প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম। আমার একটা ছোট ছেলে ও মেয়ে আছে তারা মা বাবার সাথে এক বিছানায় ঘুমায়। এভাবে তারা এক বিছানায় কত বয়স পর্যন্ত ঘুমাতে পারবে মেহেরবানী করে জানাবেন।
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
ছেলে মেয়ের বয়স সাত বছর হলেই সতর্কতা মূলক
তাদের বিছানা আলাদা করে দিবে। মা বাবার সাথে এক বিছানায় রাখবে না। তবে সর্বোচ্চ দশ বছর পর্যন্ত এক বিছানায় রাখার সুযোগ আছে। দশ বছর হয়ে গেলে বিছানা আলাদা করা ওয়াজিব। কেউ যদি সামর্থ্য থাকার পরেও আলাদা না করে তাহলে গোনাহগার হবে। অবশ্য বাবার সাথে ছেলের এবং মায়ের সাথে মেয়ের শোয়ার সুযোগ আছে। তবে এক্ষেত্রেও আলাদা থাকার সুযোগ থাকা অবস্থায় এমনটি করা উচিত নয়। বিছানা আলাদা করার অর্থ এই নয় যে, প্রত্যেক সন্তানের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ঘরের ব্যবস্থা করতে হবে। একই ঘরে ভিন্ন খাট, চৌকি বা ভিন্ন বিছানার ব্যবস্থা করলেও চলবে। যদি এভাবে সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে সন্তানদেরকে কোল বালিশ বা অন্য কিছু দিয়ে আড়াল করে দেওয়া আবশ্যক। কিন্তু মেয়েদের বিছানা বাবা ও ছেলেদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হওয়া জরুরী। এক্ষেত্রে শুধু কোল বালিশ রাখা যথেষ্ট নয়।
عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مُرُوا أَوْلاَدَكُمْ بِالصَّلاَةِ وَهُمْ أَبْنَاءُ سَبْعِ سِنِينَ وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا وَهُمْ أَبْنَاءُ عَشْرِ سِنِينَ وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ فِي الْمَضَاجِعِ
১.অর্থ: আমর ইবনে শুয়াইব (রহ.) থেকে পর্যায়ক্রমে তাঁর পিতা এবং দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিনি (দাদা) বলেন, রসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেনঃ যখন তোমাদের সন্তানরা সাত বছরে উপনীত হবে, তখন তাদেরকে নামায পড়ার নির্দেশ দিবে এবং তাদের বয়স যখন দশ বছর হবে তখন নামায না পড়লে এজন্য তাদেরকে মারবে এবং তাদের (ছেলে-মেয়েদের) বিছানা পৃথক করে দিবে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৯৫ মিশকাতুল মাসাবীহ ৫৭২ হাদীসের মান: হাসান)
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” لاَ يَنْظُرُ الرَّجُلُ إِلَى عَوْرَةِ الرَّجُلِ وَلاَ الْمَرْأَةُ إِلَى عَوْرَةِ الْمَرْأَةِ وَلاَ يُفْضِي الرَّجُلُ إِلَى الرَّجُلِ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ وَلاَ تُفْضِي الْمَرْأَةُ إِلَى الْمَرْأَةِ فِي الثَّوْبِ الْوَاحِدِ
২.অর্থ: আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, কোন পুরুষ অপর পুরুষের সতরের দিকে তাকাবে না এবং কোন মহিলা অপর মহিলার সতরের দিকে তাকাবে না; কোন পুরুষ অপর পুরুষের সাথে একই কাপড়ের ভিতরে ঘুমাবে না এবং কোন মহিলা অপর মহিলার সাথে একই কাপড়ের ভিতরে ঘুমাবে না। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৩৮ সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৪০১৮ হাদীসের মান: সহীহ)
عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ الرَّبِيعِ بْنِ سَبْرَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ جَدِّهِ ، رَفَعَهُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِذَا بَلَغَ أَوْلَادُكُمْ سَبْعَ سِنِينَ ، فَفَرِّقُوا بَيْنَ فُرُشِهِمْ ، وَإِذَا بَلَغُوا عَشْرَ سِنِينَ ، فَاضْرِبُوهُمْ عَلَى الصَّلَاةِ
৩.অর্থ: আব্দুল মালেক বিন রবী বিন সাবুরা (রহ.) থেকে তার পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত। নবী (ﷺ) বলেছেনঃ তোমাদের সন্তানগণ সাত বছর বয়সে পদার্পণ করলে তাদের বিছানা পৃথক করে দাও এবং তারা দশ বছর বয়সে পদার্পণ করলে নামাযের জন্য (তা না পড়লে) তাদের দৈহিক শাস্তি দাও। (সুনানে দারাকুতনী হাদীস নং ৮৮৬ হাদীসের মান: সহীহ)
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَابْ
উত্তর প্রদানে- আবার মুহসীন।
শিক্ষার্থীঃ মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শায়েখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply