প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম! পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে কিরাত উচ্চস্বরে ও নিম্নস্বরে পড়ার কি সহীহ দলিল আছে ?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
রাসূল (ﷺ) যোহর ও আসর নামাযে কিরাত নিম্নস্বরে এবং মাগরিব, ইশা ও ফজর নামাযে কিরাত উচ্চস্বরে পড়েছেন। এ বিষয়টি বহু সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। অতএব রাসূল (ﷺ) যেভাবে নামাযে কিরাত পড়েছেন আমাদের জন্যেও ঐ ভাবে নামাযে কিরাত পড়া আবশ্যক।
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «قَرَأَ فِي المَغْرِبِ بِالطُّورِ»
১.অর্থ: জুবাইর ইবনে মুতইম (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে মাগরিবের নামাযে সূরা তূর থেকে পড়তে শুনেছি। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭৬৫ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৪৬৩ হাদীসের মান: সহীহ)
سَمِعَ البَرَاءَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ” يَقْرَأُ: وَالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ فِي العِشَاءِ، وَمَا سَمِعْتُ أَحَدًا أَحْسَنَ صَوْتًا مِنْهُ أَوْ قِرَاءَةً ”
২.অর্থ: বারাআ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ) কে ইশার নামাযে অয়াত তীনি ওয়ায যায়তুন পড়তে শুনেছি। আমি তাঁর চাইতে সুন্দর কন্ঠ অথবা সুন্দর কিরাত শুনিনি। (সহীহ বুখারী হাদীস নং ৭৬৯ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৪৬৪ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ عَمْرِو بْنِ حُرَيْثٍ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الْفَجْرِ ( وَاللَّيْلِ إِذَا عَسْعَسَ)
৩.অর্থ: আমর ইবনে হুরাইস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি নবী (ﷺ) কে ফজরের নামাযে ওয়াল লাইলি ইযা আস আস অর্থাৎ সূরা তাকবীর পাঠ করতে শুনেছেন। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৫৬ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قَالَ: سَأَلْنَا خَبَّابًا أَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالعَصْرِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قُلْنَا: بِأَيِّ شَيْءٍ كُنْتُمْ تَعْرِفُونَ؟ قَالَ: «بِاضْطِرَابِ لِحْيَتِهِ»
৪.অর্থ: আবু মা’মার (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা খাব্বাব (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, নবী (ﷺ) কি যোহর ও আসরের নামাযে কিরাত পড়তেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমরা প্রশ্ন করলাম, আপনরা কি করে তা বুঝতেন? তিনি বললেন, তাঁর দাড়ির নড়াচড়ায়। (সহীহ বুখারী হাদীস নং ৭৬০ সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৮০১ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” لاَ صَلاَةَ إِلاَّ بِقِرَاءَةٍ ” . قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ فَمَا أَعْلَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَعْلَنَّاهُ لَكُمْ وَمَا أَخْفَاهُ أَخْفَيْنَاهُ لَكُمْ
৫.অর্থ: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, কিরাত ছাড়া নামায হবে না। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) যে নামায উচ্চস্বরে আদায় করেছেন তোমাদের জন্য আমরাও তা উচ্চস্বরে আদায় করি আর যা নিম্নস্বরে আদায় করেছেন আমরাও তা নিম্নস্বরে আদায় করি।(সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৩৯৬ হাদীসের মান: সহীহ)
উপরোক্ত হাদীস-সমূহের আলোকে আমরা জানতে পারলাম যে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে কিরাত আস্তে এবং জোরে পড়ার বিষয়টি বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। তাই প্রত্যেক মুসলমানের জন্য কর্তব্য হলো নবীজি যেভাবে নামাযে কিরাত পড়েছেন সেভাবেই কিরাত পড়া। আল্লাহ আমাদের সবাইকে উক্ত কথাগুলো আমল করার তাওফীক দান করুন আমীন।
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- আশিকুর রহমান।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply