প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম! ইমাম সাহেব ভুলে অযু ছাড়া নামায পড়িয়ে ফেললে করণীয় কী ?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
ইমাম যদি ভুলক্রমে অযু ছাড়া নামায পড়িয়ে ফেলে তাহলে ইমামসহ তার পিছনে যারা নামায পড়েছে, তাদের কারো নামাযই হবে না। কারণ পবিত্রতা ছাড়া নামায হয় না। সুতরাং সবার জন্য উক্ত নামায পুনরায় আদায় করা আবশ্যক। কিন্তু যারা বলে, ইমাম যদি ভুলবশত নাপাক অবস্থায় ইমামতি করে থাকেন, তাহলে জামাত শেষে পাক হয়ে তিনি তা পুনরায় পড়বেন। কিন্তু মুক্তাদীদের পুনরায় পড়তে হবে না। তাদের উক্ত কথা সঠিক নয় বরং ইমাম মুক্তাদী সবাইকে নামায কাযা করতে হবে।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا قُمۡتُمۡ اِلَی الصَّلٰوۃِ فَاغۡسِلُوۡا وُجُوۡہَکُمۡ وَ اَیۡدِیَکُمۡ اِلَی الۡمَرَافِقِ وَ امۡسَحُوۡا بِرُءُوۡسِکُمۡ وَ اَرۡجُلَکُمۡ اِلَی الۡکَعۡبَیۡنِ ؕ وَ اِنۡ کُنۡتُمۡ جُنُبًا فَاطَّہَّرُوۡا ؕ
১.অর্থ: হে মুমিনগণ, যখন তোমরা নামাযে দন্ডায়মান হতে চাও, তখন তোমাদের মুখ ও কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত কর, মাথা মাসাহ কর এবং টাখনু পর্যন্ত পা (ধৌত কর)। আর যদি তোমরা অপবিত্র থাক তাহলে ভালোভাবে পবিত্র হও। (সূরা মায়েদা: আয়াত নং ৬)
عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي الْمَلِيحِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاَ يَقْبَلُ اللَّهُ صَلاَةً بِغَيْرِ طُهُورٍ وَلاَ صَدَقَةً مِنْ غُلُولٍ
২.অর্থ: উসামা ইবনে উমাইর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা পবিত্রতা ব্যতীত কোন নামায কবুল করেন না এবং অবৈধভাবে অর্জিত মালের দান-সাদকা গ্রহণ করেন না। (ইফা.সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ১৩৯ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৪২৮ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِذَا رَقَدَ أَحَدُكُمْ عَنِ الصَّلاَةِ أَوْ غَفَلَ عَنْهَا فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللَّهَ يَقُولُ أَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي
৩.অর্থ: আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ নামায ছেড়ে ঘুমিয়ে পড়ে অথবা নামাযের কথা ভুলে যায় তাহলে তার স্মরণ হওয়া মাত্রই তা আদায় করে নিবে। কেননা আল্লাহ বলেছেন, “আমার স্মরণে নামায আদায় করো। (ইফা. সহীহ মুসলিম হাদীস নং ১৪৪২ সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ৬১৫ হাদীসের মান: সহীহ)
মোদ্দাকথা উপরোক্ত আয়াত ও হাদীস দ্বারা আমরা জানতে পারলাম। ইমাম যদি ভুলে অযু ছাড়া নামায পড়িয়ে ফেলে তাহলে ইমাম মুক্তাদী কারো নামায হবে না। যদি মুক্তাদীরা মসজিদে থাকা অবস্থায়
ইমাম সাহেবের স্বরণ হয় তিনি অযু ছাড়া নামায পড়িয়েছেন। তাহলে তিনি নামায সহীহ হয়নি এই ঘোষণা দিয়ে অযু করে এসে মুসল্লীদেরকে নিয়ে পুনরায় নামায আদায় করবেন। আর যদি বাজার বা শহরের মসজিদ হয় কিংবা মুসল্লীরা চলে যাওয়ার পর স্বরণ হয় তিনি অযু ছাড়া নামায পড়িয়েছেন। তাহলে পরবর্তী ওয়াক্তের নামাযে ঘোষণা দিবেন যে ঐ ওয়াক্তের নামায হয়নি, তাই আপনারা কাযা পড়ে নিবেন। সর্বশেষে একটা কথা ভালো ভাবে আমাদের মনে রাখতে হবে ভুল যে কারো হতে পারে। সুতরাং ইমাম সাহেবও ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। তাই এই বিষয় নিয়ে ইমাম সাহেবকে দোষারোপ করা উচিত নয়।
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- আতাউর রহমান।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply