যে ইমামকে মুসল্লীরা শরঈ কোন কারণে অপছন্দ করে তার ইমামতি করার বিধান।

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম! যদি শরঈ কোন কারণে মুক্তাদীরা ইমামকে অপছন্দ করে তাহলে ইমাম সাহেবের ইমামতি করা কি ঠিক হবে ?

উত্তরঃ

وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ

যদি মুক্তাদীগণ বিদ’আত, পাপাচার,মূর্খতা কিংবা অন্য কোন শরঈ কারণে ইমামকে অপছন্দ করে। তাহলে তাদের ইমামতি করা তার জন্য মাকরূহে তাহরীমি হবে। পক্ষান্তরে ব্যক্তিগত কোন কারণে অথবা দুনিয়া সংক্রান্ত কোন বিষয় নিয়ে মুক্তাদীরা যদি ইমামকে অপছন্দ করে তাহলে ইমামতি করতে কোন অসুবিধা নেই।

قَالَ سَمِعْتُ أَبَا أُمَامَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” ثَلاَثَةٌ لاَ تُجَاوِزُ صَلاَتُهُمْ آذَانَهُمُ الْعَبْدُ الآبِقُ حَتَّى يَرْجِعَ وَامْرَأَةٌ بَاتَتْ وَزَوْجُهَا عَلَيْهَا سَاخِطٌ وَإِمَامُ قَوْمٍ وَهُمْ لَهُ كَارِهُونَ ”

১.অর্থ: আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তিন ব্যক্তির নামায তাদের কান অতিক্রম করে না (অর্থাৎ কবুল হয় না) ১.পলাতক ক্রীতদাস যতক্ষণ না সে (মালিকের কাছে) ফিরে আসে, ২. ঐ মহিলা যে তার স্বামীকে অসন্তুষ্ট রেখে রাত যাপন করলো, ৩. ঐ ইমাম যাকে তার মুসল্লীরা (শরঈ কোন কারণে) অপছন্দ করে। (সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ৩৬০ মিশকাতুল মাসাবীহ হাদীস নং ১১২২ হাদীসের মান: হাসান)

عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ بْنِ الْمُصْطَلِقِ، قَالَ كَانَ يُقَالُ أَشَدُّ النَّاسِ عَذَابًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ اثْنَانِ امْرَأَةٌ عَصَتْ زَوْجَهَا وَإِمَامُ قَوْمٍ وَهُمْ لَهُ كَارِهُونَ . قَالَ هَنَّادٌ قَالَ جَرِيرٌ قَالَ مَنْصُورٌ فَسَأَلْنَا عَنْ أَمْرِ الإِمَامِ فَقِيلَ لَنَا إِنَّمَا عَنَى بِهَذَا أَئِمَّةً ظَلَمَةً فَأَمَّا مَنْ أَقَامَ السُّنَّةَ فَإِنَّمَا الإِثْمُ عَلَى مَنْ كَرِهَهُ

২.অর্থ: আমর ইবনুল হারিস ইবনে মুসতালিক
(রহ.) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ বলা
হয়, সবচেয়ে কঠিন আযাব হবে দুই ব্যক্তির, স্বামীর অবাধ্যা স্ত্রীর এবং এমন ইমামের যাকে মুসল্লীরা অপছন্দ করে। রাবী মনসুর বলেনঃ ইমাম সম্পর্কে আমরা জিজ্ঞাসা করলে আমাদের বলা হল: যালিম বা অন্যায়চারী ইমামদের বেলায়ই উক্ত কথা প্রযোজ্য। কিন্তু যে ইমাম সুন্নত প্রতিষ্ঠা করেন, তাঁর ক্ষেত্রে তাকে অপছন্দকারী ব্যক্তির উপরই গোনাহ বর্তাবে। (সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ৩৫৯ হাদীসের মান: সহীহ)

উপরোক্ত হাদীস-সমূহ দ্বারা বোঝা গেল যে, যদি সকল মুক্তাদীগণ শরঈ কোন কারণে ইমামে উপর অসন্তুষ্ট থাকে তাহলে তার ইমামতি করা মাকরূহে তাহরীমি তথা নাজায়েয হবে। আর যদি ইমামের শরীয়ত বিরোধী কোন কিছু না হওয়া সত্ত্বেও মুক্তাদীরা তাকে অপছন্দ করে তাহলে যারা তাকে অপছন্দ করবে তারা গোনাহগার হবে। এমতাবস্থায় তার জন্য ইমামতি করতে কোন সমস্যা নেই ।

وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর লিখনে- মুহাম্মদ নোমান।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।

Share This Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *