প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম ! প্রিয় মুফতী সাহেব নামাযের জামাত ধরার জন্য মসজিদে দৌঁড়ে আসা যাবে কি ?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
আমাদের উচিত জামাতের সাথে নামায জন্য পড়ার জন্য আগে আগে মসজিদে চলে আসা। যদি কখনো আসতে দেরি হয়। আর জামাত শুরু হয়ে যায় তাহলে ধীরে সুস্থে হেঁটে আসবে দৌঁড়ে আসবে না। দৌঁড়ে আসলে হয়তো তাকবীরে উলা কিংবা এক বা দুই রাকাত বেশি পাবে। কিন্তু তখন তো সে স্থিরচিত্তে নামায পড়তে পারবে না। বরং পুরো নামায জুড়েই তার মধ্যে এক প্রকার অস্থিরতা কাজ করবে। অবশ্য তাকবীরে উলা ধরার জন্য দ্রুত হেঁটে আসা জায়েয আছে।
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ نُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِذْ سَمِعَ جَلَبَةَ رِجَالٍ فَلَمَّا صَلَّى قَالَ ” مَا شَأْنُكُمْ “. قَالُوا اسْتَعْجَلْنَا إِلَى الصَّلاَةِ. قَالَ ” فَلاَ تَفْعَلُوا، إِذَا أَتَيْتُمُ الصَّلاَةَ فَعَلَيْكُمْ بِالسَّكِينَةِ، فَمَا أَدْرَكْتُمْ فَصَلُّوا وَمَا فَاتَكُمْ فَأَتِمُّوا ”
১.অর্থ: আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, একবার আমরা নবী (সা.) এর সঙ্গে নামায আদায় করছিলাম। হঠাৎ তিনি লোকদের (আগমনের) আওয়াজ শুনতে পেলেন। নামায শেষে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন তোমাদের কী হয়েছিল? তারা বললেন, আমরা নামাযের জন্য তাড়াহুড়া করে আসছিলাম। নবী (সা.) বললেন, এরূপ করবে না। যখন নামাযে আসবে ধীরস্থিরভাবে আসবে (ইমামের সাথে) যতটুকু পাও আদায় করবে, আর যতটুকু ছুটে যায় তা (ইমামের সালাম ফিরানোর পর) পুরা করে নিবে। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ৬০৭ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِذَا ثُوِّبَ لِلصَّلاَةِ فَلاَ تَأْتُوهَا وَأَنْتُمْ تَسْعَوْنَ وَأْتُوهَا وَعَلَيْكُمُ السَّكِينَةُ فَمَا أَدْرَكْتُمْ فَصَلُّوا وَمَا فَاتَكُمْ فَأَتِمُّوا فَإِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا كَانَ يَعْمِدُ إِلَى الصَّلاَةِ فَهُوَ فِي صَلاَةٍ ”
২.অর্থ: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, নামাযের ইকামত দেওয়া হলে, তার জন্য দৌঁড়ে আসবে না, বরং ধীরে সুস্থে আসবে। তারপর যা পাবে, আদায় করবে আর যা ছুটে যায়, তা পূর্ণ করে নিবে। কেননা, তোমাদের কেউ যখন নামাযের উদ্দেশ্যে চলে তখন সে নামাযেই গণ্য হয়। (ইফা. সহীহ মুসলিম হাদীস নং ১২৩৭ সহীহ বুখারী হাদীস নং ৬০৮ হাদীসের মান: সহীহ)
ইমাম তিরমিযী (রহ.) বলেন, এক দল ইসলামী বিশেষজ্ঞর মতে তাকবীরে উলা ছুটে যাওয়ার আশংকা হলে তাড়াতাড়ি আসবে। তাদের কারো কারো সম্পর্কে এ পর্যন্তও বর্ণিত আছে তারা দৌঁড়ে এসে নামায ধরতেন। ইসহাক রহ.বলেছেন, তাকবীরে উলা ছুটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে দ্রুত হেঁটে এসে জামাত ধরাতে কোন দোষ নেই। (ইফা.সুনানে তিরমিযী ৩২৭ নং হাদীসের আলোচনা দ্র.)
উপরের আলোচনা দ্বারা এ বিষয়টি স্পষ্ট যে, মসজিদে পৌঁছে ইমামকে রুকুতে চলে যেতে দেখলে দৌঁড়ে এসে নামাযে অংশগ্রহণ করা উচিত নয়। বরং ধীরে সুস্থে স্বাভাবিকভাবে নামাযে শরীক হওয়া উত্তম। কারণ মুসল্লী যখন জামাতে নামায পড়ার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়। তখন থেকে সে মসজিদে পৌঁছা পর্যন্ত তার পুরো সময়টুকু নামাযের মধ্যেই গণ্য করা হয়। সুতরাং তাড়াহুড়া করে মসজিদে না এসে ধীরস্থিরভাবে মসজিদে আসা উচিত।
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- আব্দুল কুদ্দুস।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply