প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম! সূরা ফাতেহার সঙ্গে অন্য সূরা মিলাতে ভুলে গেলে সাহু সিজদা দিতে হবে কি ?
উত্তরঃ
وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ
ফরয নামাযের প্রথম দুই রাকাতে এবং সুন্নত ও নফল নামাযের সকল রাকাতে সূরা ফাতেহার পর অন্য কোনো সূরা মিলানো ওয়াজিব। কেউ যদি ভুলে সূরা ফাতেহার পর অন্য কোন সূরা বা কিছু আয়াত পড়তে ভুলে যায়। তাহলে শেষ বৈঠকে সাহু সিজদা করতে হবে। যদি সাহু সিজদা না করে তাহলে নামায সহীহ হবে না।
عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، سَمِعَهُ يَقُولُ سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَفِي كُلِّ صَلاَةٍ قِرَاءَةٌ قَالَ ” نَعَمْ ” . قَالَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ وَجَبَتْ هَذِهِ . فَالْتَفَتَ إِلَىَّ وَكُنْتُ أَقْرَبَ الْقَوْمِ مِنْهُ فَقَالَ مَا أَرَى الإِمَامَ إِذَا أَمَّ الْقَوْمَ إِلاَّ قَدْ كَفَاهُمْ
১.অর্থ: আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে প্রশ্ন করা হলো, প্রত্যেক নামাযে কি কিরাত আছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। এক আনসার ব্যক্তি বলল তা ওয়াজিব। তখন তিনি আমার দিকে লক্ষ করলেন, আমি সকলের মধ্যে তাঁর নিকটবর্তী ছিলাম। তিনি বললেন, ইমাম যখন দলের ইমামতি করেন, তখন আমি মনে করি, ইমামই তাদের জন্য যথেষ্ট। (সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং ৯২৩ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ أَمَرَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ أُنَادِيَ أَنَّهُ لاَ صَلاَةَ إِلاَّ بِقِرَاءَةِ فَاتِحَةِ الْكِتَابِ فَمَا زَادَ
২.অর্থ: আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (ﷺ) আমাকে নির্দেশ দেন যে, আমি যেন ঘোষণা করে দেই যে, সূরা ফাতেহা এবং তার সাথে আল-কুরআনের কিছু অংশ (সূরা বা আয়াত) না মিলালে কিছুতেই নামায বিশুদ্ধ হবে না। (সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৮২০ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” لاَ صَلاَةَ لِمَنْ لَمْ يَقْرَأْ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ فَصَاعِدًا ”
৩.অর্থ: উবাদা ইবনে সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি সূরা ফাতেহার পর অধিক (অন্য সূরা) পড়ল না, তার নামায হয়নি। (সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ৯১১ সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৮২২ হাদীসের মান: সহীহ)
عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ فِي كُلِّ سَهْوٍ سَجْدَتَانِ بَعْدَ مَا يُسَلِّمُ ”
৪.অর্থ: সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, প্রত্যেক (ওয়াজিব তরকের) ভুলের জন্য সালামের পর দুইটি সাহু সিজদা আদায় করতে হবে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ১০৩৮, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ১২১৯)
উল্লেখিত আলোচনা দ্বারা এ কথা স্পষ্ট হয়ে গেল যে, নামাযে সূরা ফাতেহা এবং তার সাথে অতিরিক্ত কোন সূরা না পড়লে নামায পূর্ণ হয় না। সুতরাং সহীহ শুদ্ধভাবে নামায পড়তে হলে সূরা ফাতেহার পর কুরআনের অন্য কোন সূরা বা কিছু আয়াত পড়া আবশ্যক। তবে কারো ভুলে ছুটে গেলে শেষ বৈঠকে সাহু সিজদা দিলে নামায আদায় হয়ে যাবে।
وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَاب
উত্তর প্রদানে- মো. রায়হান উদ্দিন।
শিক্ষার্থী: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শাইখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
Leave a Reply