কসম করে আবার কসম ভঙ্গ করা যাবে কি ?

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম! আমি একবার রাগের মাথায় কসম করে বলেছিলাম অমুক কাজটি আর করবো না। এরপর আমি আবার ঐ কাজটি করে ফেলি। এখন আমার জানার বিষয় হলো কসম করে আবার কসম ভঙ্গ করা যাবে কিনা ?

উত্তরঃ

وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ

রাগের বশবর্তী হয়ে অথবা এমনিতেই কোন কাজ করা বা না করার বিষয়ে যদি কসম করা হয় তাহলে কসম হয়ে যাবে। কসম করার পর বিপরীত কাজে কল্যাণ দেখলে সেই কল্যাণধর্মী কাজটি করে স্বীয় কসমের কাফফারা দেওয়া জরুরী। কসমের কাফফারা হলো, ব্যক্তি তার পরিবারকে নিয়ে যে মধ্যম ধরনের খাবার খেয়ে থাকে। এমন খাবার দশজন অভাবগ্রস্তকে দুই বেলা খাইয়ে দিবে। অথবা দুই জোড়া কাপড় দিয়ে দিবে। কিংবা একজন দাস দাসী মুক্ত করবে। যে ব্যক্তি এর সামর্থ্য রাখে না, সে একাধারে তিন দিন রোযা রাখবে। বিনা প্রয়োজনে কথায় কথায় কসম করা উচিত নয়। কাজেই বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কসম করা থেকে বিরত থাকবে।

وَلَا تُطِعۡ کُلَّ حَلَّافٍ مَّہِیۡنٍ

১.অর্থ: যে অধিক কসম করে, যে লাঞ্ছিত, আপনি তার আনুগত্য করবেন না। (সূরা কলম: আয়াত নং ১০)

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ مَنْ حَلَفَ عَلَى يَمِينٍ فَرَأَى غَيْرَهَا خَيْرًا مِنْهَا فَلْيَأْتِ الَّذِي هُوَ خَيْرٌ وَلْيُكَفِّرْ عَنْ يَمِينِهِ ‏

২.অর্থ: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন বিষয়ের উপর কসম করে, তারপর এর বিপরীত কাজে কল্যাণ দেখে, তাহলে সে যেন উক্ত কল্যাণধর্মী কাজটি করে এবং স্বীয় কসমের কাফফারা প্রদান করে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৩৬২ সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ২১০৮ হাদীসের মান: সহীহ)

لَا یُؤَاخِذُکُمُ اللّٰهُ بِاللَّغۡوِ فِیۡۤ اَیۡمَانِکُمۡ وَ لٰکِنۡ یُّؤَاخِذُکُمۡ بِمَا عَقَّدۡتُّمُ الۡاَیۡمَانَ ۚ فَکَفَّارَتُهٗۤ اِطۡعَامُ عَشَرَۃِ مَسٰکِیۡنَ مِنۡ اَوۡسَطِ مَا تُطۡعِمُوۡنَ اَهۡلِیۡکُمۡ اَوۡ کِسۡوَتُهُمۡ اَوۡ تَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ ؕ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلٰثَۃِ اَیَّامٍ ؕ ذٰلِکَ کَفَّارَۃُ اَیۡمَانِکُمۡ اِذَا حَلَفۡتُمۡ ؕ وَ احۡفَظُوۡۤا اَیۡمَانَکُمۡ ؕ

৩.অর্থ: আল্লাহ তোমাদের অর্থহীন কসমের জন্য তোমাদের পাকড়াও করবেন না, কিন্তু তিনি তোমাদেরকে ঐ কসমসমূহের জন্য পাকড়াও করবেন যেগুলিকে তোমরা দৃঢ়ভাবে করো। সুতরাং এর কাফফারা হলো দশজন অভাবগ্রস্তকে মধ্যম ধরনের খাদ্য প্রদান করবে, যা তোমরা নিজ পরিবারের লোকদেরকে খাইয়ে থাকো, অথবা তাদেরকে (মধ্যম ধরনের) পরিধেয় বস্ত্র দান করবে, কিংবা একজন দাস দাসী মুক্ত করবে। আর যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে না সে (একাধারে) তিন দিন রোযা পালন করবে। এগুলো হলো তোমাদের কসমসমূহের কাফফারা যখন তোমরা কসম করবে এবং ভঙ্গ করবে। তোমরা নিজেদের কসমসমূহকে রক্ষা করবে। (সূরা মায়েদা: আয়াত নং ৮৯)

وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَابْ
উত্তর প্রদানে-দেলোয়ার হোসেন।
শিক্ষার্থীঃ মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শায়েখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।

Share This Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *