প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম! ছোট বেলা থেকে ফরয গোসলের নানা নিয়ম বিভিন্ন বই পুস্তকে পড়েছি এবং মানুষের মুখে শুনেছি। কোনটা সঠিক আর কোনটা বেঠিক বুঝতে পারছিনা। অনুগ্রহ করে ফরয গোসলের সঠিক নিয়মটা জানালে অনেক উপকার হতো।
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
আল্লাহ তা’আলার বিধান সমূহের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান হচ্ছে, ফরয গোসল। কারো উপর গোসল ফরয হলে সঠিক পদ্ধতিতে গোসল না করা পর্যন্ত ওই ব্যক্তি নাপাক থাকে। যদি সঠিক নিয়ম না মেনে এক সাগর পানি দিয়েও গোসল করা হয় এরপরেও ফরয গোসল আদায় হবে না। সুতরাং গোসল ফরয হলে সঠিক নিয়মে গোসল করা অত্যন্ত জরুরী। নিম্মে ফরয গোসলের সঠিক পদ্ধতি আলোকপাত করা হলোঃ-
১. প্রথমে গোসলের নিয়ত করা।
وَ مَاۤ اُمِرُوۡۤا اِلَّا لِیَعۡبُدُوا اللّٰہَ مُخۡلِصِیۡنَ لَہُ الدِّیۡنَ
অর্থ: আর তাদেরকে এই নির্দেশ দেয়া হয়েছিল
যে, তারা যেন আল্লাহর আনুগত্যে খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদাত করে। (সূরা বায়্যিনা: আয়াত নং ৫)
عَلْقَمَةَ بْنَ وَقَّاصٍ اللَّيْثِيَّ، يَقُولُ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رضى الله عنه ـ عَلَى الْمِنْبَرِ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى
অর্থ: আলকামা ইবনে ওয়াক্কাস আল-লায়সী (রহ.) থেকে বর্ণিত, আমি উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) কে মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছিঃ আমি রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি, প্রত্যেক কাজ নিয়তের সাথে সম্পর্কিত। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী ফল পাবে। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ১ হাদীসের মান: সহীহ)
২.তারপর পৃথকভাবে দুই হাত কব্জিসহ ধোয়া।
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا اغْتَسَلَ مِنَ الْجَنَابَةِ غَسَلَ يَدَهُ.
অর্থ: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানবাতের গোসল করার সময় প্রথমে (উভয়) হাত (কব্জিসহ) ধুয়ে নিতেন। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ২৬০ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৬১৩ হাদীসের মান: সহীহ)
৩.শরীর বা কাপড়ের কোন স্থানে নাপাকি লেগে থাকলে তা বাম হাত দ্বারা ধোয়া এবং লজ্জাস্থানে নাপাকি লেগে থাকুক বা না থাকুক সর্ব অবস্থায় ধোয়া।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ حَدَّثَتْنِي خَالَتِي، مَيْمُونَةُ قَالَتْ أَدْنَيْتُ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم غُسْلَهُ مِنَ الْجَنَابَةِ فَغَسَلَ كَفَّيْهِ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا ثُمَّ أَدْخَلَ يَدَهُ فِي الإِنَاءِ ثُمَّ أَفْرَغَ بِهِ عَلَى فَرْجِهِ وَغَسَلَهُ بِشِمَالِهِ ثُمَّ ضَرَبَ بِشِمَالِهِ الأَرْضَ فَدَلَكَهَا دَلْكًا شَدِيدًا
অর্থ: ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার খালা মায়মুনা (রা.) আমার নিকট বর্ণনা করেন যে, আমি একবার রাসূল (সা.) কে জানবাত থেকে গোসলের জন্য পানি এগিয়ে দিলাম। তিনি উভয় হাতের কব্জি পর্যন্ত দুইবার অথবা তিনবার ধুলেন। তারপর উভয় হাত পাত্রের মধ্যে ঢুকালেন তারপর লজ্জাস্থানে পানি ঢেলে দিলেন এবং বাম হাত দিয়ে তা ধুয়ে ফেললেন। তারপর তাঁর বাম হাত ভাল করে ঘষলেন। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ২৪৭ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৬১৫ হাদীসের মান: সহীহ)
৪.তারপর বাম হাতকে মাটি অথবা সাবান দ্বারা ধোয়া।
قَالَتْ مَيْمُونَةُ وَضَعْتُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم غُسْلاً، فَسَتَرْتُهُ بِثَوْبٍ، وَصَبَّ عَلَى يَدَيْهِ فَغَسَلَهُمَا، ثُمَّ صَبَّ بِيَمِينِهِ عَلَى شِمَالِهِ، فَغَسَلَ فَرْجَهُ، فَضَرَبَ بِيَدِهِ الأَرْضَ فَمَسَحَهَا، ثُمَّ غَسَلَهَا
অর্থ: মায়মুনা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী (সা.) এর জন্য গোসলের পানি রাখলাম এবং কাপড় দিয়ে পর্দা করে দিলাম। তিনি দুই হাতের উপর পানি ঢেলে উভয় হাত ধুয়ে নিলেন। তারপর ডান হাত দিয়ে বাম হাতে পানি ঢেলে লজ্জাস্থান ধুলেন। পরে হাতে মাটি লাগিয়ে ঘষে নিলেন এবং ধুয়ে ফেললেন। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ২৭৩ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৬১৫ হাদীসের মান: সহীহ)
৫.অতঃপর নামাযের অযুর ন্যায় অযু করা। তবে গোসলের স্থান পরিষ্কার না হলে কিংবা পানি জমে থাকলে গোসল শেষ করে পা ধোয়া।
عَنْ مَيْمُونَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَتْ تَوَضَّأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وُضُوءَهُ لِلصَّلاَةِ غَيْرَ رِجْلَيْهِ، وَغَسَلَ فَرْجَهُ، وَمَا أَصَابَهُ مِنَ الأَذَى، ثُمَّ أَفَاضَ عَلَيْهِ الْمَاءَ، ثُمَّ نَحَّى رِجْلَيْهِ فَغَسَلَهُمَا، هَذِهِ غُسْلُهُ مِنَ الْجَنَابَةِ
অর্থ: মায়মুনা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযের অযুর ন্যায় অযু করলেন, অবশ্য পা দুটো ছাড়া এবং তাঁর লজ্জাস্থান ও যে যে স্থানে নাপাক লেগেছে তা ধুয়ে নিলেন। তারপর নিজের উপর পানি ঢেলে দেন। তারপর সেখান থেকেসরে গিয়ে পা দুটো ধুয়ে নেন। এই ছিল তাঁর জানাবাতের গোসল। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ২৪৭ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৬১১ হাদীসের মান: সহীহ)
৬. এরপর মাথায় তিনবার পানি ঢেলে চুলগুলো ভাল করে ধোয়া। যাতে সমস্ত চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছে যায়।
حَدَّثَنِي أَبُو جَعْفَرٍ، قَالَ قَالَ لِي جَابِرٌ أَتَانِي ابْنُ عَمِّكَ يُعَرِّضُ بِالْحَسَنِ بْنِ مُحَمَّدٍ ابْنِ الْحَنَفِيَّةِ قَالَ كَيْفَ الْغُسْلُ مِنَ الْجَنَابَةِ فَقُلْتُ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَأْخُذُ ثَلاَثَةَ أَكُفٍّ وَيُفِيضُهَا عَلَى رَأْسِهِ
অর্থ: আবু জাফর (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাকে জাবের (রা.) বলেছেন, আমার কাছে তোমার চাচাত ভাই অর্থাৎ হাসান ইবনে মুহাম্মদ
ইবনে হানাফিয়্যা এসেছিলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, জানবাতের গোসল কিভাবে করতে হয়? আমি বললাম, নবী (সা.) তিন আঁজলা পানি নিতেন এবং নিজের মাথার উপর ঢেলে দিতেন। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ২৫৪ হাদীসের মান: সহীহ)
ثَوْبَانَ، حَدَّثَهُمْ أَنَّهُمُ، اسْتَفْتَوُا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ “ أَمَّا الرَّجُلُ فَلْيَنْشُرْ رَأْسَهُ فَلْيَغْسِلْهُ حَتَّى يَبْلُغَ أُصُولَ الشَّعْرِ وَأَمَّا الْمَرْأَةُ فَلاَ عَلَيْهَا أَنْ لاَ تَنْقُضَهُ لِتَغْرِفْ عَلَى رَأْسِهَا ثَلاَثَ غَرَفَاتٍ بِكَفَّيْهَا
অর্থ: ছাওবান (রা.) তাদের নিকট বর্ণনা করেছেন, একদা তাঁরা অপবিত্রতার গোসল সম্পর্কে নবী (সা.) কে জিজ্ঞাসা করেন। তিনি বলেন, পুরুষ লোক অপবিত্রতার গোসলের সময় এমনভাবে চুল ছেড়ে দিয়ে গোসল করবে যেন তার প্রতিটি চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছে। অপরপক্ষে মহিলাদের জন্য গোসলের সময় চুল ছেড়ে দেয়ার প্রয়োজন নেই। তারা অপিবত্রতার গোসলের সময় উভয় হাতে তিনবার তিন কোষ পানি মাথার উপর ঢালবে। (ইফা. সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ২৫৫ হাদীসের মান: সহীহ)
৭. মহিলাদের চুলে বেণী বাঁধা থাকলে তা খুলা জরুরী নয়। বরং সম্পূর্ণ মাথায় চুলের গোড়া পর্যন্ত তিনবার পানি পৌঁছে দেয়াই যথেষ্ট।
عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي امْرَأَةٌ أَشُدُّ ضَفْرَ رَأْسِي فَأَنْقُضُهُ لِغُسْلِ الْجَنَابَةِ قَالَ “ لاَ إِنَّمَا يَكْفِيكِ أَنْ تَحْثِي عَلَى رَأْسِكِ ثَلاَثَ حَثَيَاتٍ ثُمَّ تُفِيضِينَ عَلَيْكِ الْمَاءَ فَتَطْهُرِينَ
অর্থ: উম্মে সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, একবার আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার মাথার বেনী তো খুবই মোটা এবং শক্ত।
আমি কি জানাবাতের গোসলের জন্য তা খুলে ফেলবো ? তিনি বললেন, না, তোমার মাথায় কেবল তিন আজলা পানি ঢেলে দিলেই চলবে। এরপর তোমার সারা শরীরে পানি ঢেলে দিবে। এ ভাবেই তুমি পবিত্রতা অর্জন করবে। (ইফা. সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৬৩৭ সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ১০৫ হাদীসের মান: সহীহ)
৮. তারপর ডান কাঁধে তিনবার পানি ঢালা।
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كُنَّا إِذَا أَصَابَتْ إِحْدَانَا جَنَابَةٌ، أَخَذَتْ بِيَدَيْهَا ثَلاَثًا فَوْقَ رَأْسِهَا، ثُمَّ تَأْخُذُ بِيَدِهَا عَلَى شِقِّهَا الأَيْمَنِ، وَبِيَدِهَا الأُخْرَى عَلَى شِقِّهَا الأَيْسَرِ
অর্থ: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাদের কারও জানবাতের গোসলের প্রয়োজন হলে সে দুই হাতে পনি নিয়ে তিনবার মাথায় ঢালত। পরে হাতে পানি নিয়ে ডান পাশে তিনবার এবং আবার হাতে পানি নিয়ে বাম পাশে তিনবার ঢালত। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ২৭৪ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৬১৮ হাদীসের মান: সহীহ)
৯. এরপর বাম কাঁধে তিনবার পানি ঢালা।
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا اغْتَسَلَ مِنَ الْجَنَابَةِ دَعَا بِشَىْءٍ نَحْوَ الْحِلاَبِ فَأَخَذَ بِكَفِّهِ بَدَأَ بِشِقِّ رَأْسِهِ الأَيْمَنِ ثُمَّ الأَيْسَرِ ثُمَّ أَخَذَ بِكَفَّيْهِ فَقَالَ بِهِمَا عَلَى رَأْسِهِ .
অর্থ: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) যখন জানবাত থেকে গোসল করতেন তখন হিলাব (দুধ দোহন করার পাত্র) এর ন্যায় একটি পানির পাত্র চেয়ে নিতেন। অতঃপর তা হাত দিয়ে ধরে প্রথমে মাথার ডান দিকে ঢালতেন তারপর বাম দিক। (ইফা. সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৬১৮ সহীহ বুখারী হাদীস নং ২৭৪ হাদীসের মান: সহীহ)
১০. অতঃপর অবশিষ্ট শরীর ভিজানো।
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا اغْتَسَلَ مِنَ الْجَنَابَةِ غَسَلَ يَدَيْهِ، وَتَوَضَّأَ وُضُوءَهُ لِلصَّلاَةِ ثُمَّ اغْتَسَلَ، ثُمَّ يُخَلِّلُ بِيَدِهِ شَعَرَهُ، حَتَّى إِذَا ظَنَّ أَنْ قَدْ أَرْوَى بَشَرَتَهُ، أَفَاضَ عَلَيْهِ الْمَاءَ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ، ثُمَّ غَسَلَ سَائِرَ جَسَدِهِ
অর্থ: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূল (সা.) যখন জানাবতের গোসল করতেন,
তখন তিনি দুই হাত ধুতেন এবং নামাযের অযু ন্যায় অযু করতেন। তারপর গোসল করতেন। পরে তাঁর হাত দিয়ে চুল খিলাল করতেন। চামড়া ভিজেছে বলে যখন তিনি নিশ্চিত হতেন, তখন তাতে তিনবার পানি ঢালতেন। তারপর সমস্ত শরীর ধুয়ে ফেলতেন। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ২৭০ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৬১১ হাদীসের মান: সহীহ)
উপরোক্ত কুরআন ও হাদীসের আলোকে আমরা ফরয গোসলের সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি জানতে পারলাম। আর জায়েয পদ্ধতি হলো শুধু কুলি করা, নাকে পানি দেওয়া এবং সমস্ত শরীর ভালো করে ধৌত করা। এভাবে গোসল করলেও ফরয গোসল আদায় হয়ে যাবে তবে সুন্নতের খেলাপ হবে। (সূরা মায়েদা: আয়াত নং ৬, ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ২৭০ হাদীসের মান: সহীহ)
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- মিজানুর রহমান।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply