আযানের পর নামাযের জন্য ডাকাডাকি করা যাবে কি ?

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম। মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাই আযানের আগে বা পরে নামাযের জন্য মানুষকে ডাকাডাকি করা যাবে কি ?

উত্তরঃ

وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ

নামাযের জামাতের প্রতি মুসলমাদেরকে আহবানের জন্য ইসলাম আযানের বিধান দিয়েছে। সুতরাং নামাযের ওয়াক্ত সম্পর্কে অবহিত করতে এবং জামাতের সময় অতি নিকটে তা জানাতে আযানকেই যথেষ্ট মনে করতে হবে। তাই আযানের পর নামাযের জন্য নিয়মিত মাইকে ডাকাডাকি করা বা ঘোষণা দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। তবে মাঝেমধ্যে বিশেষ কোন পরিস্থিতিতে আযানের পর পুনরায় ঘোষণার প্রয়োজন দেখা দিলে তা জায়েয আছে। কিন্তু কোন ভাবেই এ ধরনের ডাকাডাকিকে নিয়মে পরিণত করা যাবে না। এতে আযানের মাহাত্ম ও গুরুত্ব কমে যাবে এবং নিজ থেকে শরীয়তে নুতন নিয়ম সংযোজন করা হবে, যা বিদআতের অন্তর্ভুক্ত। অবশ্য কেউ চাইলে নামাযের মধ্যবর্তী সময়টুকুতে মুসল্লীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদেরকে নামাযের দাওয়াত দিতে পারবে।

عَنْ مُجَاهِدٍ، قَالَ كُنْتُ مَعَ ابْنِ عُمَرَ فَثَوَّبَ رَجُلٌ فِي الظُّهْرِ أَوِ الْعَصْرِ قَالَ اخْرُجْ بِنَا فَإِنَّ هَذِهِ بِدْعَةٌ

১.অর্থ: মুজাহিদ (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি ইবনে উমর (রা.) এর সাথে ছিলাম।
এক ব্যক্তি যোহর অথবা আসর নামাযের আযানের পর তাসবীব (পুনরায় আহবান) করায় ইবনে উমর (রা.) বললেন, তুমি আমাদের দল হতে বের হয়ে যাও, কেননা এটা বিদআত। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৫৩৮ হাদীসের মান: হাসান)

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيهِ، فَهُوَ رَدٌّ»

২.অর্থ: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, কেউ আমাদের এই শরীয়তে নেই এমন কিছুর অনুপ্রবেশ ঘটালে তা প্রত্যাখ্যান করা হবে। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৬৯৭ হাদীসের মান: সহীহ)

মোদ্দাকথা নামাযের সময় সম্পর্কে মানুষকে সজাগ সচেতন করার জন্য নামাযের পূর্বে আযান দেওয়াটাই যথেষ্ট। আযানের আগে বা পরে নামাযের জন্য ডাকাডাকি করা অভ্যাসে পরিণত করলে বিদআত হবে। কারণ আযানই হল নামাযের ইলান বা ঘোষণা যে, নামাযের সময় হয়ে গেছে। সুতরাং শুধু আযান দেওয়াই যথেষ্ট। এখানে নতুন করে কিছু বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।

وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর লিখনে: মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।

Share This Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *