প্রশ্ন:
আসসালামু আলাইকুম। শয়তানের ধোঁকায় পড়ে ও অলসতা করে অনেক সময় আমি ইচ্ছাকৃতভাবে নামায ছেড়ে দেয় এতে কি আমি কাফের হয়ে যাবো ?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
কেউ যদি শয়তানের ধোঁকায় পড়ে কিংবা অলসতা করে ইচ্ছাকৃতভাবে নামায ছেড়ে দেয় তাহলে সে কাফের হবে না। তবে মারাত্মক গোনাহগার হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু কেউ যদি নামায পড়া ফরয নয় মনে করে নামায ছেড়ে দেয় অথবা নামাযকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে নামায পড়া ছেড়ে দেয় তাহলে উক্ত ব্যক্তি কাফের হয়ে যাবে। যে সকল হাদীসে ফরয নামায পরিত্যাগ করাকে কুফরী কাজ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো মূলত ধমকিস্বরূপ বলা হয়েছে।
اِنَّ اللّٰہَ لَا یَغۡفِرُ اَنۡ یُّشۡرَکَ بِہٖ وَیَغۡفِرُ مَا دُوۡنَ ذٰلِکَ لِمَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَمَنۡ یُّشۡرِکۡ بِاللّٰہِ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلٰلًۢا بَعِیۡدًا
১.অর্থ: নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সঙ্গে শরীক করাকে ক্ষমা করেন না। এ ছাড়া যে কোনো গোনাহ যার ক্ষেত্রে চান ক্ষমা করে দেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে (কাউকে) শরীক করে, সে চরমভাবে গোমরাহীতে পতিত হলো। (সূরা নিসা: আয়াত নং ১১৬)
عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” يَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَفِي قَلْبِهِ وَزْنُ شَعِيرَةٍ مِنْ خَيْرٍ، وَيَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَفِي قَلْبِهِ وَزْنُ بُرَّةٍ مِنْ خَيْرٍ، وَيَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَفِي قَلْبِهِ وَزْنُ ذَرَّةٍ مِنْ خَيْرٍ
২.অর্থ: আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেছেনঃ যে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে আর তার অন্তরে একটি যব পরিমাণও নেকী থাকবে, তাকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে এবং যে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে আর তার অন্তরে একটি গম পরিমাণও নেকী থাকবে তাকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে এবং যে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে আর তার অন্তরে একটি অণু পরিমাণও নেকী থাকবে তাকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৪ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৯৩ হাদীসের মান: সহীহ)
فَقَالَ: مَا مِنْ عَبْدٍ قَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، ثُمَّ مَاتَ عَلَى ذَلِكَ إِلَّا دَخَلَ الْجَنَّةَ قُلْتُ: وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ؟ قَالَ: وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ قُلْتُ: وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ؟ قَالَ: وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ ثَلَاثًا، ثُمَّ قَالَ فِي الرَّابِعَةِ: عَلَى رَغْمِ أَنْفِ أَبِي ذَرٍّ
৩.অর্থ: আবু জর গিফারী (রা.) থেকে বর্নিত। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি বলে আল্লাহ তা’আলা ছাড়া কোন মাবুদ নেই, তারপর সে উক্ত অবস্থায় ইন্তেকাল করে তাহলে সে জান্নাতী হবে। আমি বললাম, যদি সে যিনা করে এবং চুরি করে তাহলেও? রাসূল (ﷺ) বলেছেন, যদিও সে যিনা করে বা চুরি করে। আমি আবার বললাম যদি সে যিনা করে এবং চুরি করে তাহলেও ? রাসূল (ﷺ) বলেছেন, যদিও সে যিনা করে বা চুরি করে। এভাবে তিনবার বললাম, তখন চতুর্থবারের সময় রাসূল (ﷺ) বললেন, যদিও আবু জরের নাক কুঞ্চিত হয় তবু। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ২১৪৬৬ সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১২৩৭
হাদীসের মান: সহীহ)
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَابْ
উত্তর প্রদানে-মোহাম্মদ ওসমান।
শিক্ষার্থীঃ মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শায়েখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply