রমযান মাসে ফজরের নামায কোন সময় আদায় করা উত্তম ?

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম। রমযান মাসে ফজরের নামায কোন সময় আদায় করা উত্তম দলিলসহ জানতে চাই ?

উত্তরঃ

وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ

রমযান মাস ছাড়া অন্যান্য মাসে ভোরের অন্ধকার ফর্সা করে ফজরের নামায পড়া উত্তম। কিন্তু রমযান মাসে ওয়াক্ত শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই ফজরের নামায পড়া উত্তম। এর কারণ হলো যাতে রোযাদাররা সেহেরী খেয়ে অনায়াসে ফজরের জামাতে শরীক হতে পারে। যদি অন্যান্য মাসের মতো রমযান মাসে ফজরের জামাত দেরি করে পড়া হয়। তাহলে কিছু মানুষ সেহেরী খেয়ে ঘরেই নামায পড়ে ঘুমিয়ে পড়বে। এই জন্য রোযাদারদের সুবিধার্থে ওয়াক্ত শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই ফজরের নামায পড়ে নেওয়া উত্তম। উল্লেখ্য রাসূল (ﷺ) এবং সাহাবায়ে কেরাম এমনটিই করেছেন।

عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: «كُنْتُ أَتَسَحَّرُ فِي أَهْلِي، ثُمَّ تَكُونُ سُرْعَتِي أَنْ أُدْرِكَ السُّجُودَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

১.অর্থ: সাহল ইবনে সা’দ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার পরিবার-পরিজনের মধ্যে সেহেরী খেতাম। এরপর রসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সঙ্গে নামাযে শরীক হওয়ার জন্য তাড়াতাড়ি করতাম। (সহীহ বুখারী হাদীস নং ১৯২০ হাদীসের মান: সহীহ)

عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، – رضى الله عنه – قَالَ تَسَحَّرْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ قُمْنَا إِلَى الصَّلاَةِ . قُلْتُ كَمْ كَانَ قَدْرُ مَا بَيْنَهُمَا قَالَ خَمْسِينَ آيَةً

২.অর্থ: যায়েদ ইবনে সাবেত (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, তারা নবী (ﷺ) এর সঙ্গে সেহরী খেয়েছেন, তারপর ফজরের নামাযে দাঁড়িয়েছেন। আনাস (রা.) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ দুইয়ের মাঝে কতটুকু সময়ের ব্যবধান ছিলো ? তিনি বললেন,পঞ্চাশ বা ষাট আয়াত তিলাওয়াত করা যায়, এরূপ সময়ের ব্যবধান ছিলো। (সহীহ বুখারী হাদীস নং ৫৭৫ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ১০৯৭ হাদীসের মান: সহীহ)

عَنْ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ” أَسْفِرُوا بِالْفَجْرِ فَإِنَّهُ أَعْظَمُ لِلأَجْرِ ”
৩.অর্থ: রাফে ইবনে খাদীজ (রা.) থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেন, আমি রাসূল (ﷺ) কে বলতে শুনেছি, তোমরা (রমযান মাস ছাড়া) ফজরের নামায (ভোরের অন্ধকার) ফর্সা করে আদায় করো। কেননা তাতে অনেক সওয়াব রয়েছে। (সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ১৫৪ সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৪২৪ হাদীসের মান: সহীহ)

মোদ্দাকথা রমযান মাসে ফজরের জামাত ওয়াক্ত শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই আরম্ভ করা উত্তম। কারণ এতে রোযাদাররা সহজেই ফজরের জামাতে শরীক হতে পারে এবং জামাতও বড় হয়। কিন্তু অন্যান্য মাসে একটু দেরিতে ফজরের জামাত শুরু করা উত্তম। যাতে মানুষের ঘুমের ঘাটতি পূরণ হয়ে যায় এবং অনায়াসে জামাতে শরীক হতে পারে।

وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- মো. মোশাররফ হোসাইন।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।

Share This Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *