(১) পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা’আলা বলেন, তোমরা রুকুকারীদের সাথে রুকু করো। অর্থাৎ মসজিদে জামাতের সাথে নামায আদায় করো। (সূরা বাকারা আয়াত নং ৪৩ তাফসীরে ইবনে কাসীর ১/৮৮)
(২) পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা’আলা যুদ্ধের ময়দানে শত্রুদের সম্মুখেও জামাতের সাথে নামায আদায় করার কথা বলেছেন। এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, জামাতের সাথে নামায আদায় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরী আমল। (সূরা নিসা আয়াত নং ১০২)
(৩) আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আমাদের যুগে আমরা দেখেছি প্রকাশ্য মুনাফিক এবং অসুস্থ ব্যক্তি ছাড়া কেউ জামাত ত্যাগ করত না। এমনকি কোন অসুস্থ ব্যক্তি যদি দুই জনের কাঁধে ভর করে হাঁটতে পারত তাহলে সেও মসজিদে এসে জামাতে শরীক হত। (ইফা. সহীহ মুসলিম হাদীস নং ১৩৬২ সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস নং ৭৭৭ হাদীসের মান: সহীহ)
(৪) আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির জন্য লাগাতার চল্লিশ দিন তাকবীরে উলার (প্রথম তাকবীরের) সাথে জামাতে নামায আদায় করবে, তার জন্য দুটি মুক্তির ছাড়পত্র দেওয়া হয়, প্রথমটি হলো তার জাহান্নাম হতে মুক্তি। অপরটি হল তার মুনাফিকী হতে মুক্তি। (ইফা. সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ২৪১ মিশকাতুল মাসাবীহ হাদীস নং ১১৪৪ হাদীসের মান: হাসান)
(৫) উসমান ইবনে আফফান (রা.) বলেন, আল্লাহর রসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ইশার নামায জামাতের সাথে আদায় করল সে যেন অর্ধরাত (নফল) নামায আদায় করল। আর যে ব্যক্তি ইশা ও ফজরের নামায জামাতের সাথে আদায় করল, সে যেন সারারাতই (নফল) নামায পড়ল। (ইফা. সহীহ মুসলিম হাদীস নং ১৩৬৬ সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ২২১ হাদীসের মান: সহীহ)
(৬) আবু মুসা (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, (মসজিদ হতে) যে যত অধিক দূরত্ব অতিক্রম করে নামাযে আসে, তার তত অধিক সওয়াব হবে। আর যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে(জামাতে)নামায আদায় করা পর্যন্ত অপেক্ষা করে, তার সওয়াব সে ব্যক্তির চেয়ে অধিক, যে একাকী নামায আদায় করে ঘুমিয়ে পড়ে। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ৬২১ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ১৩৮৭ হাদীসের মান: সহীহ)
(৭) উবাই ইবনে কাব (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে নিয়ে ফজরের নামায আদায় করে অতঃপর বললেন, নিশ্চয় দুইজনের জামাত একাকী নামায আদায়ের চেয়ে উত্তম। তিনজনের জামাত দুইজনের জামাতের চেয়ে উত্তম। জামাতে লোক সংখ্যা যত বেশি হবে মহান আল্লাহর নিকট তা ততই বেশি পছন্দনীয়। (ইফা. সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৫৫৪ সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ৮৪৪ হাদীসের মান: হাসান)
(৮) আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, কোন ব্যক্তি উত্তমরূপে অযু করার পর মসজিদে গিয়ে দেখতে পেল নামাযের জামাত শেষ গেছে। এমতাবস্থায় মহান আল্লাহ তাকেও জামাতে শামিল হয়ে নামায আদায়কারীদের সমান সওয়াব দান করবেন। অথচ যারা মসজিদে উপস্থিত হয়ে জামাতের সাথে পুরা নামায আদায় করেছেন। তাদের সাওয়াব থেকে কিছুই কমানো হবে না। (ইফা. সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৫৬৪ সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ৮৫৬ হাদীসের মান: সহীহ)
(৯) আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, মুনাফিকদের জন্য ফজর ও ইশার নামায অপেক্ষা অধিক কষ্টকর নামায আর নেই। অথচ তারা যদি এই দুই নামাযের ফযীলত সম্পর্কে জানতো, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও জামাতে উপস্থিত হতো। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ৬২৪ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ১৩৫৭ হাদীসের মান: সহীহ)
(১০) আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত: আল্লাহর রসূল (সা.) বলেছেন, জামাতের সাথে আদায়কৃত নামায একাকী নামাযের চেয়ে ২৭ গুণ বেশী ফযীলতপূর্ণ। (ইফা. সহীহ বুখারী হাদীস নং ৬১৭ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ১৩৫২ হাদীসের মান: সহীহ)
(১১) আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, আমি নবী (সা.)-কে বললাম, আমি বৃদ্ধ ও অন্ধ, আমার বাড়িও দূরে এবং আমার সাহায্যকারী কোন লোকও নেই। সুতরাং আপনি কি (আমাকে জামাআতে হাজির না হওয়ার ব্যাপারে) অনুমতি দিবেন ? তিনি বললেন, তুমি কি আযান শুনতে পাও? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, আমি তোমার জন্য অনুমতির কোন সুযোগ দেখছি না। (ইফা. সহীহ মুসলিম হাদীস নং ১৩৬১ সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস নং ৭৯২ হাদীসের মান: সহীহ)
(১২) আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জামাতের সাথে ফজরের নামায আদায় করে, অতঃপর সূর্য উঠা পর্যন্ত বসে আল্লাহ তা’আলার যিকির করে, এরপর দুই রাকাত নামায আদায় করে তার জন্য একটি পূর্ণ হজ ও একটি পূর্ণ উমরার সওয়াব রয়েছে। (ইফা. সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ৫৮৬ মিশকাতুল মাসাবীহ হাদীস নং ৯৭১ হাদীসের মান: হাসান)
Leave a Reply