প্রশ্নঃ আসসালামু আলাইকুম! মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাই। স্বামী বিদেশে থাকা অবস্থায় স্ত্রীকে তালাক দিলে স্ত্রীর কি ইদ্দত পালন করতে হবে ?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
স্বামী দেশে বা বিদেশে যেখানেই অবস্থান করুক যদি সে তার স্ত্রীকে তালাক দেয়। তাহলে স্ত্রীর জন্য ইদ্দত পালন করা ওয়াজিব। স্ত্রী যদি গর্ভবতী না হয় তাহলে ইদ্দত পালন করার সময় শুরু হবে, তালাক সম্পন্ন হওয়ার পরবর্তী সময় থেকে তিনটি ঋতুস্রাব পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত। আর যদি স্ত্রী গর্ভবতী হয় তাহলে তার ইদ্দতের সময় শুরু হবে, তালাক প্রদান করার পর থেকে সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত। যদি স্ত্রীর বয়স কম হওয়ার কারণে কিংবা বৃদ্ধ হওয়ার কারণে ঋতুস্রাব না হয়। তাহলে তিন ঋতুস্রাবের পরিবর্তে পূর্ণ তিন মাস ইদ্দত পালন করতে হবে। বিবাহের পরে সহবাসের পূর্বেই যদি তালাক দেওয়া হয় তাহলে ইদ্দত পালন করতে হবে না। ইদ্দত পালনরত অবস্থায় স্ত্রীর জন্য অন্য কারো সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া হারাম। ইদ্দতের সময়ে স্বামীকেই স্ত্রীর ভরণপোষণ এবং বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
وَالْمُطَلَّقَاتُ يَتَرَبَّصْنَ بِأَنفُسِهِنَّ ثَلَاثَةَ قُرُوءٍ
১.অর্থ: আর তালাকপ্রাপ্ত নারী (পুনরায় বিবাহ দেওয়া থেকে) নিজেকে অপেক্ষায় রাখবে তিন ঋতুস্রাব পর্যন্ত। (সূরা বাকারা: আয়াত নং ২২৮)
وَاللَّائِي يَئِسْنَ مِنَ الْمَحِيضِ مِن نِّسَائِكُمْ إِنِ ارْتَبْتُمْ فَعِدَّتُهُنَّ ثَلَاثَةُ أَشْهُرٍ وَاللَّائِي لَمْ يَحِضْنَ ؕ وَأُولَاتُ الْأَحْمَالِ أَجَلُهُنَّ أَن يَضَعْنَ حَمْلَهُنَّ
২.অর্থ: তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের ঋতুবর্তী হওয়ার আশা নেই, তাদের (ইদ্দতের) ব্যাপারে সন্দেহ হলে তাদের ইদ্দত হবে তিন মাস। আর যারা এখনও ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি, তাদেরও অনুরূপ ইদ্দতকাল হবে। গর্ভবর্তী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। (সূরা তলাক: আয়াত নং ৪)
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نَكَحْتُمُ الْمُؤْمِنَاتِ ثُمَّ طَلَّقْتُمُوهُنَّ مِن قَبْلِ أَن تَمَسُّوهُنَّ فَمَا لَكُمْ عَلَيْهِنَّ مِنْ عِدَّةٍ تَعْتَدُّونَهَا
৩.অর্থ: হে মুমিনগণ! তোমরা মুমিন নারীদেরকে বিবাহ করার পর তাদেরকে স্পর্শ করার আগেই তালাক দিলে তোমাদের জন্য তাদের উপর কোন ইদ্দত ওয়াজিব নয়। যা তোমাদেরকে গণনা করতে হবে। (সূরা আহ্যাব: আয়াত নং ৪৯)
اَسۡکِنُوۡہُنَّ مِنۡ حَیۡثُ سَکَنۡتُمۡ مِّنۡ وُّجۡدِکُمۡ وَلَا تُضَآرُّوۡہُنَّ لِتُضَیِّقُوۡا عَلَیۡہِنَّ ؕ وَاِنۡ کُنَّ اُولَاتِ حَمۡلٍ فَاَنۡفِقُوۡا عَلَیۡہِنَّ حَتّٰی یَضَعۡنَ حَمۡلَہُنَّ ۚ فَاِنۡ اَرۡضَعۡنَ لَکُمۡ فَاٰتُوۡہُنَّ اُجُوۡرَہُنَّ ۚ وَاۡتَمِرُوۡا بَیۡنَکُمۡ بِمَعۡرُوۡفٍ ۚ وَاِنۡ تَعَاسَرۡتُمۡ فَسَتُرۡضِعُ لَہٗۤ اُخۡرٰی ؕ
৪.অর্থ: তোমরা (ইদ্দতের সময়ে) তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাদেরকে সেই স্থানে বাস করতে দাও, যেখানে তোমরা নিজেরা বাস করো। তাদেরকে সংকটে ফেলার জন্য কষ্ট দিও না। তারা গর্ভবতী হলে তাদের জন্য ব্যয় করতে থাক, যতক্ষণ না তারা সন্তান প্রসব করে। তারপর তারা যদি তোমাদের জন্য শিশুদের দুধ পান করায়, তবে তাদেরকে তাদের পারিশ্রমিক দিও। আর (পারিশ্রমিক নির্ধারণের জন্য) উত্তম পন্থায় নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে নিও। তোমরা যদি একে অন্যের জন্য সংকট সৃষ্টি করো, তবে অন্য কোন নারী তাকে দুধ পান করাবে। (সূরা তলাক: আয়াত নং ৬)
لِیُنۡفِقۡ ذُوۡ سَعَۃٍ مِّنۡ سَعَتِہٖ ؕ وَمَنۡ قُدِرَ عَلَیۡہِ رِزۡقُہٗ فَلۡیُنۡفِقۡ
مِمَّاۤ اٰتٰىہُ اللّٰہُ ؕ لَا یُکَلِّفُ اللّٰہُ نَفۡسًا اِلَّا مَاۤ اٰتٰىہَا ؕ سَیَجۡعَلُ اللّٰہُ بَعۡدَ عُسۡرٍ یُّسۡرًا
৫.অর্থ: প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তি (ইদ্দতকালে) নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী খরচা দেবে আর যার জীবিকা সংকীর্ণ করে দেওয়া হয়েছে (অর্থাৎ যে গরীব) সে আল্লাহ তাকে যা দিয়েছেন তা থেকে খরচা দেবে। আল্লাহ যাকে যতটুকু দিয়েছেন তার বেশি ভার তার উপর অর্পণ করেন না। আল্লাহ কষ্টের পর সুখ দেবেন। (সূরা তলাক: আয়াত নং ৭)
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শায়েখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply