প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম। বিতের নামায কোন সময় আদায় করা উত্তম ? ইশার নামাযের পর নাকি তাহাজ্জুদ নামাযের পর ?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
বিতের নামাযের ওয়াক্ত ইশার নামাযের পরেই শুরু হয় এবং ফজর নামাযের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত থাকে। এই সময়ের মধ্যে যে কোন সময় বিতের নামায পড়া যায়। তবে যে ব্যক্তির শেষ রাতে জাগ্রত হওয়ার অভ্যাস আছে অথবা দৃঢ় বিশ্বাস আছে সে শেষ রাতে জাগ্রত হতে পারবে। তার জন্য শেষ রাতে তাহাজ্জুদের পর বিতের পড়া উত্তম। আর যে ব্যক্তির শেষ রাতে জাগ্রত হওয়ার অভ্যাস নেই অথবা দৃঢ় বিশ্বাস নেই। তার জন্য ইশার নামাযের পরেই বিতের পড়ে নেওয়া উত্তম। যদি কেউ প্রথম রাতে বিতের আদায় করে ঘুমিয়ে যায়। এরপর শেষ রাতে উঠে, তাহলে সে যত পরিমাণ ইচ্ছা তাহাজ্জুদ নামায পড়তে পারবে। কিন্তু দ্বিতীয়বার বিতের নামায পড়তে পারবে না। কারণ আগের বিতের নামাযই তার জন্য যথেষ্ট হবে।
عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ خَافَ أَنْ لاَ يَقُومَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ فَلْيُوتِرْ أَوَّلَهُ وَمَنْ طَمِعَ أَنْ يَقُومَ آخِرَهُ فَلْيُوتِرْ آخِرَ اللَّيْلِ فَإِنَّ صَلاَةَ آخِرِ اللَّيْلِ مَشْهُودَةٌ وَذَلِكَ أَفْضَلُ ”
১.অর্থ: জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যার আশঙ্কা থাকে যে, শেষ রাতে সে উঠতে পারবে না সে যেন প্রথম রাতেই বিতের আদায় করে নেয়। আর যে ব্যক্তি শেষ রাতে উঠতে পারবে বলে আশা রাখে সে যেন রাতের শেষ ভাগে বিতের আদায় করে। কেননা শেষ রাতের নামাযে রহমতের ফিরেশতার উপস্থিতির কাল এবং তাই উত্তম। (সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৭৫৫ সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস নং ১১৮৭ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، قَالَ مَنْ صَلَّى مِنَ اللَّيْلِ فَلْيَجْعَلْ آخِرَ صَلاَتِهِ وِتْرًا فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْمُرُ بِذَلِكَ
২.অর্থ: ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি রাতে (তাহাজ্জুদ) নামায আদায় করে সে যেন বিতেরকে তার শেষ নামায বানায়। কেননা, রসূলুল্লাহ (ﷺ) এ আদেশ করতেন। (সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৭৫১ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ مَسْرُوقٍ، أَنَّهُ سَأَلَ عَائِشَةَ عَنْ وِتْرِ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ مِنْ كُلِّ اللَّيْلِ قَدْ أَوْتَرَ أَوَّلِهِ وَأَوْسَطِهِ وَآخِرِهِ فَانْتَهَى وِتْرُهُ حِينَ مَاتَ إِلَى السَّحَرِ
৩.অর্থ: মাসরূক (রহ.) থেকে বর্ণিত যে, তিনি আয়েশা (রা.)-কে রাসূল (ﷺ)-এর বিতের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেছিলেনঃ রাতের শুরু, মাঝে, শেষে সব ভাগেই তিনি বিতের আদায় করেছেন। শেষে মৃত্যুর আগে আগে তিনি সাহরীর সময় বিতের আদায় করতেন। (সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ৪৫৬ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ قَيْسِ بْنِ طَلْقِ بْنِ عَلِيٍّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ لاَ وِتْرَانِ فِي لَيْلَةٍ
৪.অর্থ: তালক ইবনে আলী (রা.) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেনঃ আমি রাসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি যে, এক রাতে দুইবার বিতের নেই। (সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ৪৭০ হাদীসের মান: সহীহ)
উক্ত হাদীসগুলোর আলোকে আমরা জানতে পারলাম যে, কারো যদি পরিপূর্ণ আস্থা থাকে সে শেষ রাতে বিতের নামায পড়তে পারবে। তাহলে তার জন্য রাতের শেষ ভাগে আদায় করাই উত্তম। কিন্তু পরিপূর্ণ আস্থা না থাকলে ইশার নামাযের পরেই বিতের আদায় করে নেওয়া উত্তম।
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- অলিউর রহমান।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply