জমজমের পানি ছাড়া অন্য পানি বা খাবার দাঁড়িয়ে খাওয়া যাবে কি ?

প্রশ্ন:

আসসালামু আলাইকুম! আশাকরি মুফতী সাহেব আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আমার প্রশ্নটি হলো জমজমের পানি ছাড়া অন্য পানি বা খাবার দাঁড়িয়ে খাওয়ার বিধান কী ?

উত্তরঃ

وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ

জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করা উত্তম কিন্তু জরুরী নয়। স্বাভাবিক অবস্থায় অন্যান্য পানি ও খাবার বসে খাওয়া সুন্নত। কিন্তু বিশেষ প্রয়োজনে দাঁড়িয়ে পানাহার করা জায়েয আছে। বিনা প্রয়োজনে দাঁড়িয়ে পানাহার করা মাকরূহ এবং অনুত্তম।

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم شَرِبَ مِنْ زَمْزَمَ وَهُوَ قَائِمٌ

১.অর্থ: ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ (ﷺ) দাঁড়িয়ে যমযম থেকে পানি পান করেছেন। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫১১০ সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ১৮৮২ হাদীসের মান: সহীহ)

أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” لاَ يَشْرَبَنَّ أَحَدٌ مِنْكُمْ قَائِمًا فَمَنْ نَسِيَ فَلْيَسْتَقِئْ ”

২.অর্থ: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন কখনো দাঁড়িয়ে পান না করে। কেউ ভুলে করে ফেললে সে যেন পরে বমি করে ফেলে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫১০৭ মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং ৪২৬৭ হাদীসের মান: সহীহ)

ব্যাখ্যা: বমি করে ফেলার নির্দেশ ওয়াজিব হিসাবে নয় বরং মুস্তাহাব। এই ধরনের কাজ হতে বিরত থাকার জন্য এরূপ কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كُنَّا نَأْكُلُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ نَمْشِي وَنَشْرَبُ وَنَحْنُ قِيَامٌ

৩.অর্থ: ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর যুগে আমরা হাঁটতে হাঁটতে খাবার খেয়েছি এবং দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েও পানি পান করেছি। (সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ১৮৮০ মিশকাতুল মাসাবীহ হাদীস নং ৪২৭৫ হাদীসের মান: সহীহ)

عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَشْرَبُ قَائِمًا وَقَاعِدًا

৪.অর্থ: আমর ইবনে শুআইব (রহ.) হতে পর্যায়ক্রমে তার বাবা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত আছে, তিনি (দাদা) বলেন, আমি আমি রসূলুল্লাহ (ﷺ)কে দাঁড়িয়ে এবং বসে উভয় অবস্থায়ই পান করতে দেখেছি। (সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ১৮৮৩ মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং ৪২৭৬ হাদীসের মান: হাসান)

كَبْشَةَ قَالَتْ دَخَلَ عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَشَرِبَ مِنْ فِي قِرْبَةٍ مُعَلَّقَةٍ قَائِمًا فَقُمْتُ إِلَى فِيهَا فَقَطَعْتُهُ

৫.অর্থ: কাবশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) একবার আমার কাছে এলেন, তিনি দাঁড়িয়ে একটি ঝুলন্ত মশকের মুখ থেকে পানি পান করলেন। পরে আমি উঠে গিয়ে মশকের মুখের সেই অংশ (বরকতের আশায়) কেটে রেখে দিলাম। (সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ১৮৯২ সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ৩৪২৩ হাদীসের মান: সহীহ)

وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَابْ
উত্তর প্রদানে-মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ।
শিক্ষার্থীঃ মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শায়েখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।