প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম! লাশ দাফন করার পর হাত তুলে দু’আ করা যাবে কি ? অনুগ্ৰহ করে প্রশ্নের উত্তরটি দলিলসহ জানালে উপকৃত হতাম।
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর তার কবরের পাশে থেকে কিছু সময় পর্যন্ত তার জন্য দু’আ ও ইস্তিগফার করা রাসূল (সা.) এর সুন্নত। মৃত ব্যক্তিকে কবরে, দাফন করে জীবিত ব্যক্তিদের ফিরে আসার সাথে সাথেই ‘মুনকির ও নাকীর’ নামক দু’জন ফেরেশতা কবরে, উপস্থিত হয় এবং মৃত ব্যক্তিকে তার আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কবর আখেরাতের মনজিল-সমূহের প্রথম ধাপ এবং খুবই মারাত্মক স্থান। কাজেই, মৃত ব্যক্তি যাতে ঈমানের বলে বলীয়ান হয়ে ফেরেশতাদের প্রশ্নের জবাব ঠিকমত দিতে পারে, সে জন্য দু’আ ইস্তেগফার করা উচিত।
عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا فَرَغَ مِنْ دَفْنِ الْمَيِّتِ وَقَفَ عَلَيْهِ فَقَالَ ” اسْتَغْفِرُوا لأَخِيكُمْ وَسَلُوا لَهُ التَّثْبِيتَ فَإِنَّهُ الآنَ يُسْأَلُ
১.অর্থ:উসমান ইবনে আফফান (রাযি.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী (ﷺ) যখন কোন মৃত ব্যক্তির দাফন পক্রিয়া সম্পন্ন করতেন, তখন তিনি কবরের পাশে দাঁড়িয়ে বলতেনঃ তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করো এবং সে যেন সুদৃঢ় থাকতে পারে, তার জন্য দু’আ কর। কেননা, এখনই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। (ইফা.সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৩২০৭ হাদীসের মান: সহীহ)
حَتَّي جَاءَ الْبَقِيعَ فَقَامَ، فَأَطَالَ الْقِيَامَ، ثُمَّ رَفَعَ يَدَيْهِ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ
২. অর্থ: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত: রাসূল (সা.) জান্নাতুল বাকী (কবরস্থানে) আসলেন এবং দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকলেন। অতঃপর তিনি তিনবার উভয় হাত উঠিয়ে দু’আ করলেন। (ইফা. সহীহ মুসলিম হাদীস নং ২১২৮ হাদীসের মান: সহীহ)
উল্লেখিত হাদীসগুলোর দিকে লক্ষ্য করলে আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, লাশ দাফন করার পর কবরের পাশে দাঁড়িয়ে হাত তুলে দু’আ করা রাসূল (সা.) এর হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। তাই একে অবৈধ বা বিদআত বলা কিছুতেই ঠিক নয়। তবে দু’আর সময় কবরকে সামনে রেখে দু’আ করবে না। বরং কবর থেকে সরে গিয়ে কবরকে পিছনে বা পাশে রেখে দাঁড়ানো অবস্থায় দু’আ করা উচিত। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিকভাবে প্রতিটি আমল করার তাওফিক দান করুন।
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- আতাউর রহমান।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply