প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম!যদি কারো কুরআন মুখস্থ না হয়, অথবা নামায ফরয হওয়ার পর মুখস্থ করার সুযোগ না হয়। তাহলে সে নামাযের কিরাতের স্থানে কী পড়বে?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো নামায। নামাযের ভিতর এবং বাহিরে বেশ কিছু বিধান আছে। যেগুলো যথাযথ আদায় না করলে নামায সহীহ হবে না। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি ফরয বিধান হলো সূরা কিরাত পাঠ করা। যদি কারো সূরা কিরাত মুখস্থ না হয় অথবা নামায ফরয হওয়ার পর মুখস্থ করার সুযোগ না পায়। তাহলে সে কুরআন মুখস্থ করার আপ্রাণ চেষ্টা করবে। আর মুখস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত নামাযে কিরাতের স্থানে। সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লহু ওয়াল্লহু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ পড়বে।
فَاقۡرَءُوۡا مَا تَیَسَّرَ مِنۡہُ
১. অর্থ: কুরআন থেকে যতটুকু সহজ হয় ততটুকু পড়ো। (সূরা মুজ্জাম্মিল আয়াত নং ২০)
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي أَوْفَى، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنِّي لاَ أَسْتَطِيعُ أَنْ آخُذَ مِنَ الْقُرْآنِ شَيْئًا فَعَلِّمْنِي مَا يُجْزِئُنِي مِنْهُ . قَالَ ” قُلْ سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ “
২. অর্থ: আবদুল্লাহ ইবনে আবু আওফা (রা.) সূত্রে বর্ণিত: তিনি বলেন, নবী (সা.) এর নিকট এক লোক এসে বলল, আমি কুরআন মুখস্থ করতে পারি না। অতএব আমাকে এমন কিছু শিখিয়ে দিন যা কুরআনের পরিবর্তে যথেষ্ট হবে। নবী (সা.) বললেন, তুমি বলো ‘সুবহানাল্লাহ, অয়ালহামদুলিল্লাহ, ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লহু ওয়াল্লহু আকবার ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ। (ইফা. সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৮৩২ সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ৯২৭ হাদীসের মান: হাসান)
عَنْ رِفَاعَةَ بْنِ رَافِعٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَصَّ هَذَا الْحَدِيثَ قَالَ فِيهِ ” فَتَوَضَّأْ كَمَا أَمَرَكَ اللَّهُ جَلَّ وَعَزَّ ثُمَّ تَشَهَّدْ فَأَقِمْ ثُمَّ كَبِّرْ فَإِنْ كَانَ مَعَكَ قُرْآنٌ فَاقْرَأْ بِهِ وَإِلاَّ فَاحْمَدِ اللَّهَ وَكَبِّرْهُ وَهَلِّلْهُ ”
৩.অর্থ: রিফা ইবনে রাফে (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূল (সা.) বলেছেন, মহান আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী অযু করো, তারপর কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করো। তারপর দাঁড়িয়ে আল্লাহু আকবার বলার পরে কুরআনের কিছু যদি মুখস্থ থাকে তবে তা পড়বে। তা না থাকলে আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করবে। (ইফা. সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৮৬১ সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ৩০২ হাদীসের মান: সহীহ)
উল্লেখিত কুরআনের আয়াত ও হাদীসের মাধ্যমে জানতে পারলাম। যদি কারো সূরা কিরাত মুখস্থ না হয় অথবা নামায ফরয হওয়ার পর মুখস্থ করার সুযোগ না পায়। তাহলে তার এই বাহানায় নামায ত্যাগ করার কোন সুযোগ নেই। বরং সে কিরাতের স্থানে উল্লিখিত তাসবীহ দিয়ে নামায আদায় করবে। আর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কুরআনের কিছু সহজ সূরা বা আয়াত মুখস্থ করে নিবে।
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- আব্দুল মুমিন আজাদ।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply