জোরে কিরাতের নামাযে আস্তে এবং আস্তে কিরাতের নামাযে জোরে পড়া যাবে কি ?

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম! আমার প্রশ্ন হলো ভুলে নামাযে জোরে কিরাতের স্থানে আস্তে কিরাত পড়লে সাহু সিজদা দিতে হবে কি ?

উত্তরঃ

وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ

কিছু নামাযে রাসূল (ﷺ) কিরাত আস্তে এবং কিছু নামাযে কিরাত জোরে পড়েছেন। তাই প্রত্যেক ইমামের জন্য নবীজির অনুসরণে উক্ত নিয়মে কিরাত পড়া ওয়াজিব। সুতরাং ইমাম সাহেব যদি জোরে কিরাত বিশিষ্ট নামাযে বড় এক আয়াত বা ছোট তিন আয়াত পরিমাণ আস্তে পড়েন। অথবা আস্তে কিরাত বিশিষ্ট নামাযে বড় এক আয়াত বা ছোট তিন আয়াত পরিমাণ জোরে পড়েন তাহলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে। অবশ্য একাকী নামায আদায়কারী ব্যক্তি চাইলে জোরে কিরাতের নামাযে আস্তে কিরাত পড়তে পারবে। কিন্তু আস্তে কিরাতের নামাযে একাকী নামায আদায়কারীর জন্যও আস্তে কিরাত পড়া ওয়াজিব।

وَمَاۤ اٰتٰىکُمُ الرَّسُوۡلُ فَخُذُوۡہُ ٭ وَمَا نَہٰىکُمۡ عَنۡہُ فَانۡتَہُوۡا

১.অর্থ: রাসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ করো এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাকো। (সূরা হাশর আয়াত নং ৭)

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: قَرَأَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيمَا أُمِرَ وَسَكَتَ فِيمَا أُمِرَ {لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ}

২.অর্থ: ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) যেখানে কিরাত পড়ার জন্য
নির্দেশ পেয়েছেন, সেখানে (জোরে) পড়েছেন।
আর যেখানে চুপ করে থাকতে নির্দেশ পেয়েছেন সেখানে চুপ করে থেকেছেন। (আল্লাহ্ তা’আলার বাণী) “নিশ্চয় তোমাদের জন্য রসূলুল্লাহ (ﷺ) এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭৭৪ হাদীসের মান: সহীহ)

صَلُّوا كَمَا رَأَيْتُمُونِي أُصَلِّي، فَإِذَا حَضَرَتِ الصَّلاَةُ فَلْيُؤَذِّنْ لَكُمْ أَحَدُكُمْ، وَلْيَؤُمَّكُمْ أَكْبَرُكُمْ»

৩.অর্থ: রাসূল (ﷺ) বলেছেন, তোমরা আমাকে যেভাবে নামায আদায় করতে দেখেছ সেভাবে নামায আদায় করো। যখন নামাযের সময় উপস্থিত হয়, তখন যেন তোমাদের কোন একজন তোমাদের উদ্দেশ্যে আযান দেয়, আর তোমাদের মধ্যে যে বড় সে যেন তোমাদের ইমামতি করে। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭২৪৬ হাদীসের মান: সহীহ)

عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ فِي كُلِّ سَهْوٍ سَجْدَتَانِ بَعْدَ مَا يُسَلِّمُ ‏”‏

৪.অর্থ: সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, প্রত্যেক ভুলের জন্য সালামের পর দুইটি সাহু সিজদা আদায় করতে হবে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ১০৩৮, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ১২১৯)

মোটকথা কিছু নামাযে কিরাত জোরে এবং কিছু নামাযে কিরাত আস্তে পড়ার বিধানটি ওয়াজিব। যদি ইমাম সাহেব ভুলে নামাযে জোরে কিরাতের স্থানে আস্তে এবং আস্তে কিরাতের স্থানে জোরে কিরাত পড়ে তাহলে ওয়াজিব ছুটে যাবে। ফলে তার জন্য সাহু সিজদা আবশ্যক হয়ে যাবে। যদি সাহু সিজদা না দেন তাহলে পুনরায় নামায আদায় করতে হবে।

وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- মোহাম্মদ রুহুল আমিন।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।

Share This Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *