প্রশ্ন:
আসসালামু আলাইকুম! আমি একটা গার্মেন্টসে চাকরি করতাম সেখানে স্বাধীনতা নেই বেতন কম এজন্য আমি একটা ব্যবসা করতে চাচ্ছি, কিন্তু আমার তেমন পুঁজি নেই। এখন আমি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা করতে পারবো কি ?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকসহ বাংলাদেশে যত ব্যাংক আছে সকল ব্যাংকই শতভাগ সুদ মুক্ত নয়। যার কারণে কেউ ব্যাংক থেকে লোন নিলে তা সুদের অন্তর্ভুক্ত হবে। ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে সুদ দেওয়া নেওয়া উভয় হারাম এবং কবীরা গোনাহ। আপনি অন্য কোনোভাবে টাকা সংগ্রহের চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে কারো থেকে করজে হাসানা নিন। যদি হালালভাবে টাকার ব্যবস্থা করতে না পারেন। তাহলে সালাতুল হাজতের নামায পড়ুন ও প্রত্যেক ফরয নামাযের পর বেশি বেশি দু’আ করুন যতদিন না সামান্য পুঁজি হয়। আর যদি আপনার কাছে কিছু পুঁজি থাকে তাহলে তা দিয়েই ছোট পরিসরে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। মনে রাখবেন বড় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি তৈরির পিছনে আছে ছোট থেকে শুরুর একটি গল্প। তাই ছোট ব্যবসা করতে কখনোই লজ্জা পাওয়া উচিত নয়।
اَحَلَّ اللّٰہُ الۡبَیۡعَ وَحَرَّمَ الرِّبٰوا
১.অর্থ: আল্লাহ ক্রয়-বিক্রয়কে (তথা ব্যবসাকে) হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন। (সূরা বাকারা: আয়াত নং ২৭৫)
فَاِنۡ لَّمۡ تَفۡعَلُوۡا فَاۡذَنُوۡا بِحَرۡبٍ مِّنَ اللّٰہِ وَرَسُوۡلِہٖ ۚ وَاِنۡ تُبۡتُمۡ فَلَکُمۡ رُءُوۡسُ اَمۡوَالِکُمۡ ۚ لَا تَظۡلِمُوۡنَ وَلَا تُظۡلَمُوۡنَ
২.অর্থ: যদি তোমরা (সুদ) না ছাড় তবে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সঙ্গে যুদ্ধের জন্যে প্রস্তুত হয়ে যাও। কিন্তু যদি তোমরা (সুদ থেকে) তওবা কর তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই প্রাপ্য। এতে তোমরা কারও প্রতি অত্যাচার করো না এবং কেউ তোমাদের প্রতি অত্যাচার করবে না। (সূরা বাকারা: আয়াত নং ২৭৯)
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوا الرِّبٰۤوا اَضۡعَافًا مُّضٰعَفَۃً ۪ وَاتَّقُوا اللّٰہَ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ ۚ
৩.অর্থ: হে মুমিনগণ! তোমরা কয়েক গুণ বৃদ্ধি করে সুদ খেয়ো না এবং আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা সফলতা লাভ করতে পার। (সূরা আলে ইমরান: আয়াত নং ১৩০)
عَنْ جَابِرٍ، قَالَ لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم آكِلَ الرِّبَا وَمُوكِلَهُ وَكَاتِبَهُ وَشَاهِدَيْهِ وَقَالَ هُمْ سَوَاءٌ
৪.অর্থ: জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) লানত করেছেন, সুদ গ্রহীতার উপর, সুদদাতার উপর, এর লেখকের উপর ও তার সাক্ষীদ্বয়ের উপর এবং বলেছেন এরা সকলেই সমান। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৯৪৮ সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৩৩৩ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ الرِّبَا سَبْعُونَ حُوبًا أَيْسَرُهَا أَنْ يَنْكِحَ الرَّجُلُ أُمَّهُ
৫.অর্থ: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ সুদের গোনাহের সত্তরটি স্তর রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্র স্তর হলো আপন মায়ের সাথে ব্যভিচার করা। (সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস নং ২২৭৪ হাদীসের মান: সহীহ)
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَابْ
উত্তর প্রদানে-মুহাম্মাদ নাসারুল্লাহ নাফিস।
শিক্ষার্থীঃ মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শায়েখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply