম দলবদ্ধ হয়ে কুরআন তিলাওয়াত করা বিদ’আত! ওনার কথা ঠিক না বেঠিক দলিলসহ জানতে চাই ?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
কুরআনে তিলাওয়াত একক ভাবে অথবা দলবদ্ধ হয়ে উভয় ভাবেই জায়েয আছে। বিভিন্ন সহীহ হাদীসে দলবদ্ধ হয়ে কুরআন তিলাওয়াত করার অনেক ফযীলতও বর্ণিত হয়েছে। যারা বলেন দলবদ্ধ হয়ে কুরআন তিলাওয়াত করা বিদ’আত! তাদের কথা সঠিক নয়। অবশ্য দলবদ্ধ হওয়াকে জরুরী মনে করা। কিংবা অর্থের বিনিময়ে দলবদ্ধ হওয়া দূষণীয়।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” مَا اجْتَمَعَ قَوْمٌ فِي بَيْتٍ مِنْ بُيُوتِ اللَّهِ تَعَالَى يَتْلُونَ كِتَابَ اللَّهِ وَيَتَدَارَسُونَهُ بَيْنَهُمْ إِلاَّ نَزَلَتْ عَلَيْهِمُ السَّكِينَةُ وَغَشِيَتْهُمُ الرَّحْمَةُ وَحَفَّتْهُمُ الْمَلاَئِكَةُ وَذَكَرَهُمُ اللَّهُ فِيمَنْ عِنْدَهُ
১.অর্থ: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত: নবী করীম (ﷺ) হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেনঃ যখন কোন সম্প্রদায়ের লোকেরা আল্লাহর ঘরের কোন এক ঘরে একত্রিত হয়ে কুরআন পাঠ করে এবং পরস্পরে তা নিয়ে আলোচনা করে। তখন তাদের উপর শান্তি বর্ষিত হয় এবং আল্লাহর রহমত তাদেরকে ঢেকে নেয় এবং ফিরিশতারা তাদেরকে ঘিরে রাখে এবং আল্লাহ তাঁর নিকটবর্তী ফেরেশতাদের কাছে তাদের প্রশংসা করেন। (সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ১৪৫৫ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৬৬০৮ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ نَقْرَأُ الْقُرْآنَ وَفِينَا الأَعْرَابِيُّ وَالأَعْجَمِيُّ فَقَالَ ” اقْرَءُوا فَكُلٌّ حَسَنٌ وَسَيَجِيءُ أَقْوَامٌ يُقِيمُونَهُ كَمَا يُقَامُ الْقِدْحُ يَتَعَجَّلُونَهُ وَلاَ يَتَأَجَّلُونَهُ
২.অর্থ: জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ্ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা যখন আমরা কুরআন পাঠে মগ্ন ছিলাম। তখন হঠাৎ সেখানে রসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আগমন করেন এবং এ সময় আমাদের মধ্যে আরব বেদুইন ও অনারব লোকেরা ছিল। তিনি বলেনঃ তোমরা (কুরআন) পাঠ করো, সকলেই উত্তম। কেননা অদুর ভবিষ্যতে এমন সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটবে। যারা কুরআনকে তীরের মত ঠিক করবে (অর্থাৎ তাজবীদ নিয়ে অত্যন্ত বাড়াবাড়ি করবে), তা দ্রুত গতিতে পাঠ করবে, ধীরস্থিরভাবে পড়বে না। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৮৩০ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: «كَانَ يَعْرِضُ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ القُرْآنَ كُلَّ عَامٍ مَرَّةً، فَعَرَضَ عَلَيْهِ مَرَّتَيْنِ فِي العَامِ الَّذِي قُبِضَ فِيهِ، وَكَانَ يَعْتَكِفُ كُلَّ عَامٍ عَشْرًا، فَاعْتَكَفَ عِشْرِينَ فِي العَامِ الَّذِي قُبِضَ فِيهِ
৩.অর্থ: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রতি বছর জিবরাঈল (আ.) রাসূল (ﷺ) এর সঙ্গে একবার কুরআন মাজীদ শোনাতেন ও শুনতেন। কিন্তু যে বছর তাঁর ওফাত হয় সে বছর তিনি রাসূল (ﷺ) এর সঙ্গে দু’বার শুনিয়েছেন। প্রতি বছর রাসূল (ﷺ) রমযানে দশ দিন ইতেকাফ করতেন। কিন্তু যে বছর তার ওফাত হয় সে বছর তিনি বিশ দিন ইতেকাফ করেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৯৯৮ হাদীসের মান: সহীহ)
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَابْ
উত্তর প্রদানে-মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ।
শিক্ষার্থীঃ মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শায়েখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply