কোলাকুলি একবার না তিনবার করতে হয় ?

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম! হযরত আমাদের দেশে কেউ কুলাকুলি একবার করে আবার কেউ তিনবার করে আসলে কোনটা সঠিক দলিলসহ জানতে চাই ?

উত্তরঃ

وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ

কোলাকুলি বা মুয়ানাকা করা একটি সুন্নত আমল। কিছু দিন পর কারো সাথে দেখা হলে অথবা সফর থেকে ফিরে এলে তখন একবার কোলাকুলি করা সুন্নত। তিনবার কোলাকুলি করার কোন বিধান নেই।
কেউ যদি এমনিতেই তিনবার কোলাকুলি করে তাতে অসুবিধা নেই। কিন্তু সুন্নত মনে করে তিনবার কোলাকুলি করলে বিদ’আত হবে। এমনিভাবে ঈদ উপলক্ষ্যেও কোলাকুলি করার কোন বিধান নেই।
তবে দীর্ঘদিন পর যদি ঈদের দিন সাক্ষাৎ হয় তাহলে কোলাকুলি করতে পারবে।

عَن أنَسِ بن مَالِك قَالَ كان أَصْحابُ النبيِّ ﷺ إذا تَلاقَوْا تَصافَحُوا، وإذا قَدِمُوا من سفرٍ تَعانَقُوا.

১.অর্থ: আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেন, নবি (ﷺ) এর সাহাবাগণ যখন পরস্পরে সাক্ষাৎ করতেন তখন মুসাফাহ করতেন। আর যখন সফর থেকে ফিরতেন তখন কোলাকুলি করতেন। (তাবরানী হাদীস নং ৯৭ মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৮/৩৯ হাদীসের মান: সহীহ)

তাহকীক: হায়সামী (রহ.) আলবানী রহ. ও ইবনে বায (রহ.) বলেন, এর সমস্ত রাবী সহীহ বুখারীর রাবী। (মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৮/৩৯ সিলসিলাতুস সহীহা
১/৩০১ বুলুগুল মারাম ইবনে বায ৭৬৭)

عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَدِمَ زَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ الْمَدِينَةَ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي بَيْتِي فَأَتَاهُ فَقَرَعَ الْبَابَ فَقَامَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عُرْيَانًا يَجُرُّ ثَوْبَهُ وَاللَّهِ مَا رَأَيْتُهُ عُرْيَانًا قَبْلَهُ وَلاَ بَعْدَهُ فَاعْتَنَقَهُ وَقَبَّلَهُ .

২.অর্থ: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
যায়েদ ইবনে হারিছা (কোন এক সফর থেকে) মদীনায় ফিরে এলেন। রসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তখন আমার ঘরে ছিলেন। তিনি এসে দরজার কড়া নাড়লেন। রসূলুল্লাহ্ (ﷺ) গায়ের কাপড় টানতে টানতে খালি গায়েই তাঁর নিকটে গেলেন। আল্লাহর কসম, আমি এর আগে বা পরে কখনো আর তাঁকে খালি গায়ে দেখিনি। তারপর তিনি যায়েদের সাথে কোলাকুলি করলেন এবং তাকে চুমু দিলেন। (সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ২৭৩২ মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং ৪৬৮২ হাদীসের মান: হাসান)

তাহকীক: শুয়াইব আরনাউত (রহ.) ও ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.)বলেন, এই হাদীসের সনদ হাসান। ইমাম তিরমিযী (রহ.) বলেন এর সনদ হাসান গরীব।
(তাখরীজু শারহিস সুন্নাহ ৩৩২৭, হিদায়াতুর রুওয়াহ ৪/৩২৯ তিরমিযী ২৭৩২)

عَنْ أنسٍ: كانوا إذا تلاقَوْا تصافَحوا، وإذا قَدِموا مِن سفَرٍ تعانَقوا

৩.অর্থ: আনাস (রা.) বলেন, সাহাবায়ে কেরাম একে অন্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে মুসাফাহ করতেন। আর সফর থেকে ফিরে আসলে কোলাকুলি করতেন।
(তাখরীজু শারহিস সুন্নাহ ১২/২৯১ তাখরীজু যাদিল মা’আদ ২/৪১৪)

তাহকীক: আইনী (রহ.) বলেন, এর সকল রাবী নির্ভরযোগ্য। শুয়াইব আরনাউত (রহ.) বলেন, এর সমস্ত রাবী সহীহ বুখারীর রাবী। (নুখবুল আফকার ১৩/৪৫০ তাখরীজু শারহিস সুন্নাহ ১২/২৯১)

وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَابْ
উত্তর প্রদানে-মাহমুদ মিয়া।
শিক্ষার্থীঃ মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শায়েখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।

Share This Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *