প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম! আমার প্রশ্ন হলো, ইমামের আগে রুকু সিজদা করলে কি নামায হয় ?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
ইমামের আগে যেমনিভাবে রুকু সিজদায় যাওয়া যাবে না। তেমনিভাবে ইমামের রুকু সিজদা থেকে উঠে যাওয়ার পরেও মুক্তাদীর রুকু সিজদাতে দেরি করা যাবে না। সুতরাং ইমামের রুকু সিজদাতে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মুক্তাদীর রুকু সিজদাতে যেতে হবে। যদি ইমামের আগে কোন মুক্তাদী ইচ্ছাকৃত রুকু সিজদাতে যায়। আর ইমামের আগেই রুকু সিজদা থেকে উঠে যায় তাহলে তার নামায হবে না।
عَنْ أَنَسٍ، قَالَ صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ يَوْمٍ فَلَمَّا قَضَى الصَّلاَةَ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ فَقَالَ ” أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي إِمَامُكُمْ فَلاَ تَسْبِقُونِي بِالرُّكُوعِ وَلاَ بِالسُّجُودِ وَلاَ بِالْقِيَامِ وَلاَ بِالاِنْصِرَافِ
১.অর্থ: আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে নামায আদায় করালেন। নামায শেষে তিনি আমাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বসলেন এবং বললেন, হে লোক সকল! আমি তোমাদের ইমাম। তাই তোমরা রুকু করার সময়, সিজদা করার সময়, দাঁড়াবার সময়, সালাম ফিরাবার সময় আমার আগে যাবে না। (ইফা. সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৮৪৫ সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ১৩৬৬ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يُعَلِّمُنَا أَنْ لاَ نُبَادِرَ الإِمَامَ بِالرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ وَإِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوا وَإِذَا سَجَدَ فَاسْجُدُوا .
২.অর্থ: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, নবী (সা.) আমাদেরকে শিক্ষা দিতেন যে, আমরা যেন ইমামের আগে রুকু ও সিজদায় না যাই। তিনি আরো বলেন, ইমাম যখন তাকবীর বলেন, তখন তোমরাও তাকবীর বলো এবং তিনি যখন সিজদা করেন, তোমরাও তখন সিজদা করো। (ইফা. সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস নং ৯৬০ সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৬১৯ হাদীসের মান: সহীহ)
سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” أَمَا يَخْشَى أَحَدُكُمْ ـ أَوْ لاَ يَخْشَى أَحَدُكُمْ ـ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ قَبْلَ الإِمَامِ أَنْ يَجْعَلَ اللَّهُ رَأْسَهُ رَأْسَ حِمَارٍ أَوْ يَجْعَلَ اللَّهُ صُورَتَهُ صُورَةَ حِمَارٍ ”
৩.অর্থ: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত: নবী (সা.) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন ইমামের পূর্বে (রুকু সিজদা থেকে) মাথা উঠিয়ে ফেলে, তখন সে কি ভয় করে না যে, আল্লাহ তা’আলা তার মাথা গাধার মাথার ন্যায় অথবা তার আকৃতি গাধার আকৃতির ন্যায় করে দিতে পারেন। (সহীহ বুখারী হাদীস নং ৬৯১ সহীহ মুসলিম হাদীস নং ৮৪৭ হাদীসের মান: সহীহ)
، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ” إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ فَلاَ تَخْتَلِفُوا عَلَيْهِ، فَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا، وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. فَقُولُوا رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ. وَإِذَا سَجَدَ فَاسْجُدُوا
৪.অর্থ: আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত: রসুলুল্লাহ (সা.) নামায শেষ করে বললেন, ইমাম বানানো হয় তার অনুসরণ করার জন্য। (সুতরাং) যখন তিনি রুকু করেন, তখন তোমরাও রুকু করবে। আর যখন মাথা উঠান, তখন তোমরাও মাথা উঠাবে আর যখন সিজদা করেন, তখন তোমরাও সিজদা করবে। আর যখন ইমাম “সামিআল্লাহু লিমান হামিদা” বলেন, তখন তোমরা বলবে “রব্বানা লাকাল হামদ। (সহীহ বুখারী হাদীস নং ৭২২ সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ৭৯৫ হাদীসের মান: সহীহ)
উল্লেখিত হাদীসগুলো দ্বারা এটাই প্রতিয়মান হয় যে,ইমামের আগে রুকু সিজদায় গেলে নামায মাকরূহ হয় এবং সওয়াব কম হয়। কিন্তু ওজর ছাড়া ইচ্ছাকৃত ইমামের আগে রুকু সিজদায় গেলে এবং ইমামের আগেই রুকু সিজদা থেকে উঠে গেলে নামায ভেঙে যাবে। তাই খুব সতর্ক থাকা উচিত যাতে ইমামের আগে রুকু সিজদাতে যাওয়া এবং উঠা না হয়ে যায়।
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- হাবিবুর রহমান।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply