নামাযরত অবস্থায় ইমামের ওযু নষ্ট হয়ে গেলে তখন কী করবে ?

 

প্রশ্নঃ

 

আসসালামু আলাইকুম! হযরত আশাকরি ভালো আছেন। আমি আপনার কাছে জানতে চাই নামাযরত অবস্থায় ইমামের অযু নষ্ট হয়ে গেলে তখন তার করণীয় কী ?

 

উত্তরঃ

 

وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ

بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ

حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ

 

নামাযরত অবস্থায় যদি ইমামের অযু নষ্ট হয়ে যায় কিংবা ফরয গোসল বাকি থাকার কথা মনে পড়ে, অথবা পেশাব বা পায়খানার প্রবল চাপ হয়। তাহলে ইমাম তৎক্ষণাৎ নামায ছেড়ে দিবে। এরপর মুক্তাদীদের মধ্য থেকে উপযুক্ত একজনকে ইমাম বানিয়ে নাক ধরে মসজিদ থেকে বের হয়ে যাবে। অতঃপর মুক্তাদী ইমামের বাকি নামাযকে পরিপূর্ণ করবে। ইমাম সাহেব অযু করে এসে তার সাথে আবার শরীক হবে যদি নামায শেষ না হয়। আর যদি নামায শেষ করে ফেলে, তাহলে বাকি নামায একাকী আদায় করে নিবে। তবে শর্ত হলো অযুতে যাওয়া আসার সময় কোনো প্রকার কথা বলা যাবে না। 

কথা বললে পূর্ণ নামায আদায় করতে হবে।

 

১.উমর (রা.) নামাযের ইমামতি করতে গিয়ে যখন খঞ্জর দ্বারা আঘাত প্রাপ্ত হলেন। তখন তিনি আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রা.)-এর হাত ধরে সামনে এগিয়ে দিয়ে ইমামতি করতে ইঙ্গিত করলেন। তখন আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) সংক্ষেপে নামায আদায় করালেন। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ৩৪৩৫ হাদীসের মান: সহীহ) 

 

عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” إِذَا أَحْدَثَ أَحَدُكُمْ فِي صَلاَتِهِ فَلْيَأْخُذْ بِأَنْفِهِ ثُمَّ لْيَنْصَرِفْ “

 

২.অর্থ: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন: যখন তোমাদের কারো নামাযের মধ্যে অযু নষ্ট হয়, তখন সে যেন তার নাক ধরে বের হয়ে যায়।(নাক ধরা অযু নষ্টের পরিচায়ক)। (ইফা. সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ১১১৪ সুনানে ইবনে মাজাহ ১২২২ হাদীসের মান: সহীহ) 

 

عَنْ نَافِعٍ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ إِذَا رَعَفَ انْصَرَفَ فَتَوَضَّأَ ثُمَّ رَجَعَ فَبَنَى وَلَمْ يَتَكَلَّمْ

 

৩.অর্থ: নাফে (রহ.) থেকে বর্ণিত: যখন আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) এর নাক দিয়ে রক্ত বের হত, তখন তিনি নামায হতে ফিরে যেতেন। অতঃপর অযু করতেন এবং পুনরায় এসে অবশিষ্ট নামায আদায় করতেন, আর তিনি এই অবস্থায় কথা বলতেন না। (মুয়াত্তা ইমাম মালেক হাদীস নং ৭৬ হাদীসের মান: সহীহ)

 

তাহকীক: শুয়াইব আরনাউত (রহ.) বলেন, এই হাদীসটির সনদ সহীহ। বায়হাকী (রহ.) বলেন, এর সনদ সহীহ। (তাখরীজু শারহিস সুন্নাহ ৩/২৭৮, সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী ২/২৫৬)

 

উক্ত দলিলগুলো দ্বারা বুঝা গেল যে, যদি নামাযের ভিতরে ইমামের অযু নষ্ট হয়ে যায় তাহলে একজন প্রতিনিধি নিযুক্ত করবে। যে তার স্থলাভিষিক্ত হয়ে নামায পড়াবে এবং তিনি অযু করে এসে তার এক্তেদা করবেন। এমনিভাবে যদি ইমামের গলার আওয়ায বন্ধ হয়ে যায় অথবা অজ্ঞান হওয়ার আশংকা হয়। কিংবা অন্য কোন সমস্যার কারণে ইমামতি করাতে কোন অসুবিধা সৃষ্টি হয়। তাহলেও তিনি একজন উপযুক্ত মুসল্লীকে ইমামতির দায়িত্ব দিয়ে দিবেন।

 

وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب

উত্তর প্রদানে- আমজাদ হুসাইন।

শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।

উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।

পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।  

Share This Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *