প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম! মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাই। যোহরের ফরয নামাযে কোন কিরাত পড়া সুন্নত ? দলিলসহ জানালে খুশি হবো।
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
যোহরের ফরয নামাযে তিওয়ালে মুফাসসাল (লম্বা কিরাত) তথা সূরা হুজরত থেকে সূরা বুরুজ পর্যন্ত। অথবা আওসাতে মুফাসসাল (মধ্যম কিরাত) তথা সূরা তরিক থেকে সূরা বাইয়্যিনা পর্যন্ত। এর মধ্য থেকে যে কোন সূরা পাঠ করা সুন্নত। তবে উক্ত সূরাগুলো ব্যতীত মাঝে মধ্যে ভিন্ন সূরাও পড়া যায়।
فَاقۡرَءُوۡا مَا تَیَسَّرَ مِنَ الۡقُرۡاٰنِ ؕ
১.অর্থ: অতএব কুরআনের যতটুকু (পড়া তোমাদের জন্য) সহজ হয় ততটুকুই পড়ো। (সূরা মুযযাম্মিল: আয়াত নং ২০)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ مَا صَلَّيْتُ وَرَاءَ أَحَدٍ أَشْبَهَ صَلاَةً بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ فُلاَنٍ . قَالَ سُلَيْمَانُ كَانَ يُطِيلُ الرَّكْعَتَيْنِ الأُولَيَيْنِ مِنَ الظُّهْرِ وَيُخَفِّفُ الأُخْرَيَيْنِ
২.অর্থ: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নামাযের সাথে অমুকের চেয়ে সামঞ্জস্যপূর্ণ নামায আর কারও পেছনে আদায় করিনি। সূলাইমান (রা.) বলেন, তিনি যোহরের প্রথম দুই রাকাত লম্বা করতেন, শেষের দুই রাকাত সংক্ষিপ্ত করতেন। (সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ৯৮২ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُومُ فِي الظُّهْرِ فَيَقْرَأُ قَدْرَ ثَلاَثِينَ آيَةً فِي كُلِّ رَكْعَةٍ ثُمَّ يَقُومُ فِي الْعَصْرِ فِي الرَّكْعَتَيْنِ الأُولَيَيْنِ قَدْرَ خَمْسَ عَشْرَةَ آيَةً
৩.অর্থ: আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যোহরের নামাযে দাঁড়াতেন এবং প্রত্যেক রাকাতে ত্রিশ আয়াত পরিমাণ তিলাওয়াত করতেন এবং আসরের প্রথম দুই রাকাতে পনের আয়াত পরিমাণ তিলাওয়াত করতেন। (সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৪৫২ সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ৪৭৬ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ بِالسَّمَاءِ وَالطَّارِقِ وَالسَّمَاءِ ذَاتِ الْبُرُوجِ وَنَحْوِهِمَا مِنَ السُّوَرِ
৪.অর্থ: জাবের ইবনে সামুরা (রা.) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যোহর ও আসরের নামাযে সূরা “ওয়াস-সামাই ওয়াত-তরিক” এবং “ওয়াস-সামায়ি যাতিল-বুরূজ”-এর অনুরূপ সূরা পাঠ করতেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৮০৫ সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ৩০৭ হাদীসের মান: হাসান)
جَابِرَ بْنَ سَمُرَةَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليهو سلم إِذَا دَحَضَتِ الشَّمْسُ صَلَّى الظُّهْرَ وَقَرَأَ بِنَحْوِ مِنْ ( وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَى ) وَالْعَصْرَ كَذَلِكَ وَالصَّلَوَاتِ كَذَلِكَ إِلا الصُّبْحَ فَإِنَّهُ كَانَ يُطِيلُهَا
৫.অর্থ: জাবের ইবনে সামুরা (রা.) হতে বর্ণিত।
তিনি বলেন, যখন সূর্য পশ্চিম দিগন্তে হেলে পড়ত, তখন রসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যোহরের নামায পড়তেন এবং নামাযে সূরা “ওয়াল-লায়লি ইযা ইয়াগশা”-এর অনুরূপ সূরা পাঠ করতেন। তিনি আসর ও অন্যন্য নামাযে একইরূপ (দৈর্ঘ্যের সূরা) পাঠ করতেন। তবে ফজরের নামাযে তিনি লম্বা সূরা পাঠ করতেন। (সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৪৫৯ সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৮০৬ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ كُنَّا نُصَلِّي خَلْفَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الظُّهْرَ فَنَسْمَعُ مِنْهُ الآيَةَ بَعْدَ الآيَاتِ مِنْ سُورَةِ لُقْمَانَ وَالذَّارِيَاتِ
৬.অর্থ: বারা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবী (ﷺ) এর পেছনে যোহরের নামায
আদায় করতাম। তখন আমরা সূরা লোকমান এবং যারিয়াতের কোন কোন আয়াত শুনতে পেতাম। (সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস নং ৮৩০ সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ৯৭১ হাদীসের মান: হাসান)
উল্লেখ্য কখনো যদি নামাযের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয়। অথবা জামাতের মধ্যে কোন অসুস্থ, বৃদ্ধ ও দুর্বল লোক থাকে তাহলে সুন্নত কিরাত ছাড়া ভিন্ন সূরাও পাঠ করা যায়। তবে চেষ্টা করতে হবে এমন ভাবে কিরাত পড়তে যাতে কারো বিরক্তি না আসে এবং নামায সুন্নত মোতাবেক আদায় হয়ে যায়।
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply