মাগরিবের নামায কোন সময় আদায় করা উত্তম ?

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় শায়েখ মাগরিবের নামায কোন সময় আদায় করা উত্তম ? মেহেরবানী করে দ্রুত জানাবেন।

উত্তরঃ

وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ

মাগরিব নামায ওয়াক্ত হওয়ার সাথে সাথে পড়া উত্তম। কিন্তু রমযান মাসে একটু দেরি করে পড়া ভালো। যাতে আগে ইফতার করে নেয়া যায়,কারণ আগে ইফতার করতে পারলে নামায একাগ্রতার সাথে হয়। কিন্তু অন্য সময় দেরি করে পড়া মাকরূহ। তবে সূর্যাস্তের পর নামাযের প্রস্তুতি জন্য পাঁচ সাত মিনিট বিলম্ব করলে মাকরূহ হবে না।

عَنْ سَلَمَةَ، قَالَ: «كُنَّا نُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المَغْرِبَ إِذَا تَوَارَتْ بِالحِجَابِ»

১.অর্থ: সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, সূর্যাস্তের সাথে সাথেই আমরা নবী (ﷺ) এর সঙ্গে মাগরিবের নামায আদায় করতাম। (সহীহ বুখারী হাদীস নং ৫৬১ সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ৬৮৮ হাদীসের মান: সহীহ)

رَافِعَ بْنَ خَدِيجٍ، يَقُولُ كُنَّا نُصَلِّي الْمَغْرِبَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَيَنْصَرِفُ أَحَدُنَا وَإِنَّهُ لَيُبْصِرُ مَوَاقِعَ نَبْلِهِ‏.‏

২.অর্থ: রাফি ইবনে খাদীজ (রা.) বলেন, আমরা নবী (ﷺ) এর সঙ্গে মাগরিবের নামায আদায় করে এমন সময় ফিরে আসতাম যে, আমাদের কেউ (তীর নিক্ষেপ করলে) নিক্ষিপ্ত তীর পড়ার জায়গা দেখতে পেতো। (সহীহ বুখারী হাদীস নং ৫৫৯ সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস নং ৬৮৭ হাদীসের মান: সহীহ)

حَدَّثَنَا ثَابِتٌ الْبُنَانِيُّ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُفْطِرُ عَلَى رُطَبَاتٍ قَبْلَ أَنْ يُصَلِّيَ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ رُطَبَاتٌ فَعَلَى تَمَرَاتٍ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ حَسَا حَسَوَاتٍ مِنْ مَاءٍ

৩.অর্থ: সাবিত আল বানানী (রহ.) আনাস ইবনে মালেক (রা.)-কে বলতে শুনেছেন, রসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মাগরিবের নামায আদায়ের পূর্বে পাকা খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন। আর যদি পাকা খেজুর না পেতেন, তখন তিনি শুকনা খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন। আর যদি তাও না হতো, তখন তিনি কয়েক ঢোক পানি দ্বারা ইফতার করতেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ২৩৫৬ সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ৬৯৬ হাদীসের মান: হাসান)

عَنْ مَرْثَدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ لَمَّا قَدِمَ عَلَيْنَا أَبُو أَيُّوبَ غَازِيًا وَعُقْبَةُ بْنُ عَامِرٍ يَوْمَئِذٍ عَلَى مِصْرَ فَأَخَّرَ الْمَغْرِبَ فَقَامَ إِلَيْهِ أَبُو أَيُّوبَ فَقَالَ لَهُ مَا هَذِهِ الصَّلاَةُ يَا عُقْبَةُ فَقَالَ شُغِلْنَا ‏.‏ قَالَ أَمَا سَمِعْتَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ لاَ تَزَالُ أُمَّتِي بِخَيْرٍ – أَوْ قَالَ عَلَى الْفِطْرَةِ -مَا لَمْ يُؤَخِّرُوا الْمَغْرِبَ إِلَى أَنْ تَشْتَبِكَ النُّجُومُ‏ ‏.‏

৪.অর্থ: মারসাদ ইবনে আবদুল্লাহ (রহ.) বলেন, যখন আবু আইউব (রা.) জিহাদ হতে ফিরে আমাদের নিকট আসলেন, সে সময় উকবা ইবনে আমির (রা.) মিশরের শাসনকর্তা ছিলেন। তিনি মাগরিবের নামায আদায়ে বিলম্ব করলে আবূ আইউব (রা.) উকবা (রা.)-এর সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, হে উকবা! এটা আবার কেমন নামায ? উকবা (রা.) বললেন, আমরা কাজে ব্যস্ত ছিলাম। তিনি বললেন, আপনি কি রসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেননি, আমার উম্মত ততদিন কল্যাণের মধ্যে থাকবে অথবা মূল অবস্থায় থাকবে যতদিন তারা মাগরিবের নামায আদায়ে তারকা উজ্জ্বল হওয়া পর্যন্ত বিলম্ব করবে না। (সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৪১৮ হাদীসের মান: হাসান)

মোদ্দকথা সূর্যাস্তের পর থেকে মাগরিবের সময় শুরু হয় এবং পশ্চিম আকাশে যতক্ষণ লালিমা বিদ্যমান থাকে ততক্ষণ মাগরিবের সময় থাকে। এ সময়ের মধ্যে মাগরিবের নামায আদায় করে নিলে নামায আদায় হয়ে যাবে। তবে মাগরিবের নামায বিলম্ব না করে ওয়াক্ত আসার সাথে সাথেই আদায় করে নেওয়া উত্তম।

وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- মুহা.সাঈদ আব্দুল্লাহ।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।

Share This Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *