প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম। কাযা নামাযেও আযান ইকামত দিয়ে জামাত করতে হবে কি ? দলিলসহ জানতে চাই।
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
সফরে বা আবাসে কোন কারণে যদি নামায কাযা হয়ে যায়। তাহলে আযান ও ইকামত দিয়ে কাযা নামায আদায় করা সুন্নত। একত্রে যদি একাধিক নামায কাযা হয়ে যায় তাহলে শুধু প্রথম ওয়াক্তে আযান দিবে। আর বাকি নামাযের শুরুতে শুধু ইকামত দিবে। তবে আযান একটু আস্তে আস্তে দিবে যাতে অন্য মানুষের আমলে বিঘ্নতা না ঘটে। অবশ্য কেউ যদি আযান ইকামত না দিয়ে কাযা নামায আদায় করে তাহলে তার নামায আদায় হয়ে যাবে।
عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ، قَالَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ إِنَّ الْمُشْرِكِينَ شَغَلُوا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَنْ أَرْبَعِ صَلَوَاتٍ يَوْمَ الْخَنْدَقِ فَأَمَرَ بِلاَلاً فَأَذَّنَ ثُمَّ أَقَامَ فَصَلَّى الظُّهْرَ ثُمَّ أَقَامَ فَصَلَّى الْعَصْرَ ثُمَّ أَقَامَ فَصَلَّى الْمَغْرِبَ ثُمَّ أَقَامَ فَصَلَّى الْعِشَاءَ
১.অর্থ: আবু উবাইদা (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেছেন যে, খন্দকের যুদ্ধের দিন মুশরিকরা নবী (ﷺ)-কে চার ওয়াক্ত নামায হতে বিরত রেখেছিল। পরে তিনি বিলাল (রা.)-কে আযান দেওয়ার নির্দেশ দেন, বিলাল (রা.) আযান দেন, পরে ইকামত দেন। নবী (ﷺ) যোহরের নামায আদায় করেন। পুনরায় ইকামত দেন এবং আসরের নামায আদায় করেন। পুনরায় ইকামত বলা হয় ও মাগরিবের নামায আদায় করেন। আবার ইকামত বলা হয় এবং তিনি ইশার নামায আদায় করেন। (সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ৬৬২ সুনানে তিরমিযী হাদীস নং ১৭৯ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ فِي مَسِيرٍ لَهُ فَنَامُوا عَنْ صَلاَةِ الْفَجْرِ فَاسْتَيْقَظُوا بِحَرِّ الشَّمْسِ فَارْتَفَعُوا قَلِيلاً حَتَّى اسْتَقَلَّتِ الشَّمْسُ ثُمَّ أَمَرَ مُؤَذِّنًا فَأَذَّنَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ الْفَجْرِ ثُمَّ أَقَامَ ثُمَّ صَلَّى الْفَجْرَ
২.অর্থ: ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (ﷺ) এক দীর্ঘ সফর হতে প্রত্যাবর্তনের সময় ফজরের নামাযের ওয়াক্তে
সকলে নিদ্রাচ্ছন্ন থাকেন। তাঁরা সূর্যোত্তাপ শরীরে লাগার পর জাগ্রত হন। অতঃপর স্থান ত্যাগ করে
কিছু দূরে যাওয়ার পর সূর্য কিছু উপরে উঠলে তিনি মুয়াযযিনকে আযান দেওয়ার নির্দেশ দেন। মুয়াযযিন আযান দিলে তাঁরা প্রথমে ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামায আদায় করেন এবং ইকামতের পর ফরয নামায আদায় করেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৪৩ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنِ الأَسْوَدِ، وَعَلْقَمَةَ، قَالاَ أَتَيْنَا عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ فِي دَارِهِ فَقَالَ أَصَلَّى هَؤُلاَءِ خَلْفَكُمْ فَقُلْنَا لاَ . قَالَ فَقُومُوا فَصَلُّوا . فَلَمْ يَأْمُرْنَا بِأَذَانٍ وَلاَ إِقَامَةٍ
৩.অর্থ: আসওয়াদ ও আলকামা (রহ.) থেকে বর্ণিত। তারা বলেন, আমরা দু’জনে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রা.)-এর বাসগৃহে উপস্থিত হলাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের পিছনে যারা রয়েছে (অর্থাৎ শাসকগণ) তারা কি নামায আদায় করেছেন? আমরা বললাম, না। তিনি বললেন, তাহলে ওঠ এবং নামায আদায় কর। তিনি আমাদের আযান ও ইকামতের আদেশ দিলেন না। (ইফ. সহীহ মুসলিম হাদীস নং ১০৭৪ সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ১০৩২ হাদীসের মান: সহীহ)
মোটকথা কাযা নামাযেও আযান ইকামত দিতে হবে। চাই একাকী নামাযে হোক অথবা জামাতবদ্ধ নামাযে। তবে শরীয়তে নামায কাযা করা যেহেতু মারাত্মক পর্যায়ের গোনাহ। সেহেতু কোনভাবেই যেন নামায কাযা না হয়, সেদিকে খুব খেয়াল রাখতে হবে। আল্লাহ আমাদেরকে উক্ত কথাগুলোর উপর আমল করার তাওফীক দান করুন।
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর লিখনে: মুহাম্মদ আশিকুর রহমান।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply