পবিত্রতা অর্জনে পানি বা মাটি কোনটিই না পেলে করণীয়।

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম! পবিত্রতা অর্জনে পানি বা মাটি কোনটিই না পেলে কীভাবে নামায পড়তে হবে? একটি বইয়ে পড়লাম যদি মাটি বা পানি কিছুই না পাওয়া যায় তাহলে বিনা অযু ও তায়াম্মুমেই নামায আদায় করবে। এই বক্তব্য কতটুকু গ্ৰহণযোগ্য ?

উত্তরঃ

وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَد

যদি কোন ব্যক্তি বাসে, বিমানে বা রকেটে ভ্রমণকালে কিংবা জেলখানায় অথবা অন্য কোন স্থানে থাকার কারণে পানি বা মাটি কোনটিই না পায়। তাহলে সে নামায পড়া থেকে বিরত থাকবে। অবশ্য ইসলামী বিশেষজ্ঞরা বলেন, কেউ চাইলে নামাযের নিয়ত ব্যতীত শুধু নামাযের ন্যায় উঠা বসা করতে পারবে। এরপর পানি পাওয়া গেলে অযু করে নামায আদায় করে নিবে। কিন্তু যারা বলে, মাটি বা পানি কিছুই পাওয়া না গেলে বিনা অযু ও বিনা তায়াম্মুমেই নামায আদায় করবে। তাদের কথা সঠিক নয়, কারণ কুরআন হাদীসের কোথাও মাটি বা পানি না পেলে অযু ও তায়াম্মুম ব্যতীত নামায আদায় করতে হবে এমন কোন কথা নেই। বরং পবিত্রতা ব্যতীত নামায কবুল হয় না এটা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। তাই অপবিত্র অবস্থায় নামায আদায় থেকে বিরত থাকতে হবে এটাই অধিক শক্তিশালী মত।

عَنْ طَارِقٍ، أَنَّ رَجُلاً، أَجْنَبَ فَلَمْ يُصَلِّ فَأَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ ” أَصَبْتَ ” . فَأَجْنَبَ رَجُلٌ آخَرُ فَتَيَمَّمَ وَصَلَّى فَأَتَاهُ فَقَالَ نَحْوَ مَا قَالَ لِلآخَرِ يَعْنِي ” أَصَبْتَ ”

১.অর্থ: তারিক (রা.) থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি জানাবাতগ্রস্ত হলে সে (পবিত্রতা অর্জনের উপকরণ না থাকাই) নামায আদায় করল না। এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট এসে তা বর্ণনা করল। তিনি বললেন, তুমি ঠিক করেছ। এরপর অন্য একটি লোক জানাবাতগ্রস্ত হলে (পানি না থাকাই) তায়াম্মুম করে নামায আদায় করল তারপর সে তার নিকট আসল। তিনি অন্য ব্যক্তিকে যা বলেছিলেন তাকেও তাই বললেন। অর্থাৎ তুমি ঠিকই করেছ। (ইফা. সুনানে নাসাঈ, হাদীস নং ৩২৫ হাদীসের মান: সহীহ)

عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” لاَ يَقْبَلُ اللَّهُ صَلاَةً بِغَيْرِ طُهُورٍ وَلاَ صَدَقَةً مِنْ غُلُولٍ ”

২.অর্থ: উসামা ইবনে উমাইর (রা.) থেকে বর্ণিত ইবনে উমর (রা.) বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,আল্লাহ তা’আলা পবিত্রতা ব্যতীত কোন নামায কবুল করেন না এবং অবৈধভাবে অর্জিত মালের দান-খয়রাত গ্ৰহণ করেন না। (ইফা. সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ১৩৯ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৪২৮ হাদীসের মান: সহীহ)

উল্লেখিত দলিল দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, কোন ব্যক্তি যদি এমন কোন স্থানে থাকে যেখানে পানি ও মাটি কোনটিই নেই। আর নামাযের ওয়াক্ত চলে যাওয়ার আশঙ্কা হয়, তাহলেও সে বিনা অযু ও বিনা তায়াম্মুমে নামায আদায় করতে পারবে না। তবে চাইলে নামাযের নিয়ত ব্যতীত শুধু নামাযের ন্যায় উঠা বসা করতে পারবে। পরে যখন পানি বা মাটি পাবে তখন তার কাযা আদায় করে নিবে। কিন্তু কোনভাবেই নাপাক অবস্থায় নামায পড়া জায়েয নয়।

وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- জিয়াউর রহমান।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।

Share This Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *