কুরবানীর পশু জবাই করার আগে কুরবানী দাতার নাম বলা কি ঠিক ?

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম। কুরবানীর পশু জবাই করার আগে পশুতে শরীক সকল কুরবানীদাতার নাম বলে পশু জবাই করার হুকুম সম্পর্কে জানতে চাই ?

উত্তরঃ

وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ

আমাদের দেশে কোনো কোনো জায়গায় কুরবানীর পশু জবাই করার আগে কুরবানী দাতার নাম উল্লেখ করার প্রচলন রয়েছে। আসলে পশু জবাইয়ের সময় কুরবানী দাতার নাম উল্লেখ করা জরুরী নয়। জবাইকারী শুধু পশুর মালিকের প্রতিনিধি হিসেবে কুরবানী করছেন। এতটুকু মনের মাঝে রেখে জবাই করলেই কুরবানী সহীহ হয়ে যাবে। তবে কুরবানীটি কাদের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে এ বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য। যদি তাদের নাম উল্লেখ করা হয় তাহলে দোষের কিছু নেই। কারণ আগে নাম উল্লেখ করে তারপর দুআ পড়ে কুরবানী করা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। সুতরাং কুরবানীতে নাম উল্লেখ করা না করা নিয়ে বিতর্ক করা উচিত নয়।

عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ بِكَبْشٍ أَقْرَنَ يَطَأُ فِي سَوَادٍ وَيَبْرُكُ فِي سَوَادٍ وَيَنْظُرُ فِي سَوَادٍ فَأُتِيَ بِهِ لِيُضَحِّيَ بِهِ فَقَالَ لَهَا ” يَا عَائِشَةُ هَلُمِّي الْمُدْيَةَ ثُمَّ قَالَ ” اشْحَذِيهَا بِحَجَرٍ ” . فَفَعَلَتْ ثُمَّ أَخَذَهَا وَأَخَذَ الْكَبْشَ فَأَضْجَعَهُ ثُمَّ ذَبَحَهُ ثُمَّ قَالَ ” بِاسْمِ اللَّهِ اللَّهُمَّ تَقَبَّلْ مِنْ مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ وَمِنْ أُمَّةِ مُحَمَّدٍ ثُمَّ ضَحَّى بِهِ

১.অর্থ: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ (ﷺ) কুরবানী করার জন্য দু’টি শিং বিশিষ্ট দুম্বা আনতে আদেশ দেন। যেটি কালোর মধ্যে চলাফেরা করতো (অর্থাৎ পায়ের গোড়া কালো ছিল), কালোর মধ্যে শুইতো (অর্থাৎ পেটের নিম্নাংশ কালো ছিল) এবং কালোর মধ্য দিয়ে দেখতো (অর্থাৎ চোখের চতুর্দিকে কালো ছিল)। সেটি আনা হলে তিনি আয়েশা (রা.) কে বললেন, ছুরিটি নিয়ে এসো। এরপর বলেন, ওটা পাথরে ধার দাও। আমি ধার দিলাম। পরে তিনি সেটি নিলেন এবং দুম্বাটি ধরে শোয়ালেন। এরপর সেটা যবেহ করার সময় বললেনঃ বিসমিল্লাহ, হে আল্লাহ! আপনি এ কুরবানী মুহাম্মাদ, মুহাম্মাদের পরিবার ও তার উম্মতের পক্ষ থেকে কবুল করুন। অতঃপর তিনি দুম্বাটি কুরবানী করলেন। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৯৩১ সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ২৭৯২ হাদীসের মান: সহীহ)

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ شَهِدْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الأَضْحَى بِالْمُصَلَّى فَلَمَّا قَضَى خُطْبَتَهُ نَزَلَ مِنْ مِنْبَرِهِ وَأُتِيَ بِكَبْشٍ فَذَبَحَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِيَدِهِ وَقَالَ ” بِسْمِ اللَّهِ وَاللَّهُ أَكْبَرُ هَذَا عَنِّي وَعَمَّنْ لَمْ يُضَحِّ مِنْ أُمَّتِي ”

২.অর্থ: জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, ঈদুল আযহার দিন আমি রসূলুল্লাহ (সা.) এর সাথে ঈদগাহে উপস্থিত ছিলাম। তিনি খুতবা শেষে মিম্বার থেকে নামলেন। একটি বকরী আনা হলো। রসূলুল্লাহ (সা.) নিজ হাতে জবাই করেন এবং বলেন, বিসমিল্লাহ আল্লহু আকবার, এই কুরবানী আমার ও আমার উম্মতের যারা কুরবানী করতে অক্ষম তাদের পক্ষ হতে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ২৮১০ সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ১৫২১ হাদীসের মান: সহীহ)

وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَابْ
উত্তর প্রদানে- মো. হারুনুর রশীদ।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শায়েখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।

Share This Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *