প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম। মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাই। মসজিদে আযান হওয়ার আগে কি নামায পড়া যাবে ? দলিলসহ জানালে উপকৃত হবো।
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
মসজিদে আযান দেওয়ার আগে নামায পড়া যাবে যদি নামাযের ওয়াক্ত হয়। কেননা নামায সহীহ হওয়ার জন্য আযান শর্ত নয় বরং ওয়াক্ত হওয়া শর্ত। অনেকে মসজিদে এসে শুধু এই মনে করে বসে থাকে যে, এখনো তো আযান হয়নি, নামায কীভাবে পড়ব ? অথচ নামাযের ওয়াক্ত হওয়ার পর আযান না হলেও সুন্নত নফল পড়তে কোনো অসুবিধা নেই। অতএব নামাযের ওয়াক্ত হওয়ার বিষয়টি সুনিশ্চিত ভাবে জানা থাকলে মসজিদে আযান না হলেও নামায পড়তে পারবে৷ তবে জামাতের নামাযের জন্য আযান দেওয়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা।
اِنَّ الصَّلٰوۃَ کَانَتۡ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ کِتٰبًا مَّوۡقُوۡتًا
১.অর্থ: নিশ্চয় নামায মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয। (সূরা নিসা: আয়াত নং ১০৩)
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي الصَّلَاةَ لِوَقْتِهَا
২.অর্থ: আব্দুল্লাহ্ (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সকল নামাযই সময় মত আদায় করতেন। (সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং ৩০১০ হাদীসের মান: সহীহ)
إِنَّ أَبَا قَتَادَةَ بْنَ رِبْعِيٍّ أَخْبَرَهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” قَالَ اللَّهُ تَعَالَى إِنِّي فَرَضْتُ عَلَى أُمَّتِكَ خَمْسَ صَلَوَاتٍ وَعَهِدْتُ عِنْدِي عَهْدًا أَنَّهُ مَنْ جَاءَ يُحَافِظُ عَلَيْهِنَّ لِوَقْتِهِنَّ أَدْخَلْتُهُ الْجَنَّةَ وَمَنْ لَمْ يُحَافِظْ عَلَيْهِنَّ فَلاَ عَهْدَ لَهُ عِنْدِي ”
৩.অর্থ: আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, নিশ্চয় আমি তোমার উম্মতের উপর পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছি। আর আমি আমার পক্ষ হতে এই মর্মে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, যে ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময়ে সেই পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করবে। আমি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবো। আর যে ব্যক্তি সেগুলো সময়মত আদায় করবে না তার জন্য আমার পক্ষ হতে কোন প্রতিশ্রুতি নেই। (সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৪৩০ সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস নং ১৪০৩ হাদীসের মান: হাসান)
উল্লেখিত কুরআনের আয়াত ও হাদীসগুলো দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, মসজিদে আযান দেওয়ার পূর্বে যদি নামাযের ওয়াক্ত হয়ে যায় তাহলে নামায পড়া যাবে। কারণ নামাযের জন্য ওয়াক্তকে শর্ত করা হয়েছে আযানকে নয় ৷ তবে ওয়াক্ত হয়ে যাওয়ার পর শুধু আযান হয়নি এই অজুহাতে নফল কিংবা সুন্নত পড়া থেকে বিরত থাকা ঠিক নয়। অবশ্য কারো যদি নামাযের ওয়াক্ত জানা না থাকে তাহলে সে আযানের অপেক্ষা করতে পারবে।
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর লিখনে: আব্দুর রকিব।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply