প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম। মুফতী সাহেবের কাছে আমার প্রশ্ন হলো, ইকামতের জবাব দিতে হবে কি ?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
আযান ও ইকামত উভয়টিকেই হাদীসে আযান বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তাই ইকামতও এক প্রকার আযান। সুতরাং আযানের জবাবের ন্যায় ইকামতেরও জবাব দিতে হবে। তবে আযানের জবাব দেওয়া সুন্নত আর ইকামতের জবাব দেওয়া মুস্তাহাব। আযানের জবাব যে যে শব্দে দেওয়া হয়ে থাকে ইকামতের জবাবও একই শব্দে দিতে হবে। তবে ইকামতে যখন কদ-কমাতিস সলাহ বলা হবে। তখন জবাবে ইমাম আবু দাউদ (রহ.) এর অনুসরণে আকমাহাল্লহু অআদামাহা বলেও জবাব দেওয়া যেতে পারে৷ কারণ এই বিষয়টি যে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে সেই হাদীসটি ইমাম আবু দাউদ (রহ.) এর মতে সহীহ। কিন্তু বাকি মুহাদ্দিসগণের মতে যয়ীফ! তাই কদ-কমাতিস সলাহ এর জবাবে আকমাহাল্লহু অআদামাহা না বলে কদ-কমাতিস সলাহ বলে জবাব দেওয়াই উচিত।
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” بَيْنَ كُلِّ أَذَانَيْنِ صَلاَةٌ بَيْنَ كُلِّ أَذَانَيْنِ صَلاَةٌ لِمَنْ شَاءَ ”
১.অর্থ: আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,দুই আযানের (অর্থাৎ আযান ও ইকামতের) মধ্যবর্তী সময়ে যে ইচ্ছা করে, নামায আদায় করতে পারে। তিনি দুইবার এরূপ বলেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ১২৮৩ সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ১৮৫ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا سَمِعْتُمُ النِّدَاءَ، فَقُولُوا مِثْلَ مَا يَقُولُ المُؤَذِّنُ»
২.অর্থ: আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ যখন তোমরা আযান শুনতে পাও তখন মুয়াযযিন যা বলে তোমরাও তার অনুরূপ বলবে। (সহীহ বুখারী হাদীস নং ৬১১ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، أَوْ عَنْ بَعْضِ، أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ بِلاَلاً أَخَذَ فِي الإِقَامَةِ فَلَمَّا أَنْ قَالَ قَدْ قَامَتِ الصَّلاَةُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” أَقَامَهَا اللَّهُ وَأَدَامَهَا ” . وَقَالَ فِي سَائِرِ الإِقَامَةِ كَنَحْوِ حَدِيثِ عُمَرَ – رضى الله عنه – فِي الأَذَانِ
৩.অর্থ: শাহর ইবনে হাওসাব থেকে আবু উমামা (রা.) অথবা নবী (ﷺ) এর অন্য কোন সাহাবীর সূত্রে বর্ণিত। বিলাল (রা.) ইকামত দেওয়ার সময় যখন কদ কমাতিস সলাহ্ বললেন তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেন, আকামাহাল্লহু ওয়া আদমাহা। নবী (ﷺ) ইকামতের অবশিষ্ট শব্দগুলোর জবাবে উমর (রা.) বর্ণিত আযানের অনুরূপ শব্দগুলো উচ্চারণ করলেন। (সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৫২৮)
তাহকীক: ইমাম আবু দাউদ (রহ.) হাদীসটি বর্ণনা করে,চুপ ছিলেন আর চুপ থাকলে সেটি তার কাছে সহীহ। (সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৫২৮)
উল্লেখিত দলিল দ্বারা বোঝা গেল যে ইকামতের জবাব দেওয়া মুস্তাহাব৷ তবে এটা আবশ্যকীয় কোন বিষয় নয় বরং এটা ঐচ্ছিক বিষয়। কিন্তু ইকামতের জবাব দেওয়া উত্তম এবং সওয়াবের কাজ এতে কোন সন্দেহ নেই।
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর লিখনে: সামিউর রহমান।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply