প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম। শাইখের কাছে জানতে চাই যোহরের নামায মোট কয় রাকাত ? দলিলসহ জানালে উপকৃত হবো।
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
যোহরের নামায মোট ১২ রাকাত। প্রথমে ৪ রাকাত সুন্নত অতঃপর ৪ রাকাত ফরয, এরপর ২ রাকাত সুন্নত, তারপর ২ রাকাত নফল। এর মাঝে ফরযের পূর্বে চার রাকাত এবং ফরযের পরে দুই রাকাত হলো সুন্নতে মুয়াক্কাদা। যা প্রত্যেকের জন্য আদায় করা জরুরী এবং পরিত্যাগ করা গোনাহের কাজ। আর সর্বশেষ দুই রাকাত হলো নফল। যা আদায়ে সওয়াব রয়েছে কিন্তু পরিত্যাগ করলে গোনাহ নেই। কেউ চাইলে এই দুই রাকাত পড়তেও পারে আবার ছেড়েও দিতে পারে।
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ لاَ يَدَعُ أَرْبَعًا قَبْلَ الظُّهْرِ، وَرَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الغَدَاةِ
১.অর্থ: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, নবী (ﷺ) যোহরের পূর্বে চার রাকাত এবং ফজরের পূর্বে দুই রাকাত সুন্নত নামায কখনো ছাড়তেন না। (সহীহ বুখারী হাদীস নং ১১৮২ সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ১২৫৩ হাদীসের মান: সহীহ)
أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ فِي الأُولَيَيْنِ بِأُمِّ الكِتَابِ، وَسُورَتَيْنِ، وَفِي الرَّكْعَتَيْنِ الأُخْرَيَيْنِ بِأُمِّ الكِتَابِ
২.অর্থ: আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত: নবী (ﷺ) যোহরের (ফরয নামাযের) প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতেহা ও দুইটি সূরা পড়তেন এবং শেষ দুই রাকাতে শুধু সূরা ফাতেহা পাঠ করতেন। (সহীহ বুখারী হাদীস নং ৭৭৬ সুহীহ মুসলিম হাদীস নং ৪৫১ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ عَنْ صَلاَةِ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ تَطَوُّعِهِ فَقَالَتْ كَانَ يُصَلِّي فِي بَيْتِي قَبْلَ الظُّهْرِ أَرْبَعًا ثُمَّ يَخْرُجُ فَيُصَلِّي بِالنَّاسِ ثُمَّ يَدْخُلُ فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ
৩.অর্থ: আবদুল্লাহ ইবনে শাকীক (রহ.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন আমি আয়েশা (রা.) কে রসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নামায সর্ম্পকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, তিনি আমার ঘরে যোহরের (ফরয নামাযের) পূর্বে চার রাকাত নামায আদায় করতেন। অতঃপর বাইরে গিয়ে লোকদেরকে নিয়ে ফরয নামায আদায় করতেন। পুনরায় আমার ঘরে ফিরে এসে দুই রাকাত সুন্নত নামায আদায় করতেন। (সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৭৩০ সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ১২৫১ হাদীসের মান: সহীহ)
قَالَتْ أُمُّ حَبِيبَةَ زَوْجُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ حَافَظَ عَلَى أَرْبَعِ رَكَعَاتٍ قَبْلَ الظُّهْرِ وَأَرْبَعٍ بَعْدَهَا حَرُمَ عَلَى النَّارِ ”
৪.অর্থ: আনবাসা ইবনে আবু সুফিয়ান (রা.) থেকে বর্ণিত: রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি যোহরের ফরয নামাযেরর পূর্বে চার রাকাত (সুন্নতে মুয়াক্কাদা) এবং ফরযের পর চার রাকাত (দুই রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা এবং দুই রাকাত নফল) নামায নিয়মিত আদায় করবে, আল্লাহ্ তা’আলা তাকে জাহান্নামের আগুনের জন্য হারাম করে দেবেন। (সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ১২৬৯ সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ৪২৮ হাদীসের মান: সহীহ)
উক্ত আলোচনার দ্বারা স্পষ্ট হয়ে গেল যে, যোহরের নামায মোট বার রাকাত পড়া উত্তম। এই বার রাকাতের মধ্যে চার রাকাত হলো ফরয। আর ছয় রাকাত হলো সুন্নতে মুয়াক্কাদা। কেউ যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে সুন্নতে মুয়াক্কাদা ছেড়ে দেয় তাহলে সে গোনাহগার হবে। কারো প্রথম চার রাকাত সুন্নত ছুটে গেলে ফরয পরবর্তী সুন্নতের পর আদায় করে নিবে। যদি ওয়াক্ত না থাকে তাহলে আর এর কাযা আদায় করতে হবে না।
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর লিখনে- কাজী রফিকুর রহমান।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply