অক্ষম বা অসুস্থ ব্যক্তি রোযা রাখতে না পারলে ফিদিয়া দিতে হবে কি ?

প্রশ্নঃ

আসসালামু আলাইকুম! আমার দাদা অনেক বৃদ্ধ সবসময় তার অসুস্থতা থাকে এখন আমার জানার বিষয় হলো এমন অসুস্থ ব্যক্তি ফরয রোযা রাখতে না পারলে ফিদিয়া দিতে হবে কি ?

উত্তরঃ

وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ

কেউ যদি বার্ধক্য বা অসুস্থতার কারণে কিংবা সফরে থাকার কারণে রোযা রাখতে না পারে। তাহলে পরবর্তীতে রোযা কাযা আদায় করে নিবে। যদি কোন অভিজ্ঞ দ্বীনদার ডাক্তারের মাধ্যমে জানা যায়, সে
আর সুস্থ হয়ে কাযা আদায় করতে পারবে না। তাহলে এমন বৃদ্ধ অসুস্থ ব্যক্তির জন্য প্রতিটি রোযার পরিবর্তে ফিদিয়া দেওয়া আবশ্যক হবে। ফিদিয়া হলো প্রত্যেক রোযার জন্য একজন গরীব মিসকীনকে দুইবেলা খাবার খাওয়াবে। অথবা সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা প্রদান করবে। যদি ফিদিয়া আদায় করার মতো কোনো সম্পদ না থাকে তাহলে তাওবা-ইস্তিগফার করবে। সেই সঙ্গে এই নিয়ত রাখবে যে, আল্লাহ তা’আলা সচ্ছলতা দান করলে ফিদিয়া আদায় করে দিবে।

اَیَّامًا مَّعۡدُوۡدٰتٍ ؕ فَمَنۡ کَانَ مِنۡکُمۡ مَّرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ ؕ وَعَلَی الَّذِیۡنَ یُطِیۡقُوۡنَہٗ فِدۡیَۃٌ طَعَامُ مِسۡکِیۡنٍ ؕ

১.অর্থ: রোযা নির্দিষ্ট কয়েক দিনের জন্যে। তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে বা সফরে থাকলে অন্য সময় এই রোযা পূরণ করে নিতে হবে। আর এটি যাদের জন্য অত্যন্ত কষ্ট দায়ক হয়, তারা এর পরিবর্তে একজন অভাবগ্রস্তকে খাদ্যদান করবে। (সূরা বাকারা: আয়াত নং ১৮৪)

عَنْ عَطَاءٍ، سَمِعَ ابْنَ عَبَّاسٍ، يَقْرَأُ (وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ ). قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ لَيْسَتْ بِمَنْسُوخَةٍ، هُوَ الشَّيْخُ الْكَبِيرُ وَالْمَرْأَةُ الْكَبِيرَةُ لاَ يَسْتَطِيعَانِ أَنْ يَصُومَا، فَلْيُطْعِمَانِ مَكَانَ كُلِّ يَوْمٍ مِسْكِينًا

২.অর্থ: আতা (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি ইবনে আব্বাস (রা.) কে (কুরআনের আয়াত) পড়তে শুনেছেন, অর্থ: যাদের প্রতি রোযার বিধান আরোপ করা হয়েছে অথচ তারা এর উপর সক্ষম নয়। তাদের প্রতি একজন মিসকীনকে খাবার খাওয়ানোই ফিদিয়া। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, এ আয়াত রহিত হয়নি। এর হুকুম সেই অতিবৃদ্ধ পুরুষ ও স্ত্রীলোকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যারা রোযা পালনে সামর্থ্য রাখে না, তখন প্রত্যেকদিনের রোযার পরিবর্তে একজন মিসকীনকে পেট ভরে আহার করাবে। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৫০৫ সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং ২৩১৭ হাদীসের মান: সহীহ)

عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ كَبِرَ حَتَّى كَانَ لَا يَقْدِرُ عَلَى الصِّيَامِ فَكَانَ يَفْتَدِي

৩.অর্থ: মালেক (রহ.) বলেনঃ তিনি জানতে পেরেছেন যে, আনাস ইবনে মালেক (রা.) যখন অতি বৃদ্ধ হন, তখন তিনি রোযা রাখতে পারতেন না, তাই তিনি ফিদিয়া দিতেন। (মুয়াত্তা মালেক, হাদীস নং ৬৬৯ হাদীসের মান: সহীহ)

তাহকীক: ইবনে আব্দুল বার (রহ.) বলেন, এই হাদীসের সনদ সহীহ মুত্তাসিল। (আল-ইস্তিযকার ৩/২৪২)

وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَابْ
উত্তর প্রদানে- মোঃ মইনউদ্দিন।
শিক্ষার্থীঃ মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শায়েখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।

Share This Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *