পিতা মাতা কি তার কোনো সন্তানকে ত্যাজ্য করতে পারে ?

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম! পিতা কি তার অবাধ্য কোনো সন্তানকে ত্যাজ্য করতে পারবে ? ইসলামী শরীয়তে এর বিধান কী ?

উত্তরঃ

وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَد

পিতা মাতার জন্য তার কোনো সন্তানকে ত্যাজ্য করা বা মৃত্যুর সময় অসিয়তের মাধ্যমে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হারাম। ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে কোনো পিতা মাতা এমনটি করলে তিনি আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার গোনাহগার হবেন। এতদসত্ত্বেও কেউ যদি তার কোনো সন্তানকে মৌখিক বা লিখিতভাবে ত্যাজ্য করেন। তাহলে ইসলামের বিধান অনুযায়ী তা বাস্তবায়িত হবে না। ফলে তার মৃত্যুর পর ঐ সন্তান যথানিয়মে সম্পদের ওয়ারিশ হবে। কারো সন্তান যদি পিতা মাতার অবাধ্য হয় কিংবা ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক না চলে। তাহলে মা বাবার উচিত হলো, তাকে মায়া মমতা, ভালোবাসা ও পরিমিত শাসন করে দ্বীনের পথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে। যদি কোনো ভাবেই সন্তানকে সংশোধন করা সম্ভব না হয়। কিংবা অন্যায় পথে সম্পত্তি ব্যয় করার আশংকা হয়। তাহলে মা বাবা তার মৌলিক প্রয়োজন অনুযায়ী সম্পদ দিবে।আর অবশিষ্ট সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান করে দিবে অথবা কোনো কল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করে দিবে।

یُوۡصِیۡکُمُ اللّٰہُ فِیۡۤ اَوۡلَادِکُمۡ ٭ لِلذَّکَرِ مِثۡلُ حَظِّ الۡاُنۡثَیَیۡنِ ۚ فَاِنۡ کُنَّ نِسَآءً فَوۡقَ اثۡنَتَیۡنِ فَلَہُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَکَ ۚ وَاِنۡ کَانَتۡ وَاحِدَۃً فَلَہَا النِّصۡفُ ؕ

১.অর্থ: আল্লাহ তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে তোমাদেরকে আদেশ করেন, একজন পুত্রের অংশ দুইজন কন্যার অংশের সমান। কিন্তু কন্যা যদি দুইয়ের অধিক হয়, তাহলে তাদের জন্য পরিত্যাক্ত সম্পত্তির তিন ভাগের দুই ভাগ। আর মাত্র এক কন্যা থাকলে তার জন্য অর্ধেক নির্ধারিত। (সূরা নিসা: আয়াত নং ১১)

أَنَّ مُحَمَّدَ بْنَ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، قَالَ: إِنَّ جُبَيْرَ بْنَ مُطْعِمٍ، أَخْبَرَهُ: أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لاَ يَدْخُلُ الجَنَّةَ قَاطِعٌ»

২.অর্থ: জুবাইর ইবনে মুতঈম (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি নবী (ﷺ) কে বলতে শুনেছেনঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৯৮৪ সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ১৬৯৬ হাদীসের মান: সহীহ)

وَلَا تُؤۡتُوا السُّفَہَآءَ اَمۡوَالَکُمُ الَّتِیۡ جَعَلَ اللّٰہُ لَکُمۡ قِیٰمًا وَّارۡزُقُوۡہُمۡ فِیۡہَا وَاکۡسُوۡہُمۡ وَقُوۡلُوۡا لَہُمۡ قَوۡلًا مَّعۡرُوۡفًا

৩.অর্থ: আর যে সম্পদকে আল্লাহ তোমাদের জীবন যাত্রার অবলম্বন করেছেন, তা নির্বোধ মালিকগণের হাতে তুলে দিও না। বরং তা থেকে তাদেরকে খাওয়াও, পরাও এবং তাদের সঙ্গে সদালাপ করবে। (সূরা নিসা: আয়াত নং ৫)

وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- ফুরকান আহমদ।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শায়েখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।

Share This Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *