প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম! আমার প্রশ্ন হলো,নামাযে সিজদার আয়াত পড়লে কখন সিজদা করতে হবে ?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
যেভাবে নামাযের বাইরে সিজদার আয়াত পাঠ করলে সিজদা ওয়াজিব হয়। তেমনি নামাযেও সিজদার আয়াত পাঠ করলে সিজদা ওয়াজিব হয়। নামাযে সিজদার আয়াত পাঠ করলে স্বতন্ত্র সিজদার মাধ্যমে তা আদায় করতে হবে। অবশ্য সিজদার আয়াত পাঠের পর যদি আরো দুই আয়াতের বেশি পাঠ করার পূর্বেই নামাযের রুকু-সিজদা করা হয়। তাহলে নামাযের সিজদার মাধ্যমে ইমাম-মুক্তাদী সকলের তিলাওয়াতের সিজদা আদায় হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে তিলাওয়াতের সিজদার জন্য ভিন্নভাবে নিয়ত করা শর্ত নয়। এমনকি সিজদার আয়াত পড়া হয়েছে বা সিজদা ওয়াজিব হয়েছে একথা মুক্তাদীগণ না বুঝলেও তাদের সিজদা আদায় হয়ে যাবে। কিন্ত দুই আয়াতের বেশি পড়ার পর যদি সিজদা করা হয় তাহলে গোনাহের সাথে সিজদা আদায় হয়ে যাবে। আর এই সিজদা তখন আলাদা সিজদার মাধ্যমে আদায় করতে হবে।
اِذَا تُتۡلٰی عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتُ الرَّحۡمٰنِ خَرُّوۡا سُجَّدًا وَّبُکِیًّا
১.অর্থ: তাদের সামনে যখন দয়াময় আল্লাহর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হত, তখন তারা কাঁদতে কাঁদতে সিজদায় লুটিয়ে পড়ত। (সূরা মারইয়াম আয়াত নং ৫৮)
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ السَّجْدَةَ وَنَحْنُ عِنْدَهُ، فَيَسْجُدُ وَنَسْجُدُ مَعَهُ، فَنَزْدَحِمُ حَتَّى مَا يَجِدُ أَحَدُنَا لِجَبْهَتِهِ مَوْضِعًا يَسْجُدُ عَلَيْهِ»
২.অর্থ: ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করতেন এবং আমরা তাঁর নিকট থাকতাম, তখন তিনি সিজদা করতেন এবং আমরাও তাঁর সঙ্গে সিজদা করতাম। এতে এত ভীড় হতো যে, আমাদের মধ্যে কেউ কেউ সিজদা করার জন্য কপাল রাখার জায়গা পেত না। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১০৭৬ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ سَجَدْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي ( إِذَا السَّمَاءُ انْشَقَّتْ) وَ ( اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ)
৩.অর্থ: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, আমরা নবী (সা.) এর সাথে সূরা ইনশিকক ও সূরা আলাকে সিজদা করেছি। (সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৫৭৮ সহীহ বুখারী হাদীস নং ৭৬৬ হাদীসের মান: সহীহ)
মোটকথা নামাযে সিজদার আয়াত পড়লে সাথে সাথে তাকবীর বলে সিজদায় চলে যেতে হবে। এরপর সিজদা থেকে উঠে যথারীতি বাকি নামায আদায় করবে। যদি কেউ নামাযের মধ্যে তিলাওয়াতের সিজদা আদায় না করে নামায শেষে আদায় করে। তাহলে সিজদা আদায় হবে না বরং গোনাহগার হবে। তাওবা ইস্তেগফার ব্যতীত এই গোনাহ মাফ হবে না। অবশ্য নামাযের বাইরে তাৎক্ষণিকভাবে সিজদা না করে থাকলে, পরবর্তীতে আদায় করার সুযোগ আছে। তবে অযথা দেরি করা উচিত নয়।
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- হিজবুল্লাহ জাহাঙ্গীর।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply