সালাম দিলে কি ৯০ নেকী আর উত্তর দিলে ১০ নেকী হয় ?

প্রশ্ন:

আসসালামু আলাইকুম! আমি জানি সালাম আসসালামু আলাইকুম বলে দিতে হয় কিন্তু অনেকেই সালামের শেষে ওয়ারহমাতুল্লাহ, ওয়াবারকাতুহ, ওয়ামাগফিরাতুহ ইত্যাদি যুক্ত করে থাকে। আবার কেউ কেউ বলে সালাম দিলে ৯০ নেকী আর উত্তর দিলে ১০ নেকী হয়। এখন আপনার কাছে সালাম দেওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাই ?

উত্তরঃ

وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ

মুসলমানদের পারস্পরিক দেখা সাক্ষাৎ হলে
কথাবার্তার আগে সালাম দেওয়া সুন্নত। সালাম দেওয়ার ক্ষেত্রে “আসসালামু আলাইকুম” অথবা “আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লহ” কিংবা “আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লহি ওয়াবারকাতুহ” এই তিনভাবে সালাম দেওয়া যায়।সালামে শুধু “আসসালামু আলাইকুম” বললে দশ নেকী, “ওয়ারহমাতুল্লহ” বৃদ্ধি করলে বিশ নেকী এবং “ওয়া বারকাতুহ” সহ পুরো সালাম বললে ত্রিশ নেকী পাওয়া যায়। সুনানে আবু দাউদ এর এক বর্ণনায়, ওয়ামাগফিরতুহু বৃদ্ধি করলে চল্লিশ নেকী হয় উল্লেখ আছে। কিন্তু তার সনদ দুর্বল এবং সাহাবায়ে কেরামের আমলের বিপরীত। তাই সেটা আমল যোগ্য নয়। আর সালাম দিলে ৯০ নেকী আর উত্তর দিলে ১০ নেকী হয়। আমাদের জানামতে এ কথাটা হাদীসের প্রসিদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য কোনো কিতাবে নেই।

وَاِذَا حُیِّیۡتُمۡ بِتَحِیَّۃٍ فَحَیُّوۡا بِاَحۡسَنَ مِنۡہَاۤ اَوۡ رُدُّوۡہَا ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ حَسِیۡبًا

১.অর্থ: যখন কেউ তোমাদেরকে সালাম করে, তখন তোমরা (তাকে) তদপেক্ষাও উত্তমরূপে সালাম দিয়ো কিংবা (অন্ততপক্ষে) সেই শব্দেই তার জবাব দিয়ো। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছুর হিসাব রাখেন। (সূরা নিসা: আয়াত নং ৮৬)

عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ . فَرَدَّ عَلَيْهِ السَّلاَمَ ثُمَّ جَلَسَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” عَشْرٌ ” . ثُمَّ جَاءَ آخَرُ فَقَالَ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ . فَرَدَّ عَلَيْهِ فَجَلَسَ فَقَالَ ” عِشْرُونَ ” . ثُمَّ جَاءَ آخَرُ فَقَالَ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ . فَرَدَّ عَلَيْهِ فَجَلَسَ فَقَالَ ” ثَلاَثُونَ

২.অর্থ: ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা একব্যক্তি নবী (ﷺ) এর কাছে এসে বলেন: আসসালামু আলাইকুম। নবী (ﷺ) তার সালামের জবাব দিলে সে ব্যক্তি বসে পড়েন। তখন নবী (ﷺ) বলেনঃ সে দশটি নেকী পেয়েছে। এরপর এক ব্যক্তি এসে বলেন: আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ। তিনি তার সালামের জবাব দিলে সে ব্যক্তি বসে পড়েন। তখন নবী (ﷺ) বলেনঃ সে বিশটি নেকী পেয়েছে। এরপর এক ব্যক্তি এসে বলেন: আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহু। নবী (ﷺ) তার সালামের জবাব দিলে সে বসে পড়েন। তখন তিনি বলেনঃ সে ত্রিশটি নেকী পেয়েছে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৫১৯৫ সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ২৬৮৯ হাদীসের মান: সহীহ)

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ لَهَا: «يَا عَائِشَةُ هَذَا جِبْرِيلُ يَقْرَأُ عَلَيْكِ السَّلاَمَ» ، فَقَالَتْ: وَعَلَيْهِ السَّلاَمُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ،

৩.অর্থ: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, একদা নবী (ﷺ) তাঁকে বললেন, হে আয়েশা! এই যে জিবরাঈল (আ.) তোমাকে সালাম দিচ্ছেন। তখন তিনি বললেন, অআলাইকুমুস সালাম ওয়ারহমাতুল্লহি ওয়াবারাকাতুহ। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩২১৭ সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ২৬৯৩ হাদীসের মান: সহীহ)

وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَابْ
উত্তর প্রদানে-মাহমুদুল হাসান।
শিক্ষার্থীঃ মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শায়েখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।

Share This Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *