প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম ! প্রিয় মুফতী সাহেব ! দলিলসহ ওযু করার সঠিক নিয়ম জানতে চাই ?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
শুধু অযুর বর্ণনাগুলো পড়ার দ্বারা পূর্ণ সহীহ তরিকায় অযু শিক্ষা করা সম্ভব নয়। এ জন্য কোন হক্কানী আলেম থেকে সবগুলো বিষয় চাক্ষুষভাবে দেখে নেওয়া জরুরী। মহান আল্লাহ নবী (সা.) কে জিবরাঈল (আ.) এর মাধ্যমে সকল বিষয় চাক্ষুষভাবে দেখিয়ে শিক্ষা দিয়েছেন। তাই আমাদেরও নির্ভরযোগ্য কারো মাধ্যমে শিক্ষা করা উচিত। নিম্নে দলিলসহ অযুর সঠিক নিয়ম বর্ণনা করা হলো।
১. অযু শুরু করার পূর্বে মিসওয়াক করা। যদি মিসওয়াক না থাকে তাহলে আঙ্গুল দ্বারা দাঁত ঘষা।
عَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” لَوْلَا أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي، لَأَمَرْتُهُمْ عِنْدَ كُلِّ صَلَاةٍ بِوُضُوءٍ ومَعَ كُلِّ وُضُوءٍ بِسِوَاكٍ
অর্থ: আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, আমার উম্মতের উপর আমি যদি কঠিন মনে না করতাম। তাহলে তাদেরকে প্রত্যেক নামাযের সময় অযু করার আদেশ করতাম এবং প্রত্যেক অযুর সাথে মিসওয়াক করার নির্দেশ দিতাম। (সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব হাদীস নং ২০০ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৪৮২ হাদীসের মান: সহীহ)
২.মনে মনে অযুর নিয়ত করা।
وَ مَاۤ اُمِرُوۡۤا اِلَّا لِیَعۡبُدُوا اللّٰہَ مُخۡلِصِیۡنَ لَہُ الدِّیۡنَ
অর্থ: আর তাদেরকে এই নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যে, তারা যেন আল্লাহর আনুগত্যে খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদাত করে। (সূরা বায়্যিনা: আয়াত নং ৫)
عَلْقَمَةَ بْنَ وَقَّاصٍ اللَّيْثِيَّ، يَقُولُ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رضى الله عنه ـ عَلَى الْمِنْبَرِ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى
অর্থ: আলকামা ইবনে ওয়াক্কাস আল-লায়সী (রহ.) থেকে বর্ণিত, আমি উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) কে মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছিঃ আমি রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি, প্রত্যেক কাজ নিয়তের সাথে সম্পর্কিত। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী ফল পাবে। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ১ হাদীসের মান: সহীহ)
৩. বিসমিল্লাহ বলে অযু শুরু করা।
عَنْ أَنَسٍ، قَالَ طَلَبَ بَعْضُ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَضُوءًا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” هَلْ مَعَ أَحَدٍ مِنْكُمْ مَاءٌ ” . فَوَضَعَ يَدَهُ فِي الْمَاءِ وَيَقُولُ ” تَوَضَّئُوا بِسْمِ اللَّهِ ” . فَرَأَيْتُ الْمَاءَ يَخْرُجُ مِنْ بَيْنِ أَصَابِعِهِ حَتَّى تَوَضَّئُوا مِنْ عِنْدِ آخِرِهِمْ . قَالَ ثَابِتٌ قُلْتُ لأَنَسٍ كَمْ تُرَاهُمْ قَالَ نَحْوًا مِنْ سَبْعِينَ
অর্থ: আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (কোন এক সফরে) নবী (ﷺ) এর কয়েকজন সাহাবী পানি তালাশ করলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমাদের কারো নিকট পানি আছে কি ? (একজন পানি এনে দিলে) তিনি পানিতে হাত রাখলেন এবং বললেন, বিসমিল্লাহ বলে উযু করো। আমি তাঁর আঙ্গুলের ফাঁক থেকে পানি বের হতে দেখলাম। তাঁদের সর্বশেষ ব্যক্তিসহ সকলেই এই পানিতে উযু করেন। সাবিত (রহ.) বলেন, আমি আনাস (রা.) কে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি উপস্থিত লোকের সংখ্যা কত মনে করেন? তিনি বললেন, সত্তরজনের মত। (ইফা. সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং ৭৮ হাদীসের মান: সহীহ)
৪. ডান দিক থেকে অযু শুরু করা।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم “ إِذَا تَوَضَّأْتُمْ فَابْدَءُوا بِمَيَامِنِكُمْ ” .
অর্থ: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা.) বলেছেন, যখন তোমরা অযু করবে, তখন তোমাদের ডানদিক থেকে তা শুরু করবে। (ইফা. সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস নং ৪০২ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُعْجِبُهُ التَّيَمُّنُ فِي تَنَعُّلِهِ وَتَرَجُّلِهِ وَطُهُورِهِ وَفِي شَأْنِهِ كُلِّهِ
অর্থ: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (ﷺ) জুতা পরা, চুল আঁচড়ানো এবং পবিত্রতা অর্জন করা তথা প্রত্যেক (ভালো) কাজই ডান দিক থেকে শুরু করতে ভালোবাসতেন। (ইফা. সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৬৭ হাদীসের মান: সহীহ)
৫. দুই হাতের কব্জিসহ তিনবার ধোয়া। হাতে ঘড়ি, চুড়ি বা আংটি থাকলে নাড়ানো।
حُمْرَانَ مَوْلَى عُثْمَانَ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، رَأَى عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ دَعَا بِإِنَاءٍ، فَأَفْرَغَ عَلَى كَفَّيْهِ ثَلاَثَ مِرَارٍ فَغَسَلَهُمَا، ثُمَّ أَدْخَلَ يَمِينَهُ فِي الإِنَاءِ فَمَضْمَضَ، وَاسْتَنْشَقَ، ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثًا، وَيَدَيْهِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ ثَلاَثَ مِرَارٍ، ثُمَّ مَسَحَ بِرَأْسِهِ، ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ ثَلاَثَ مِرَارٍ إِلَى الْكَعْبَيْنِ، ثُمَّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ تَوَضَّأَ نَحْوَ وُضُوئِي هَذَا، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ، لاَ يُحَدِّثُ فِيهِمَا نَفْسَه، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ”
অর্থ: হুমরান (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি উসমান ইবনে আফফান (রা.)-কে দেখেছেন যে, তিনি পানির পাত্র আনিয়ে উভয় হাতের তালুতে তিনবার ঢেলে তা ধুয়ে নিলেন। এরপর ডান হাত পাত্রের মধ্যে ঢুকালেন। তারপর কুলি করলেন ও নাকে পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করলেন। তারপর তাঁর মুখমণ্ডল তিনবার ধুলেন এবং দুই হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুয়ে নিলেন। এরপর মাথা মাসাহ করলেন। তারপর উভয় পা গিরা পর্যন্ত তিনবার ধুয়ে নিলেন। পরে বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার মত এ রকম অযু করবে, তারপর দুই রাকাত নামায আদায় করবে, যাতে দুনিয়ার কোন খেয়াল করবে না, তার পেছনের গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ১৬১ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৪৩১ হাদীসের মান: সহীহ)
৬. ডান হাতে পানি নিয়ে তিনবার গড়গড়া করে কুলি করা, অবশ্য রোযা অবস্থায় গড়গড়া কুলি করবে না।
عَنْ أَبِي حَيَّةَ، – وَهُوَ ابْنُ قَيْسٍ – قَالَ رَأَيْتُ عَلِيًّا – رضى الله عنه – تَوَضَّأَ فَغَسَلَ كَفَّيْهِ حَتَّى أَنْقَاهُمَا ثُمَّ تَمَضْمَضَ ثَلاَثًا وَاسْتَنْشَقَ ثَلاَثًا وَغَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثًا وَغَسَلَ ذِرَاعَيْهِ ثَلاَثًا ثَلاَثًا ثُمَّ مَسَحَ بِرَأْسِهِ ثُمَّ غَسَلَ قَدَمَيْهِ إِلَى الْكَعْبَيْنِ ثُمَّ قَامَ فَأَخَذَ فَضْلَ طَهُورِهِ فَشَرِبَ وَهُوَ قَائِمٌ ثُمَّ قَالَ أَحْبَبْتُ أَنْ أُرِيَكُمْ كَيْفَ طَهُورُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
অর্থ: আবু হাইয়া ইবনে কায়েস (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আলী (রা.) কে অযু করতে দেখেছি। তিনি (সর্বপ্রথম) হাতের কব্জি পর্যন্ত অত্যন্ত পরিষ্কার করে ধৌত করেন। তারপর তিনবার কুলি করেন তিনবার নাকে পানি দেন ও তিনবার মুখমন্ডল ধৌত করেন এবং উভয় হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার করে ধৌত করেন। পরে মাথা মাসাহ করেন এবং উভয় পা গোড়ালী পর্যন্ত ধৌত করেন। তারপর দাঁড়িয়ে অযুর অবশিষ্ট পানি পান করেন এবং বলেন, নবী (ﷺ) এর অযু পদ্ধতি কিরূপ ছিল, আমি তা তোমাদেরকে দেখাতে চেয়েছি। (তাই আমি তোমাদের অযু করে দেখালাম)। (ইফা. সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ৯৬ সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ৪৮ হাদীসের মান: সহীহ)
৭. ডান হাত দ্বারা তিনবার নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌঁছানো। তবে রোযাদার হলে নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌঁছাবে না। আর প্রতিবার বাম হাত দ্বারা নাক ঝাড়বে।
عَنْ عَلِيٍّ، أَنَّهُ دَعَا بِوَضُوءٍ فَتَمَضْمَضَ وَاسْتَنْشَقَ وَنَثَرَ بِيَدِهِ الْيُسْرَى فَفَعَلَ هَذَا ثَلاَثًا ثُمَّ قَالَ هَذَا طُهُورُ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
অর্থ: আলী (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি পানি আনতে বললেন, পরে তিনি কুলি করেন এবং নাকে পানি দেন। বামহাতে নাক ঝাড়েন। তিনবার এরূপ করেন। পরে বলেন, এই হল নবী (ﷺ)-এর অযু। (ইফা. সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ৯১ সহীহ বুখারী হাদীস নং ১৮৫ হাদীসের মান: সহীহ)
৮. সমস্ত মুখ তিনবার ধোয়া। অর্থাৎ এক কানের লতি থেকে অপর কানের লতি পর্যন্ত এবং চুলের গোড়া থেকে থুতনির নিচ পর্যন্ত ধোয়া। দাড়ি ঘন হলে এবং চামড়া দেখা না গেলে, চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছানো জরুরী নয়। বরং দাড়ির উপর অংশ ধোয়াই যথেষ্ট। আর দাড়ি হালকা-পাতলা হলে এবং চামড়া দেখা গেলে, তখন চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছানো জরুরী।
حُمْرَانَ مَوْلَى عُثْمَانَ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، رَأَى عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ دَعَا بِإِنَاءٍ، فَأَفْرَغَ عَلَى كَفَّيْهِ ثَلاَثَ مِرَارٍ فَغَسَلَهُمَا، ثُمَّ أَدْخَلَ يَمِينَهُ فِي الإِنَاءِ فَمَضْمَضَ، وَاسْتَنْشَقَ، ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثًا، وَيَدَيْهِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ ثَلاَثَ مِرَارٍ، ثُمَّ مَسَحَ بِرَأْسِهِ، ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ ثَلاَثَ مِرَارٍ إِلَى الْكَعْبَيْنِ، ثُمَّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ تَوَضَّأَ نَحْوَ وُضُوئِي هَذَا، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ، لاَ يُحَدِّثُ فِيهِمَا نَفْسَهُ، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ”
অর্থ: হুমরান (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি উসমান ইবনে আফফান (রা.)-কে দেখেছেন যে, তিনি পানির পাত্র আনিয়ে উভয় হাতের তালুতে তিনবার ঢেলে তা ধুয়ে নিলেন। এরপর ডান হাত পাত্রের মধ্যে ঢুকালেন। তারপর কুলি করলেন ও নাকে পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করলেন। তারপর তাঁর মুখমণ্ডল তিনবার ধুলেন এবং দুই হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুয়ে নিলেন। এরপর মাথা মাসাহ করলেন। তারপর উভয় পা গিরা পর্যন্ত তিনবার ধুয়ে নিলেন। পরে বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার মত এ রকম অযু করবে, তারপর দুই রাকাত নামায আদায় করবে, যাতে দুনিয়ার কোন খেয়াল করবে না, তার পেছনের গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ১৬১ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৪৩১ হাদীসের মান: সহীহ)
৯. দাড়ি খিলাল করা। অর্থাৎ হাতে এক অঞ্জলি পানি নিয়ে থুতনির নিচে দেওয়া এবং দাড়ির ভিতরে আঙ্গুল প্রবেশ করানো।
عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُخَلِّلُ لِحْيَتَهُ
অর্থ: উসমান ইবনে আফফান (রা.) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী (ﷺ) তাঁর দাড়ি খিলাল করতেন। (ইফা. সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ৩১ হাদীসের মান: হাসান)
عَنْ أَنَسٍ يَعْنِي ابْنَ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا تَوَضَّأَ أَخَذَ كَفًّا مِنْ مَاءٍ فَأَدْخَلَهُ تَحْتَ حَنَكِهِ فَخَلَّلَ بِهِ لِحْيَتَهُ وَقَالَ ” هَكَذَا أَمَرَنِي رَبِّي عَزَّ وَجَلَّ
অর্থ: আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন অযু করতেন, তখন তিনি এক কোশ পানি হাতে নিয়ে থুতনির নীচে দিয়ে তা দ্বারা দাড়ি খিলাল করতেন। তিনি আরো বলেন, আমার প্রতিপালক আমাকে এরূপ করার নির্দেশ দিয়েছেন। (ইফা. সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ১৪৫ হাদীসের মান: সহীহ)
১০. প্রথমে ডান হাত অতঃপর বাম হাত কনুইসহ তিনবার ধোয়া।
حُمْرَانَ مَوْلَى عُثْمَانَ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، رَأَى عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ دَعَا بِإِنَاءٍ، فَأَفْرَغَ عَلَى كَفَّيْهِ ثَلاَثَ مِرَارٍ فَغَسَلَهُمَا، ثُمَّ أَدْخَلَ يَمِينَهُ فِي الإِنَاءِ فَمَضْمَضَ، وَاسْتَنْشَقَ، ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثًا، وَيَدَيْهِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ ثَلاَثَ مِرَارٍ، ثُمَّ مَسَحَ بِرَأْسِهِ، ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ ثَلاَثَ مِرَارٍ إِلَى الْكَعْبَيْنِ، ثُمَّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ تَوَضَّأَ نَحْوَ وُضُوئِي هَذَا، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ، لاَ يُحَدِّثُ فِيهِمَا نَفْسَهُ، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ”.
অর্থ: হুমরান (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি উসমান ইবনে আফফান (রা.)-কে দেখেছেন যে, তিনি পানির পাত্র আনিয়ে উভয় হাতের তালুতে তিনবার ঢেলে তা ধুয়ে নিলেন। এরপর ডান হাত পাত্রের মধ্যে ঢুকালেন। তারপর কুলি করলেন ও নাকে পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করলেন। তারপর তাঁর মুখমণ্ডল তিনবার ধুলেন এবং দুই হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুয়ে নিলেন। এরপর মাথা মাসাহ করলেন। তারপর উভয় পা গিরা পর্যন্ত তিনবার ধুয়ে নিলেন। পরে বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার মত এ রকম অযু করবে, তারপর দুই রাকাত নামায আদায় করবে, যাতে দুনিয়ার কোন খেয়াল করবে না, তার পেছনের গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ১৬১ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৪৩১ হাদীসের মান: সহীহ)
১১. দুই হাতের আঙ্গুলগুলো খিলাল করা। অর্থাৎ বাম হাতের আঙ্গুলগুলো ডান হাতের পিঠের উপর রেখে ডান হাতের আঙ্গুলের ভিতরে প্রবেশ করানো। অনুরূপভাবে ডান হাতের আঙ্গুলগুলো দিয়ে বাম হাতের আঙ্গুলগুলো খিলাল করা।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِذَا تَوَضَّأْتَ فَخَلِّلْ بَيْنَ أَصَابِعِ يَدَيْكَ وَرِج
অর্থ: ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, অযু করার সময় তোমার হাত ও পায়ের অঙ্গুলী খিলাল করবে। (ইফা. সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ৩৯ মিশকাতুল মাসাবীহ হাদীস নং ৪০৬ হাদীসের মান: সহীহ)
১২. নতুন পানি দ্বারা দুই হাত ভিজিয়ে সমস্ত মাথা একবার মাসাহ করা। অর্থাৎ উভয় হাতের আঙ্গুল- গুলো এবং তালু মাথার অগ্রভাগে রেখে ঘাড় পর্যন্ত টেনে নেওয়া। এরপর উভয় হাত পুনরায় পিছন থেকে সামনের দিকে টেনে আনা।
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَسَحَ رَأْسَهُ بِيَدَيْهِ فَأَقْبَلَ بِهِمَا وَأَدْبَرَ بَدَأَ بِمُقَدَّمِ رَأْسِهِ ثُمَّ ذَهَبَ بِهِمَا إِلَى قَفَاهُ ثُمَّ رَدَّهُمَا حَتَّى رَجَعَ إِلَى الْمَكَانِ الَّذِي بَدَأَ مِنْهُ ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ
অর্থ: আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদ (রাযি.) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল (ﷺ) তাঁর দুই হাত দিয়ে মাথা মাসাহ করলেন। অর্থাৎ হাত দুটি সামনে ও পিছনে নিলেন। মাথার সম্মুখ ভাগ থেকে শুরু করে হাত দুটি মাথার গর্দান পর্যন্ত নিলেন। এরপর হাত দুটি আবার যে স্থান থেকে শুরু করেছিলেন সেস্থানে ফিরিয়ে নিয়ে এলেন। তারপর তাঁর দুই পা ধুইলেন। (ইফা. সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ৩২ সহীহ বুখারী হাদীস নং ১৮৫ হাদীসের মান: সহীহ)
১৩. দুই কান মাসাহ করা। অর্থাৎ কানের ভিতরের দিক শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা এবং বাইরের দিক বৃদ্ধা আঙ্গুল দ্বারা মাসাহ করা।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ تَوَضَّأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَغَرَفَ غَرْفَةً فَمَضْمَضَ وَاسْتَنْشَقَ ثُمَّ غَرَفَ غَرْفَةً فَغَسَلَ وَجْهَهُ ثُمَّ غَرَفَ غَرْفَةً فَغَسَلَ يَدَهُ الْيُمْنَى ثُمَّ غَرَفَ غَرْفَةً فَغَسَلَ يَدَهُ الْيُسْرَى ثُمَّ مَسَحَ بِرَأْسِهِ وَأُذُنَيْهِ بَاطِنِهِمَا بِالسَّبَّاحَتَيْنِ وَظَاهِرِهِمَا بِإِبْهَامَيْهِ ثُمَّ غَرَفَ غَرْفَةً فَغَسَلَ رِجْلَهُ الْيُمْنَى ثُمَّ غَرَفَ غَرْفَةً فَغَسَلَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى
অর্থ: ইবনে আব্বাস (রাযি.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অযু করেন (অর্থাৎ উভয় হাত ধৌত করেন)। তিনি এক অঞ্জলি পানি দ্বারা কুলি করেন ও নাকে পানি দেন। আবার এক অঞ্জলি পানি নেন এবং মুখমন্ডল ধৌত করেন। আবার এক অঞ্জলি পানি নিয়ে ডান হাত ধৌত করেন। আবার এক অঞ্জলি পানি নিয়ে বাম হাত ধৌত করেন। তারপর মাথা ও কান মাসাহ করেন। কানের ভেতর দিক শাহাদাত অঙ্গুলী ও বাহির দিক বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা মাসাহ করেন। আবার এক অঞ্জলি পানি নিয়ে ডান পা ধৌত করেন এবং এক অঞ্জলি পানি নিয়ে বাম পা ধৌত করেন। (ইফা. সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং ১০২ সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ৪৩৯ হাদীসের মান: হাসান)
১৪. গর্দান বা ঘাড় মাসাহ করা।
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَسَحَ رَأْسَهُ بِيَدَيْهِ فَأَقْبَلَ بِهِمَا وَأَدْبَرَ بَدَأَ بِمُقَدَّمِ رَأْسِهِ ثُمَّ ذَهَبَ بِهِمَا إِلَى قَفَاهُ ثُمَّ رَدَّهُمَا حَتَّى رَجَعَ إِلَى الْمَكَانِ الَّذِي بَدَأَ مِنْهُ ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ
অর্থ: আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদ (রাযি.) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল (ﷺ) তাঁর দুই হাত দিয়ে মাথা মাসাহ করলেন। অর্থাৎ হাত দুটি সামনে ও পিছনে নিলেন। মাথার সম্মুখ ভাগ থেকে শুরু করে হাত দুটি মাথার গর্দান পর্যন্ত নিলেন। এরপর হাত দুটি আবার যে স্থান থেকে শুরু করেছিলেন সেস্থানে ফিরিয়ে নিয়ে এলেন। তারপর তাঁর দুই পা ধুইলেন। (ইফা. সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ৩২ সহীহ বুখারী হাদীস নং ১৮৫ হাদীসের মান: সহীহ)
উক্ত হাদীসে মাথা মাসাহের সময় হাত টেনে গর্দান পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে, পুনরায় ফিরিয়ে আনার মধ্যে গর্দানের উপরিভাগ মাসাহ হয়ে যায়। এতে গর্দান মাসাহ করার আমলটি যে সহীহ তা প্রমাণিত হয়ে গেল।
عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: “مَنْ تَوَضَّأَ وَمَسَحَ بِيَدَيْهِ عَلَى عُنُقِهِ وُقِيَ الْغُلَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ”
অর্থ: ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি অযু করে এবং উভয় হাত দিয়ে গর্দান মাসাহ করে,তাকে কিয়ামতের দিন বেড়ি পরানো থেকে মুক্ত রাখা হবে। (আত-তালখীসুল হাবীর হাদীস: নং ৯৮) তাহকীক: ইমাম আবুল হাসান ফারেছ (রহ.) বলেছেন, ইনশাআল্লাহ হাদীসটি সহীহ। (তালখীসুল হাবীর ১/৯৩)
عن موسى بن طلحةَ قال: من مسحَ قفاهُ مع رأسهِ وُقِيَ الغلِّ يومَ القيامةِ
অর্থ: মুসা ইবনে তালহা থেকে বর্ণিত, যে ব্যক্তি মাথার সাথে গর্দানকেও মাসাহ করবে, কিয়ামতের দিন জাহান্নামের বেড়ি পরানো থেকে তাকে মুক্ত রাখা হবে।(আত-তালখীসুল হাবীর হাদীস: নং ৯৭) তাহকীক: ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) বলেন,হাদীসটি মুরসাল। (আত-তালখীসুল হাবীর ১/১৩৫)
১৫. প্রথমে ডান পা অতঃপর বাম পা টাখনুসহ তিনবার ধোয়া।
حُمْرَانَ مَوْلَى عُثْمَانَ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، رَأَى عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ دَعَا بِإِنَاءٍ، فَأَفْرَغَ عَلَى كَفَّيْهِ ثَلاَثَ مِرَارٍ فَغَسَلَهُمَا، ثُمَّ أَدْخَلَ يَمِينَهُ فِي الإِنَاءِ فَمَضْمَضَ، وَاسْتَنْشَقَ، ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثًا، وَيَدَيْهِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ ثَلاَثَ مِرَارٍ، ثُمَّ مَسَحَ بِرَأْسِهِ، ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ ثَلاَثَ مِرَارٍ إِلَى الْكَعْبَيْنِ، ثُمَّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ تَوَضَّأَ نَحْوَ وُضُوئِي هَذَا، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ، لاَ يُحَدِّثُ فِيهِمَا نَفْسَه، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ”.
অর্থ: হুমরান (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি উসমান ইবনে আফফান (রা.)-কে দেখেছেন যে, তিনি পানির পাত্র আনিয়ে উভয় হাতের তালুতে তিনবার ঢেলে তা ধুয়ে নিলেন। এরপর ডান হাত পাত্রের মধ্যে ঢুকালেন। তারপর কুলি করলেন ও নাকে পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করলেন। তারপর তাঁর মুখমণ্ডল তিনবার ধুলেন এবং দুই হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুয়ে নিলেন। এরপর মাথা মাসাহ করলেন। তারপর উভয় পা গিরা পর্যন্ত তিনবার ধুয়ে নিলেন। পরে বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার মত এ রকম অযু করবে, তারপর দুই রাকাত নামায আদায় করবে, যাতে দুনিয়ার কোন খেয়াল করবে না, তার পেছনের গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ১৬১ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৪৩১ হাদীসের মান: সহীহ)
১৬. দুই পায়ের আঙ্গুলগুলো খিলাল করা। অর্থাৎ বাম হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুল দ্বারা প্রথমে ডান পায়ের কনিষ্ঠা আঙ্গুল থেকে খিলাল শুরু করে বৃদ্ধা আঙ্গুলে গিয়ে শেষ করা। অতঃপর বাম পায়ের বৃদ্ধা আঙ্গুল থেকে খিলাল শুরু করে কনিষ্ঠা আঙ্গুলে গিয়ে শেষ করা।
عَنِ الْمُسْتَوْرِدِ بْنِ شَدَّادٍ، قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا تَوَضَّأَ يَدْلُكُ أَصَابِعَ رِجْلَيْهِ بِخِنْصَرِهِ
অর্থ: মুসতাওরিদ ইবনে শাদ্দাদ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে অযুর সময় তার পায়ের আঙ্গুলসমূহ হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুল দ্বারা খিলাল করতে দেখেছি। (ইফা. সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ১৪৮ সুনানে ইবনে মাজাহ ৪৪৬ হাদীসের মান: সহীহ)
১৭. অযুর মাঝে এই দুআটি পড়া আল্লাহুম মাগ ফিরলী যাম্বী ওয়া ওয়াসসি’লী ফী দারী, ওয়া বারিকলী ফী রিযকী।
عن أبي موسى الأشعري: أتيتُ رَسولَ اللهِ ﷺ بوَضوءٍ، فتوَضَّأَ فسَمِعتُه يدعو يقولُ: اللَّهُمَّ اغفِرْ لي ذنبي، ووَسِّعْ لي في داري، وبارِكْ لي في رزقي، فقلتُ: يا نبيَّ اللهِ سمعتُك تدعو بكذا وكذا، قال: وهل ترَكْنَ من شَيءٍ
অর্থ: আবু মুসা আশআরী (রা.) থেকে বর্ণিত। আমি অযুর সময় রাসূল (সা.) এর কাছে এলাম। তখন তিনি অযু করলেন, আমি তাকে বলতে শুনলাম। আল্লাহুম মাগ ফিরলী যাম্বী ওয়া ওয়াসসি’লী ফী দারী, ওয়া বারিকলী ফী রিযকী। অতঃপর আমি বললাম হে আল্লাহর নবী! আমি আপনাকে এভাবে বলতে শুনেছি। তিনি বললেন, এতে কি কিছু ছুটেছে বলে দেখতে পাচ্ছো ? (সুনানে নাসায়ী কুবরা হাদীস নং ৯৯০৮)
তাহকীক: ইবনুল কাইয়ুম (রহ.) বলেন, এই হাদীসটির সনদ সহীহ। শুয়াইব আরনাউত (রহ.) বলেন এর সনদ সহীহ। নববী (রহ.) বলেন, হাদীসটির সনদ সহীহ। (যাদুল মাআদ ২/৩৫৪, তাখরীজু যাদিল মাআদ ২/৩৫৫, আল-আযকার লিননববী ৪৪)
১৮. তারপর দাঁড়িয়ে অযুর অবশিষ্ট পানি পান করা।
عَنْ أَبِي حَيَّةَ، – وَهُوَ ابْنُ قَيْسٍ – قَالَ رَأَيْتُ عَلِيًّا – رضى الله عنه – تَوَضَّأَ فَغَسَلَ كَفَّيْهِ حَتَّى أَنْقَاهُمَا ثُمَّ تَمَضْمَضَ ثَلاَثًا وَاسْتَنْشَقَ ثَلاَثًا وَغَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثًا وَغَسَلَ ذِرَاعَيْهِ ثَلاَثًا ثَلاَثًا ثُمَّ مَسَحَ بِرَأْسِهِ ثُمَّ غَسَلَ قَدَمَيْهِ إِلَى الْكَعْبَيْنِ ثُمَّ قَامَ فَأَخَذَ فَضْلَ طَهُورِهِ فَشَرِبَ وَهُوَ قَائِمٌ ثُمَّ قَالَ أَحْبَبْتُ أَنْ أُرِيَكُمْ كَيْفَ طَهُورُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
অর্থ: আবু হাইয়া ইবনে কায়েস (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আলী (রা.) কে অযু করতে দেখেছি। তিনি (সর্বপ্রথম) হাতের কব্জি পর্যন্ত অত্যন্ত পরিষ্কার করে ধৌত করেন। তারপর তিনবার কুলি করেন তিনবার নাকে পানি দেন ও তিনবার মুখমন্ডল ধৌত করেন এবং উভয় হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার করে ধৌত করেন। পরে মাথা মাসাহ করেন এবং উভয় পা গোড়ালী পর্যন্ত ধৌত করেন। তারপর দাঁড়িয়ে অযুর অবশিষ্ট পানি পান করেন এবং বলেন, নবী (ﷺ) এর অযু পদ্ধতি কিরূপ ছিল, আমি তা তোমাদেরকে দেখাতে চেয়েছি। (তাই আমি তোমাদের অযু করে দেখালাম)। (ইফা. সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ৯৬ সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ৪৮ হাদীসের মান: সহীহ)
১৯. অযু শেষে প্রথমে কালিমায়ে শাহাদাত পড়া তথা আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আব্দুহু অরসূলুহ্। তারপর এই দুআ পড়া। আল্লাহুম্মাজ আলনী মিনাত তাওয়াবীনা, অজআলনী মিনাল মুতাতহ্হিরীন।
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ ثُمَّ قَالَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ التَّوَّابِينَ وَاجْعَلْنِي مِنَ الْمُتَطَهِّرِينَ فُتِحَتْ لَهُ ثَمَانِيَةُ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ يَدْخُلُ مِنْ أَيِّهَا شَاءَ ”
অর্থ: উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল (ﷺ) বলেছেন কোন ব্যক্তি যদি খুব ভাল করে অযু করে এই দু‘আ পড়ে তবে জান্নাতের সব দরজাই তার জন্য খুলে যাবে এবং যে দরজা দিয়ে
সে ইচ্ছা করবে সেটি দিয়েই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। দু‘আটি হলো:-আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আব্দুহু অরসূলুহ্। তারপর এই দুআ পড়া। আল্লাহুম্মাজ আলনী মিনাত তাওয়াবীনা, অজআলনী মিনাল মুতাতহ্হিরীন। (ইফা. সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ৫৫ সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ১৪৮ হাদীসের মান: সহীহ)
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- ইদরীস আলী।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply