প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম!কোন কোন মসজিদের অযুখানায় লেখা থাকে, এই দু‘আ পড়ে অযু শুরু করতে হয়। ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম আল-ইসলামু হাক্কুন ওয়াল কুফরু বাতিলুন আল-ঈমানু নূরুন ওয়াল কুফরু যুলমাতুন’। এই দু’আটি পড়েই অযু শুরু করতে হবে নাকি ভিন্ন কোন দু’আ পড়তে হবে ? মেহেরবানী করে তাড়াতাড়ি উত্তরটি দিলে খুশি হবো।
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
অযু পবিত্রতা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। যে কোন ভালো কাজ বিসমিল্লাহ বলে শুরু করা সুন্নত। তেমনিভাবে অযুর শুরুতেও বিসমিল্লাহ বলা সুন্নত। কোন কোন মসজিদের অযুখানায় লেখা থাকে, এই দু’আ পড়ে অযু শুরু করতে হয়। ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম আল-ইসলামু হাক্কুন ওয়াল কুফরু বাতিলুন আল-ঈমানু নূরুন ওয়াল কুফরু যুলমাতুন’। আমাদের অনুসন্ধান অনুযায়ী এই দু’আটি কুরআন হাদীসের কোথাও নেই। তাই উক্ত দু’আ পড়া থেকে বিরত থাকা উচিত। বরং অযুর শুরুতে শুধু ‘বিসমিল্লাহ’ বলে অযু শুরু করতে হবে।
عَنْ أَنَسٍ، قَالَ طَلَبَ بَعْضُ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَضُوءًا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” هَلْ مَعَ أَحَدٍ مِنْكُمْ مَاءٌ ” . فَوَضَعَ يَدَهُ فِي الْمَاءِ وَيَقُولُ ” تَوَضَّئُوا بِسْمِ اللَّهِ ” . فَرَأَيْتُ الْمَاءَ يَخْرُجُ مِنْ بَيْنِ أَصَابِعِهِ حَتَّى تَوَضَّئُوا مِنْ عِنْدِ آخِرِهِمْ . قَالَ ثَابِتٌ قُلْتُ لأَنَسٍ كَمْ تُرَاهُمْ قَالَ نَحْوًا مِنْ سَبْعِينَ
১.অর্থ: আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,(কোন এক সফরে) নবী (ﷺ) এর কয়েকজন সাহাবী পানি তালাশ করলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমাদের কারো নিকট পানি আছে কি ? (একজন পানি এনে দিলে) তিনি পানিতে হাত রাখলেন এবং বললেন, বিসমিল্লাহ বলে উযু করো। আমি তাঁর আঙ্গুলের ফাঁক থেকে পানি বের হতে দেখলাম। তাঁদের সর্বশেষ ব্যক্তিসহ সকলেই এই পানিতে উযু করেন। সাবিত (রহ.) বলেন, আমি আনাস (রা.) কে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি উপস্থিত লোকের সংখ্যা কত মনে করেন? তিনি বললেন, সত্তরজনের মত। (ইফা. সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং ৭৮ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” لاَ صَلاَةَ لِمَنْ لاَ وُضُوءَ لَهُ وَلاَ وُضُوءَ لِمَنْ لَمْ يَذْكُرِ اسْمَ اللَّهِ تَعَالَى عَلَيْهِ
২.অর্থ: আবু হুরায়রা (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ বলেছেন, ঐ ব্যক্তির নামায আদায় হয় না যে সঠিক ভাবে অযু করে না এবং ঐ ব্যক্তির অযু (সুন্নাহ সম্মত) হয় না যে আল্লাহর নাম স্মরণ করে না (অর্থাৎ বিসমিল্লাহ্ বলে না)। (ইফা. সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ১০১ হাদীসের মান: সহীহ)
উপরোক্ত হাদীস দুটি দ্বারা এ কথা প্রমানিত হলো যে, অযুর শুরুতে শুধু বিসমিল্লাহ পড়তে হবে। এ ছাড়া অন্য কোন দু’আ প্রমাণিত নয়। সুতরাং প্রশ্নে বর্ণিত দু’আটি পড়লে সুন্নতের খেলাপ হবে। তাই হাদীসে বর্ণিত বিসমিল্লাহ পড়াই অধিক উত্তম হবে।
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- সাইফুল ইসলাম।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply