কবরে মাটি দেবার সময় মিনহা খলকনাকুম পড়া কি ভিত্তিহীন ?

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম! মৃত ব্যক্তির লাশ দাফনের সময় কবরে তিনবার মাটি দিতে গিয়ে আমরা মিনহা খলকনাকুম ওয়াফীহা নুয়ীদুকুম ওয়ামিনহা নুখরিজুকুম তারতান উখরা তিলাওয়াত করে থাকি। এর কোন ভিত্তি আছে কিনা দলিলসহ জানতে চাই ?

উত্তরঃ

وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ

মৃত ব্যক্তির লাশ দাফনের সময় কবরে তিন মুষ্টি মাটি
দেওয়া সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। কিন্তু এ সময় “মিনহা খলকনাকুম ওয়াফীহা নুয়ীদুকুম ওয়ামিনহা নুখরিজুকুম তারতান উখরা” পড়ার ব্যাপারে বর্ণিত দু’আর হাদীসটির সনদ যয়ীফ। সকল মুহাদ্দিসীনে কেরাম উল্লেখিত দু’আর হাদীসকে যয়ীফ বললেও কেউ একে জাল বা বানোয়াট বলেননি। তাই এ হাদীসের উপর ভিত্তি করে নিশ্চিত রাসূল (ﷺ)
থেকে প্রমাণিত সুন্নত মনে না করে। এমনিতেই কবরে তিন মুষ্টি মাটি দেওয়ার সময় উক্ত দু’আটি পড়লে কোন সমস্যা নেই। কেউ যদি উক্ত দু’আটি না পড়ে শুধু তিন মুষ্টি মাটি দেয় তাতেও অসুবিধা নেই। কিন্তু উক্ত দু’আটি পড়াকে রসূল (ﷺ) এর সুন্নত অথবা জরুরী মনে করলে বিদ’আত হবে।

عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم صَلَّى عَلَى جِنَازَةٍ ثُمَّ أَتَى قَبْرَ الْمَيِّتِ فَحَثَى عَلَيْهِ مِنْ قِبَلِ رَأْسِهِ ثَلَاثًا

১.অর্থ: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ (ﷺ) জনৈক ব্যক্তির জানাযার নামায আদায় করেন এরপর মৃতের কবরের কাছে আসেন এবং তার মাথার দিক থেকে তিন মুষ্টি মাটি দিলেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস নং ১৫৬৫ মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং ১৭২০ হাদীসের মান: সহীহ)

عَنْ أَبِي أُمَامَةَ ، قَالَ : لَمَّا وُضِعَتْ أُمُّ كُلْثُومٍ ابْنَةُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْقَبْرِ، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : مِنْهَا خَلَقْنَاكُمْ وَفِيهَا نُعِيدُكُمْ وَمِنْهَا نُخْرِجُكُمْ تَارَةً أُخْرَى

২.অর্থ: আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রসূল (ﷺ) এর মেয়ে উম্মে কুলসুম (রা.) কে কবরে রাখা হয়। তখন রাসূল (ﷺ) পড়েন মিনহা খলকনাকুম ওয়াফীহা নুয়ীদুকুম ওয়ামিনহা নুখরিজুকুম তারতান উখরা। (মুসনাদে আহমাদ,
হাদীস নং ২২১৮৭ মুস্তাদরাকে হাকিম, হাদীস নং
৩৪৩৩ হাদীসের মান: যয়ীফ)

তাহকীক: ইমাম নববী (রহ.) ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) আল্লামা সানআনী (রহ.) শাওকানী (রহ.) ইমাম বায়হাকী (রহ.) ও হায়সামী (রহ.) উক্ত হাদীসকে যয়ীফ তথা দুর্বল বলে মন্তব্য করেছেন। (খুলাসাতুল আহকাম লিননববী ২/১০২২, আত তালখীসুল হাবীর ২/৬৯১, সুবুলুস সালাম ২/১৭৫ নাইলুল আওতার ৪/১২৭, সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী ৩/৪০৯ মাযমাউয যাওয়ায়েদ ৩/৪৬)

وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَابْ
উত্তর লিখনে- মোঃ আব্দুর রাজ্জাক।
শিক্ষার্থীঃ মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শায়েখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।

Share This Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *