সহবাসের পর গোসল ছাড়া নামায পড়া যাবে কি ?

প্রশ্ন:

আসসালামু আলাইকুম! অনেক সময় স্বামী-স্ত্রী সহবাসের পর অলসতা করে কিংবা শীতের কারণে গোসল করতে মনে চায় না। এই অবস্থায় গোসল ছাড়া নামায পড়া যাবে কি ?

উত্তরঃ

وَعَلَيْكُمُ السَّلاَمْ وَ رَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهْ
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
حَامِدًا وَّمُصَلِّيََا وَّمُسَلِّمًا أمّٰا بَعَدْ

স্বামী-স্ত্রী সহবাস করে কিংবা অন্য কোন কারণে গোসল ফরয হলে। গোসল না করা পর্যন্ত নামায আদায় করার সুযোগ নেই। যদি কেউ ফরয গোসল আদায় ছাড়া নাপাক অবস্থায় নামায আদায় করে নামায সহীহ হবে না। অবশ্য ফরয গোসল করলে যদি অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা প্রবল হয় এবং গরম পানির ব্যবস্থা না থাকে। অথবা রোগ বৃদ্ধি বা জীবন নাশের আশঙ্কা থাকে। কিংবা সুস্থ হতে বিলম্ব হয় তাহলে তায়াম্মুম করে নামায পড়তে পারবে। আর ওজরের কারণে তায়াম্মুম করার পর যখন গোসল করার সামর্থ্য ফিরে পাবে, তখন অবশ্যই ফরয গোসল করে নিতে হবে।

اِنۡ کُنۡتُمۡ جُنُبًا فَاطَّہَّرُوۡا ؕ وَ اِنۡ کُنۡتُمۡ مَّرۡضٰۤی اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ اَوۡ جَآءَ اَحَدٌ مِّنۡکُمۡ مِّنَ الۡغَآئِطِ اَوۡ لٰمَسۡتُمُ النِّسَآءَ فَلَمۡ تَجِدُوۡا مَآءً فَتَیَمَّمُوۡا صَعِیۡدًا طَیِّبًا فَامۡسَحُوۡا بِوُجُوۡہِکُمۡ وَ اَیۡدِیۡکُمۡ مِّنۡہُ ؕ مَا یُرِیۡدُ اللّٰہُ لِیَجۡعَلَ عَلَیۡکُمۡ مِّنۡ حَرَجٍ وَّ لٰکِنۡ یُّرِیۡدُ لِیُطَہِّرَکُمۡ

১.অর্থ: আর যদি তোমরা অসুস্থ হও বা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা সেরে আসে কিংবা তোমরা স্ত্রী সহবাস করে থাক, অতঃপর পানি না পাও তাহলে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও। অর্থাৎ তোমাদের মুখমন্ডল ও উভয় হাত মাটি দ্বারা মাসাহ করো। আল্লাহ তোমাদের উপর কোন সমস্যা সৃষ্টি করতে চান না, বরং তিনি তোমাদের পবিত্র করতে চান। (সূরা মায়েদা আয়াত নং ৬)

عَائِشَةَ، قَالَتْ إِذَا جَاوَزَ الْخِتَانُ الْخِتَانَ فَقَدْ وَجَبَ الْغُسْلُ فَعَلْتُهُ أَنَا وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَاغْتَسَلْنَا .

২.অর্থ: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, পুরুষাংগের খতনার স্থান স্ত্রীর (যৌনাংগের) খতনার স্থান অতিক্রম করলে গোসল ফরয হয়ে যায়। আমার ও রাসূল (ﷺ) এর মাঝে এরূপ হয়েছে। তখন আমরা গোসল করেছি। (সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ১০৮ সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস নং ৬০৮ হাদীসের মান: সহীহ)

عَنْ أَبِي ذَرٍّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِنَّ الصَّعِيدَ الطَّيِّبَ طَهُورُ الْمُسْلِمِ وَإِنْ لَمْ يَجِدِ الْمَاءَ عَشْرَ سِنِينَ فَإِذَا وَجَدَ الْمَاءَ فَلْيُمِسَّهُ بَشَرَتَهُ فَإِنَّ ذَلِكَ خَيْرٌ ”

৩.অর্থ: আবু যর (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, দশ বছর ধরেও যদি পানি না পায় তা হলেও পাক মাটি একজন মুসলিমের জন্য পবিত্রতার উপকরণ বলে বিবেচ্য হবে। অতঃপর যখন সে পানি পাবে তখন তা দিয়ে সে তার শরীর ধুয়ে নিবে। এটাই তার জন্য উত্তম। (ইফা. সুনানে তিরমিযী হাদীস নং১২৪ সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ৩২৩ হাদীসের মান: সহীহ)

وَاللّٰهُ أعْلَمُ باِلصَّوَابْ
উত্তর প্রদানে-মোঃ শহিদুল ইসলাম।
শিক্ষার্থীঃ মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।
উত্তর নিরীক্ষণে: শায়েখ রায়হান জামিল।
পরিচালক: মানহাল ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।